বুধবার ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

বীরকন্যা প্রীতিলতাঃআমাদের প্রেরণার উৎস

মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ওসি(তদন্ত), পটিয়া থানা :   |   শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

বীরকন্যা প্রীতিলতাঃআমাদের প্রেরণার উৎস

বিনা পয়সায় ভ্রমণ,পুলিশের চাকুরিতে অতি সাধারণ বিষয়।চাকুরিজীবনে এরকম অনেক ঐতিহাসিক জায়গা ভ্রমণ ও দর্শনের সুযোগ হয়েছে।আমি বর্তমানে পটিয়া থানায় কর্মরত।এ ইউনিটে যোগদানের পর থেকেই ধলঘাট এলাকায় যাওয়ার ইচ্ছা কাজ করছিল মনের ভিতর।পেশাগত কাজে কিছুদিন আগে চলে গেলাম ধলঘাট।ক্যাম্পবাজার পৌঁছে চা পান করলাম।মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগল,

এটা ক্যাম্পবাজার কেন?

অনেককে জিজ্ঞাসা করলাম।ব্যাখ্যাটা মনে ধরেনি।
বিভিন্ন রকম তথ্য আসল।কিছু যৌক্তিক,কিছু অযৌক্তিক,কিছু হাস্যকর,কিছু আবার বেশ মজাদার।আশিতিপর একজন বললেন,অনেকদিন আগে এখানে পুলিশের একটি ক্যাম্প ছিল,এখন নাই।সে মতে এ জায়গার নাম ক্যাম্পবাজার।অনেকটা যৌক্তিক।মনে ধরল কথাটা।খোঁজ নিলাম।বৃদ্ধের কথাই সঠিক।মনে কষ্ট পেলাম, বিষয়টির কোন তথ্য অন্য কেউ দিতে পারলেন না।এ প্রজন্ম ইতিহাস পড়ে না।ইতিহাসের খবরও নেয় না।

এটি ঐতিহাসিক ক্যাম্পবাজার।ব্রিটিশ আমলে এখানে পুলিশের একটি ক্যাম্প ছিল।ব্রিটিশ বিরোধী বহু বিপ্লবীদের ধরে এনে এখানে নির্যাতন করা হত।বীরকন্যা প্রীতিলতা ও মাস্টারদা’র প্রথম গোপন স্বাক্ষাত ও বৈঠক এখানেই হয়েছিল।এখানেই বীরকন্যার শিশুকাল কেটেছে।বিপ্লবী সাবিত্রি দেবী এখান থেকেই আন্দোলনের দামামা বাজান।বহু আন্দোলনের সূতিকাগার এ ক্যাস্পবাজারে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কোন চিহ্নই এখন বর্তমান নাই,নাই কোন স্মারক।যা আছে তার অবস্হা বর্ণনা করার মানসিকতা নাই।প্রীতিলতার সমাধি পড়ে আছে অবহেলায়।বীরকন্যার মামার ভিটে বাড়ি (বীরকন্যা এখানেই বড় হয়েছেন) পড়ে আছে অযত্ন, অবহেলা আর বেদখলে।দেখেও না দেখার ভান করে আছি সবাই।অথচ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনিই প্রথম নারী, যিনি সম্মুখযুদ্ধে বিজয়ি হয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন।তাঁর নাম বিক্রি করে কতভাবেই না নিজেকে আলোকিত করতেছি!

১৯১১ সালের ০৫ মে পটিয়া থানার(তৎকালীন মহকুমা)ধলঘাট ইউনিয়নের ডেঙ্গা পাড়ায় জন্ম নেন আমাদের বীরকন্যা।পিতৃদেব জগবন্ধু ওয়াদ্দেদার চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল অফিসের প্রধান কেরানী ছিলেন।পিতার মৃত্যুর পর ডেঙ্গাপাড়া থেকে বীরকন্যার অন্য দু’ভাই আর তিন বোন নিয়ে মাতা প্রতিভাদেবী চলে যান ধলঘাট ক্যাম্পবাজারের অদূরে মামার বাড়িতে।সেখানেই প্রতিভদেবী বসতি শুরু করেন বীরকন্যা ও অন্যান্য ছেলে মেয়েদের নিয়ে।প্রতিভাদেবী প্রীতিলতাকে আদর করে ডাকতেন রানী।প্রীতিলতাদের আদী পদবী ছিল দাশগুপ্ত।নবাবী আমলে বীরকন্যার পূর্বপুরুষরা ওয়াহেদদার উপাদী পান।সেখান থেকেই পরবর্তীতে ওয়াদ্দেদার। প্রচন্ড মেধার অধিকারীনি প্রীতিলতা ১ম ও ২য় শ্রেণী না পড়েই চট্টগ্রাম শহরের ডা.খাস্তগীর উচ্চ ইংরেজী বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন ৩য় শ্রেণীতে।মেধার স্বাক্ষর রেখে ৮ম শ্রেণীতে পান বৃত্তি।১ম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন ১৯২৮ সালে।১৯৩০ সালে ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে পাশ করেন আইএ।এ পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে ১ম স্হান অর্জন করে ২০ টাকা বৃত্তি পান।পরবর্তীতে দর্শন বিষয়ে অনার্স পড়ার জন্য ভর্তি হন কলকাতার বেথুন কলেজে।১৯৩২ সালে এখান থেকেই ডিস্টিংশন সহ অনার্স পাস করেন।একই বছর চট্টগ্রামে ফিরে এসে নন্দনকানন স্কুলে(বর্তমানে অর্পণাচরণ স্কুল) যোগদান করেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে।

