মঙ্গলবার ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

আমি বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী কিন্তু কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের মা

  |   মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আমি বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী কিন্তু কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের মা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: ফাইল ফটো

‘আমি হয়ত বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী, কিন্তু একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের মা। আমরা আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলছি। দেশে কম্পিউটার ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা, এর উপর থেকে ট্যাক্স তুলে দেওয়া, এসব আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে হয়েছে। সে তো একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।’

এভাবেই গর্ব ভরে ডিটিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা বলছিলেন প্রধনামন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর প্যান পাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে অনাবাসী প্রকৌশলীদের প্রথম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, কম্পিউটারের উপর থেকে ট্যাক্স তুলে দেওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে একটা আকাঙ্খা এবং শিক্ষার প্রসার শুরু হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম, আর আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন সারাদেশেই ইন্টারনেট সার্ভিস। ব্রডব্যান্ডে প্রায় ৯০ভাগ এলাকা কভার করেছি। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পেরেছি। এতোদূর আসতে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অনেক চড়াই-উৎড়াই পার হয়েই আমাদের আসতে হয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ও ব্রিজ-টু বাংলাদেশ (বিটুবি) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

টানা মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে কম্পিউটার ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা, এর উপর থেকে ট্যাক্স তুলে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সব পরামর্শ সবসময় দিয়েছে আমার ছেলে জয়।’

কোন অবস্থা থেকে তিনি শুরু করেন তার ব্যাখ্যায় কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি এসে দেখলাম কম্পিউটার কেউ ব্যবহারেই করে না। কম্পিউটার তখন একটা টেবিলে সাজানো থাকত।’

‘আরও দুঃখের কথা বলি, আমি ওয়াশিংটনে আমাদের চ্যান্সেরি ভবন করে দিলাম। সব কিছু করে দিলাম। কিন্তু একটা সময় আমাদের একটা সমস্যা এসেছিল, আমাদের গার্মেন্টেস নিয়ে এবং জিএসপি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে। তখন একটা জিনিস যে কম্পিউটারে টাইপ করে ই-মেইলে পাঠাবে, সে কম্পিউটার ব্যবহার করার লোক আমার অ্যাম্বাসিতেও ছিল না।’

‘এইরকম একটা অবস্থা আমাদের ছিল। তারপরে যেটা করেছি, সেটা এখন আর বলার দরকার নেই’, আক্ষেপ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ব্রেন ড্রেন প্রসঙ্গ

অনাবাসী বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কখনো ব্রেন ড্রেন কথাটি বলিনি। আমি বলেছি, বিদেশে গেলে জ্ঞান অর্জন হয় আর সেই জ্ঞানটা একটা সময় দেশের কাজে আসেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বিশ্বকে না দেখি, বিভিন্ন দেশে না যাই তাহলে আমরা বিশ্বকে জানবো কি করে? বিশ্বের অন্য স্থানে কোথায় কী হচ্ছে? কীভাবে উন্নয়ন হচ্ছে? সেটাও জানা এবং জ্ঞান অর্জনের বিষয়। সেই জ্ঞান অর্জনের সুযোগটা আপনারা অর্জন করেছেন।’

প্রকৌশলীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আপনারা বাংলাদেশের উন্নয়নে শরিক হতে চান, কাজে লাগাতে চান আপনাদের সেই অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা। আমি আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা শিক্ষা গ্রহণ করতে যান। অনেকে বিদেশে থেকে যান। অনাবাসী হয়ে যান। সেখানেও কিন্ত একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। আপনারা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন সেটাও অনেক বড় কিছু। কিন্তু ৭৫’র ১৫ আগস্টের ঘটনা যদি না ঘটত, তাহলে হয়ত অনেকে দেশেই থেকে যেতে পারতেন এবং দেশের উন্নয়নে শরিক হতে পারতেন। কিন্তু যে পরিবর্তনটা হয়েছিল সেটা তো দেশের কল্যাণে হয়নি। হয়ত একটা গোষ্ঠী, তাদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত ছিল। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন মাত্র ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। সামান্য কিছু লোক হয়ত বিদ্যুৎ পেত। আমি সরকারে আসার পর সব ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম।’

রফতানির ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের একটা জিনিস চিন্তা করতে হবে। আমরা গার্মেন্টেস শিল্প বিশ্বে দ্বিতীয়, এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, একটা জিনিস রফতানির উপর নির্ভর করে দেশ চলতে পারে না। আমাদেরকে রফতানিকে বহুমুখীকরণ করতে হবে।’

সেদিকে লক্ষ্য রেখে পাটশিল্প, ডিজিটাল প্রযুক্তি রফতনিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নদী-নালা খাল-বিলের দেশ। এখন আমরা মিঠা পানির মাছ উৎপাদানে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের বিশাল সমুদ্রসীমা। সেখানেও আমাদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সুযোগকে কার্যকর করারও পদক্ষেপ নিয়েছি। একইভাবে কৃষিপণ্য উৎপাদন বা খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আইসিটি ও ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন করে বিদেশে রফতানি করার লক্ষ্যে হাইটেক পার্ক, ডিজিটাল পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। সর্বক্ষেত্রে তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আজ বাংলাদেশ সারাবিশ্বে ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছি। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বে শীর্ষ ৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬ ভাগে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। আগামীতে আমরা ডাবল ডিজিটে পৌঁছাবো। সেই পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’

সরকারের ডেল্টা প্ল্যানের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নদী আমাদের প্রাণ। একটা মানুষের শরীরে যেমন শিরা-উপশিরা থাকে। বাংলাদেশের জন্য নদী হচ্ছে সেখানে শিরা-উপশিরা। সেগুলো ভালভাবে ব্যবহার করে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে রক্ষা করা, এবিষয়েও পদক্ষেপ নিয়েছি।’

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন- সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। সূচনা বক্তব্য দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের কনভেনর ব্রিজ-টু-বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজাদুল হক।
দেশবিদেশ/নেছার

Comments

comments

Posted ৯:৫০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com