রবিবার ১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

কক্সবাজারে অপরাজিতার নীতিমালা বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা

দেশবিদেশ প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৪ জুলাই ২০২২

কক্সবাজারে অপরাজিতার নীতিমালা বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা

অপরাজিতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন পেইজ-৩ প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত কক্সবাজার জেলার নীতিমালা বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা জেলা পরিষদের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খান ফাউন্ডশনের আয়োজনে সোমবার (৪ জুলাই) সকালে নীতিমালা বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় কক্সবাজার সদর উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান হামিদা তাহেরের সভাপতিত্বে ও অপরাজিতা জেলা সমন্বয়কারী আকতার জাহানের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকার উপপরিচালক এডিসি (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহিদ ইকবাল বলেন, ক্ষমতা মানে পদ-পদবী না, ক্ষমতা মানে সিদ্ধান্ত নিতে পারার পারদর্শীতা। সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে হলে প্রথমে মানুষ হিসেবে চিন্তা করতে হবে। সে একজন নারী বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে সিদ্ধান্ত থেকে বঞ্চিত রাখলে কখনো ক্ষমতায়ন বাস্তবায়ন হবে না। কোনো বিষয় সিদ্ধান্ত নিতে পারার সুযোগই হচ্ছে ক্ষমতায়ন। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, অথচ তাকে নারী বলেই আলাদাভাবে দেখা হয় না। তাঁকে একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে চিন্তা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নারী হয়েও দেশ পরিচালনার সুন্দর সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন সেদিকে চিন্তা করলে বুঝা যায় নারীর ক্ষমতায়ন কী রকম। সবার সাথে সমন্বয় করে সমাজের সকল ভালো কাজে অংশগ্রহণ করে নারীর ক্ষমতায়ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

এসময় প্রকল্প কার্যক্রম উপস্থাপনা করেন ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কো-অর্ডিনেটর (চট্টগ্রাম ক্লাস্টর) আবু সালাম।

সভায় বলা হয়- নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড কোঅপারেশন-এসডিসি’র সহায়তায় ও হেলভেটাস সুইস ইন্টার কোঅপারেশনের কারিগরি সহায়তায় প্রিপ ট্রাস্ট, খান ফাউন্ডেশন, রূপান্তর ও ডেমক্রেসিওয়াচ বাংলাদেশের ছয়টি বিভাগে অপরাজিতা: নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে যা ১৬টি জেলাধীন ৬২টি উপজেলার মোট ৫৪০টি ইউনিয়নে কাজ করছে।

অপরাজিতা প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো- নারীর নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন কাঠামোতে, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণের মাত্রা বিস্তৃতকরণ এবং কার্যকারিতা উন্নয়ন।

নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা বিধানের লক্ষ্যে রাষ্ট্র যেন বিশেষ ব্যবস্থা নেয়, এই বিষয়ে নির্দেশনাও দেওয়া রয়েছে। সে লক্ষ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে, বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তর, জাতীয় সংসদ, রাজনৈতিক দলের কমিটিতে নারীদের কার্যকরী অংশগ্রহণ এবং প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে/হয়েছে। বিদ্যমান (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক দলে নারীদের অন্তর্ভূক্তি ও বিভিন্ন কমিটিতে নারীদের কার্যকর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এখনো আরো অগ্রগতি সাধনের অবকাশ রয়েছে।

অপরাজিতা এলাকাতে নারীদের রাজনৈতিক দলে অবস্থান রয়েছে চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪। মে-জুলাই ২০২১, অপরাজিতা প্রকল্পভুক্ত এলাকায় প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন (মূলকমিটির) উপর একটি স্ট্যাডি/জরিপ পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতাদের কথা বলা হয়। এই জরিপে রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন প্রতিটি দলেই নারীর অংশগ্রহণ একান্তভাবে জরুরী।

রাজনীতিবিদরা মনে করেন ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কমিটিতে ৩৩% নারীর অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার উদ্যেগ নেয়া যেতে পারে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় অনুচ্ছেদে সংযোজন/সংশোধন করা প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা অধিকাংশ মনে করেন রাজনীতিতে নারীর অধিকার এবং প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন আছে। এই জরিপে দেখা যায় যে, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের রাজনৈতিক দলের মূল কমিটিতে নারীর অংশগ্রহণ লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন নিয়ে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আওয়ামীলীগ ২০০৯-২০১৯ পর্যন্ত চারটি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দুইটি এবং জাতীয় পাটির তিনটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মেলন অনিয়মিত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের নিয়মগুলো সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করা হয় না। ফলে রাজনৈতিক দলের কমিটিতে নারীর অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভূক্তির একটা বৈসাদৃশ্য থেকে যাচ্ছে।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন, রামু উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান আফসানা জেসমিন পপি, উখিয়া উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান কামরুন্নেছা বেবী, রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রীনা, কক্সবাজার পৌরসভার ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শাহেনা আক্তার পাখি, কক্সবাজার উইমেন চেস্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি জাহানারা বেগম, কক্সবাজার জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আয়েশা সিরাজ, অ্যাডভোকেট সাকি এ কাউসার প্রমুখ।

এসময় প্রকল্প থেকে উপস্থিত ছিলেন, প্রকল্প কর্মকর্তা রওশন আক্তার, উপজেলা সমন্বয়কারী রিদুয়ানুল হক, আসাদুজ্জামান লিওন, জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

অপরাজিতায় জেলায় ৭৫০ জন সুবিধাভোগী রয়েছে। কক্সবাজারে ৫টি উপজেলা ৫০টি ইউনিয়নে নারী জনপ্রতিনিধি ও নারী নেত্রীদের নিয়ে কাজ করছে অপরাজিতা।
বিনিময় সভায় জেলা থেকে ৪০ জন অপরাজিতা নারী উপস্থিত ছিলেন।

Comments

comments

Posted ৬:১১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ জুলাই ২০২২

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com