প্রীতিলতা,আমাদের জোয়ান অব আর্ক ১৯২৬ সালে ৮ম শ্রণীতে পড়াকালীনই আন্দোলনের জন্য প্রথম শিহরন পান।চট্টগ্রাম রেল কারখানার শ্রমিকদের বেতনের ১৭,০০০টাকা ছিনতাই হয়।চারজন বিপ্লবী এ টাকা ছিনতাই করে এবং গাড়ি সহ নিয়ে যায়।পুলিশের হাতে ধরা পড়েন দু’জন বিপ্লবী।একজন উমাতারা স্কুলের শিক্ষক বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন,অন্যজন অম্বিকা চক্রবর্তী।তাদের উপর চলে অবর্ণনীয় নির্যাতন।ডা.খাস্তগীর স্কুলের শিক্ষিকা ঊষাদির মাধ্যমে বীরকন্যা এ সংবাদ পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত করার জন্য সংকল্প নেন।বাঁধা আসে ঊষাদির কাছ থেকে।বিপ্লবী মন থেমে থাকে না।চট্টল রানীর মনে প্রশ্ন আসে,’ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ যদি পারে আমি কেন পারব না’?সিদ্ধান্ত নেন যুদ্ধই করবেন,মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবেন,মুক্ত করবেন বিপ্লবীদের।বিপ্লবীদের উকিলের অকাট্য যুক্তিতে কপোকাত হল পুলিশ আর ব্রিটিশ প্রসিকিউশন।মুক্ত হলেন উভয় বিপ্লবী।তখন মাস্টারদা’র নেতৃত্বে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন চলছিল দু’টি দলে।যুগান্তর আর অনুশীলন ছিল দু’টি দলের নাম।উন্নত চরিত্র,সাহসী,আপোষহীন মানসিকতা সম্পন্ন ছেলেরাই ছিলেন আন্দোলন কর্মী।কোন মেয়ের যুদ্ধ বা বিপ্লবে অংশ নেয়া ছিল বারণ। আমাদের বিপ্লবী বীরকন্যার অন্তর কেঁপে উঠে।নাটোরের রানী ভবানী,ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ হবেন তিনি।তাঁর মাথায় কাজ করল,ইচ্ছা করেই মেয়েদের পিছিয়ে রাখা হয়েছে।তিনি পিছিয়ে থাকতে চান না,তিনি বিপ্লবী হবেন,যুদ্ধ করবেন।কিন্তু,আন্দোলনের সূর্যসারথি মাস্টারদা মেয়েদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুমতি দেন না।বীরকন্যা অনেক চেষ্টা আর অনুরোধ করেও যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি পায় না।

অবশেষে ১৯২৮ সালে আন্দোলনে মেয়েদের যুক্ত করার সিদ্ধান্ত দেন মাস্টারদা।শর্ত দিলেন,মেয়েরা গোপনেই কাজ করবেন,প্রকাশ্যে নয়।এরপর বীরকন্যা বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করতে থাকলেন বিপ্লবীদের।১৯৩০ সালে বেথুনে পড়াকালীন বীরকন্যা গড়ে তুলেন ‘বিপ্লবীচক্র’।এ চক্রের প্রধান কাজ ছিল অর্থ সংগ্রহ করে তা বিপ্লবীদের কাছে পাঠানো।এ সময় আনুষ্ঠানিকভাবে কল্পনা দত্ত,সরোজীনি পাল,নলিনী পাল,কুমুদিনী রক্ষিত ও একজন মুসলিম মেয়েকে প্রথমবারের বিপ্লবী দলে যুক্ত করা হয়।আন্দোলনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।দর্শনের ছাত্রী প্রীতিলতা সবার মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা এবং পারিবারিক শিক্ষাকেই ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্টা করে আন্দোলনের দীক্ষা দিতে লাগলেন।দেশপ্রেম জাগ্রত করলেন সাধারন শিক্ষার্থীদের মধ্যে।নিজের কাছে প্রোথিত দর্শনের যুক্তি আর বিদ্যার ব্যাপকতা সবার কাছে ছড়িয়ে দিলেন বীরকন্যা।

