তারেকুর রহমান | শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
২১ ফেব্রুয়ারি আর সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা ৪-৫ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নেমেছে। এছাড়া মৌসুমের শেষের দিকে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক কক্সবাজারে আসছেন। এই কদিনে পর্যটকের আনাগোনায় অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের রুম প্রায় বুকিং হয়ে গেছে।
সমুদ্রে সাঁতার কাটাসহ প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠছে পর্যটকরা। তবে বালিয়াড়িতে, কিটকট ছাতায় বসা, বিচ বাইক ও ঘোড়ায় চড়া পর্যটকদের মানতে দেখা যায়নি কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে সৈকতে টুরিস্ট পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করতে দেখা গেছে। তবুও পরছেন না মাস্ক, মানছেন না সামাজিক দূরত্ব।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সৈকতে পর্যটকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সমুদ্রস্নান, বালিয়াড়িতে দৌড়ঝাঁপ, বিচ বাইক, ওয়াটার বাইক, ঘোড়ায় চড়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন তারা।
গাজীপুর থেকে বেড়াতে আসা আনিকা তাবাচ্ছুম সমুদ্রের মাটিতে ফুল আঁকছিলেন। তবে মুখে মাস্ক ছিল না। কেন মাস্ক পরা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে মাস্ক পরা ছিলাম। পানির কাছে আসছি মাটিতে ফুল আঁকতে। তাই মাস্ক মা—বাবার কাছে রেখে এসেছি।’
চট্টগ্রামের মুরাদপুর থেকে বেড়াতে আসা ফারুক—তসলিমা দম্পতির একজনেরও মাস্ক নেই মুখে। ফারুকের অজুহাত পকেট থেকে মাস্ক পড়ে গেছে আর তসলিমা বলেন, ‘ন্যাকাপ পরে থাকি সবসময়। এখন সমুদ্রপাড়ের নিশ্বাস নিতে ন্যাকাপ খুললাম।’
ফেনী থেকে সপরিবারে আসা মকসুদ পাটুয়ারী বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে কক্সবাজার আসলাম। আমার দুই ছেলের পরিবারও এসেছি। বলতে গেলে বাড়ির অর্ধেক মানুষ এখন কক্সবাজারে। প্রতিবছর নভেম্বর—ডিসেম্বরে আসি। এবছর একটু দেরিতে আসলাম। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য না দেখলে আমার মোটেও ভালো লাগে না। তাই পরিবার নিয়ে চলে এলাম।’
সোনাগাজী থেকে এই প্রথমবার কক্সবাজার আসেন নুর আংকিজ। সমুদ্র সৈকতের নীল জলে পা ভিজিয়ে তার অনুভূতি অন্য রকম। বলেন, ‘এই প্রথম কক্সবাজারে আসলাম। এর আগে কখনো কক্সবাজার আসার সুযোগ হয়নি। এবার ৩ দিনের জন্য কক্সবাজার বেড়াতে এলাম। কক্সবাজারের নির্মল বাতাস ও সারি সারি চেয়ারসহ ছাতাগুলো দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে ঢেউ পেরিয়ে পর্যটকদের গোসল করতে দেখে একটু একটু ভয় লাগছে।’
মাস্ক মুখে পরে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আড্ডা দিচ্ছেন ঢাকার একটি সংগঠনের বেশ কয়েকজন পর্যটক। তাদের দলনেতা আতাউল্লাহর কাছ থেকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানা না মানার ব্যাপারেই আমরা আলোচনা করছিলাম। সকলের মাস্ক আছে। মুক্ত আলোচনা করছি, তাই মাস্ক পকেটে রেখেছি। কিছুক্ষণের মধ্যে পরে নেবো।’
মাস্কবিহীন পর্যটকের ভিড়
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, ‘সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে জেলা প্রশাসন কর্তৃক জনসচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। যারা মাস্ক পরছে না, স্বাস্থ্যবিধি মানছে না; তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এরপরও অনেক পর্যটক তা মানছে না। মাইকিং করার পরও যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না তাদের ব্যাপারে সৈকতে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হবে।’
কক্সবাজার হোটেল—মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘পর্যটন মৌসুমের শেষের দিকে বেশি পর্যটক কক্সবাজারে আসছে। মার্চের শেষ পর্যন্ত পর্যটকের ভিড় থাকতে পারে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ হোটেল—গেস্ট হাউজে পর্যটক ভিড় করেছে। তাদের স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে হোটেল কর্তৃপক্ষ যথাযথ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বাকিটা প্রশাসন দেখবে।’
Posted ৫:৪৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
dbncox.com | ajker deshbidesh