১৯৩০ সালের ১৯ এপ্রিল ‘নায়ক’ পত্রিকার সান্ধ্যাকালীন বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত হয় ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল-টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন অফিস ধ্বংস-রিজার্ভ পুলিশ লাইন অধিকার’ শিরোনামে বহুল আলোচিত সংবাদ।বিপ্লবীরা এ কাজটি করেছে শুনে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য অস্হির হয়ে উঠে প্রীতিলতার বিপ্লবী মন।মনের দ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে বীরকন্যার বিদ্রোহী রক্তে।শীরা উপ-শীরা লাফিয়ে বেড়ায় যুদ্ধে যাওয়ার জন্য।১৯৩০ সালের ২২ এপ্রিল বিপ্লবীরা জালালাবাদ পাহাড়ে ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে ভয়ংকর এক সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।বিপ্লবীরা পরিকল্পিত আক্রমন করে ব্রিটিশ বাহিনীর অট্টালিকা কাঁপিয়ে দেন,জানান দিয়ে দেন নিজেদের সামর্থ্য। ১২ জন বিপ্লবী জীবন দেন এ যুদ্ধে।এ সংবাদ পেয়ে বীরকন্যা সিদ্ধান্ত নেন দেখা করবেন মাস্টারদা’র সাথে,যেভাবেই হোক অনুমতি নিবেন সম্মুখযুদ্ধে অংশ গ্রহণের।কিন্তু,অনুমতি মিলে না মাস্টারদা’র।

এসময় বিপ্লবীদের বোমা তৈরীর উপাদান ‘গান-কটন’ প্রয়োজন হচ্ছিল প্রচুর,এ উপাদানটি তৈরীর খরচও ছিল বেশি।একমাত্র কলকাতায় তৈরী হত এটি।’গান-কটন’ তৈরীর অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব পান প্রীতিলতা।ফান্ড গঠনের প্রথমেই নিজের হাতের দু’খানা চুড়ি আর গলার হার দিয়ে দেন বীরকন্যা।অন্যদের কাছ থেকেও সংগ্রহ করেন অর্থ।একটা ফান্ড গঠন করেন ‘গান-কটন’তৈরী সহ বিপ্লবের অন্য কাজের জন্য।’গান- কটন’ তৈরীর দায়িত্ব দেয়া হয় বিজ্ঞানের ছাত্রী কল্পনা দত্তকে।নিজেও শিখে নেন এ কাজটি।স্বল্প সময়েই বাজারে প্রচলিত ‘গান-কটন’ এর চেয়ে অধিক কার্যকর ও শক্তিশালী ‘গান-কটন’ তৈরী করে পৌঁছানো হয় মাস্টারদা’র হাতে।এটি হাতে পেয়ে মাস্টারদা’র আস্হা বেড়ে যায় বীরকন্যার উপর।

এ সময় বিপ্লবীরা ইংরেজ ডিআইজি ক্রেগকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।বিপ্লবীদের চিন্তা ছিল একজন বড় কর্তাকে হত্যা করতে পারলে ব্রিটিশদের ভীত নড়ে যাবে।ভুলক্রমে বিপ্লবীদের আক্রমনে নিহত হয় পুলিশ ইন্সপেক্টর তারিনী মূখার্জী।দু’জন বিপ্লবী ধরা পড়েন।বিচারে ফাঁসির আদেশ হয় তাদের।বীরকন্যা ফাঁসির আদেশপ্রাপ্তদের সাথে দেখা করতে চাইলে মাস্টারদা অনুমতি দেয় না।মন মানে না প্রীতিলতার।মাস্টারদা’র অনুমতি ছাড়াই জেলে গিয়ে বোন পরিচয়ে ৪০ বার দেখা করেন ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে।পূর্ণ করলেন বিপ্লবী মন,দেশ মাতৃকার টানে আরো একদাপ এগিয়ে গেলেন বিপ্লবী জীবনের দিকে।সন্নিকটেই অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা।ভাবতে লাগলেন,কি হবে পরীক্ষা দিয়ে।এ সনদ অর্জনের কোন অর্থই খোঁজে পেলেন না চট্টলরানী।ডিগ্রী অর্জন তাঁর কাছে মূল্যহীন হয়ে উঠল।কিন্তু বাধ সাধলেন বিপ্লবের প্রথম দীক্ষাদাতা ঊষাদি।বিএ পরীক্ষার পর চট্টগ্রামে অবস্হানকালীন শতবার চেষ্টা করলেন মাস্টারদা’র সাথে দেখা করার।মাস্টারদা’র অনুমতি মিলে না।

অবশেষে মাস্টারদা দেখা করার অনুমতি দিলেন বীরকন্যাকে।পটিয়ার ধলঘাট ইউনিয়নের বর্তমান ক্যাম্পবাজারের কাছেই আরেক বিপ্লবী সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে এক ঘন অন্ধকার রাতে দেখা হয় দুই মহান বিপ্লবীর।এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।উৎসুক স্বাধীনতাকামী মানুষের অসাবধানতায় খবর চলে যায় ব্রিটিশ বেনিয়াদের কাছে।সাবিত্রী দেবীর বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ।দুই বিপ্লবী কাছের ময়লাযুক্ত ডোবায় আশ্রয় নেন।ব্রিটিশ পুলিশের প্রচন্ড গুলি নির্মল সেন ও অপূর্ব সেনদের জীবন কেড়ে নেয়।মাস্টারদা আর প্রীতিলতা আশ্রয় নেন গোপন আস্তানায়। এ ঘটনার পরই বিপ্লবের পুরোধা মাস্টারদা প্রীতিলতা ও কল্পনা দত্তকে প্রত্যক্ষ বিপ্লবী কাজে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেন।পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত প্রীতিলতা আর কল্পনা দত্তকে আত্মগোপনে যাওয়ার নির্দেশ দেন মাস্টারদা।

১৯৩২ সালের ১৮ এপ্রিল বিপ্লবীরা ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমনের সিদ্ধান্ত নেন।লক্ষ্য ছিল যত বেশি সংখ্যক ইংরেজ হত্যা করা যায়।কিন্তু ‘গুড় ফ্রাই ডে ‘উপলক্ষ্যে এদিন ক্লাব বন্ধ থাকায় আক্রমনের সিদ্ধান্ত স্হগিত করা হয়।পরবর্তীতে বিপ্লবীরা ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।এ আক্রমনে নেতৃত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় বীরকন্যা প্রীতিলতাকে।মরনপণ করলেন আমাদের জোয়ান অব আর্ক।বীরকন্যা সাম্রাজ্যবাদের বিরোদ্ধে জীবনের যুদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করলেন এ আক্রমনকে।তিনি দৃঢ় শপথ নিলেন জিততেই হবে এ যুদ্ধে।ক্লাবের বাবুর্চি করিম ছিল মাস্টারদা’র সোর্স।তাকে নির্দেশনা দেয়া হয় মোক্ষম সময়ে আলোর সংকেত দেয়ার।প্রীতিলতার নেতৃত্বে বিপ্লবীরা ঘিরে ফেলেন ইউরোপিয়ান ক্লাব।করিম আলো দিয়ে সংকেত দেন বিপ্লবীদের।চট্টলকন্যা চার্জ বলার সাথে সাথে বিপ্লবীদের গুলি আর বোমার যুগপৎ আক্রমনে কেঁপে উঠে পুরো ক্লাব।থমকে যায় ঘড়ির কাটা,মূহুর্তেই ধ্বংস হয়ে যায় আশপাশ এলাকা।জীবনের প্রথম যুদ্ধে বিজয়ি বীর সফল অভিযান শেষে হুইসেল বাজিয়ে প্রত্যাবর্তনের আদেশ দিয়ে সঙ্গীদের নিয়ে ফিরতে শুরু করলেন আস্তানায়।

‘আক্রমনে নেতা সর্বাগ্রে,প্রত্যাবর্তনে পিছনে’ নীতিতে বিপ্লবী সহযোগীদের আগে দিয়ে পিছনেই ছিলেন বীরকন্যা।হঠাৎ একটি গুলিতে বিক্ষত হল বীরকন্যার বুক, মাটিতেই লুটিয়ে পড়লেন আমাদের জোয়ান অব আর্ক।খোলা বেয়নেট নিয়ে ছুটে আসছে হায়নার দল।কোমরের কাপড়ের ভাজ থেকে বের করে নিলেন ‘পটাসিয়াম সায়ানাইড’।আত্মাহুতি দিলেন আমাদের বীরকন্যা।নাম লেখালেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রথম নারী আত্মাহুতি হিসেবে।নিজের বিপ্লবী শরীরে হায়নাদের হাত দেয়ার সুযোগই দিলেন না প্রতিভাদেবীর ‘রানী’, বীরকন্যা আমাদের জোয়ান অব আর্ক।

Comments

comments

Posted ৮:২৫ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com