বিপ্লব দাশ, লামা | সোমবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২২
বান্দরবানের লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট চলছে বিগত ১৫ বছর ধরে। এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যাবস্থা নাজুক অবস্থায় রয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৩১ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও তার বিপরীতে রয়েছে মাত্র ৫ জন শিক্ষক।
৭ জন কর্মচারীর বিপরীতে রয়েছে ১ জন। শিক্ষকদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জন ধর্মীয় ও ২ জন অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষক।
বিদ্যালয়ে শূন্যপদে শিক্ষক পূরণ না করে শিক্ষক বদলি করছেন বলে অভিযোগ উপর মহলের বিরুদ্ধে। এতে মুখ থুবড়ে পড়েছে লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা।
শিক্ষক শূন্যপদের তালিকা
দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চরম বিপাকে পড়েছে অভিভাবকরা। মানসম্মত শিক্ষা তো দুরের কথা, ন্যূনতম শিক্ষাও পাচ্ছে না এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, ১জুলাই ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পরিপুর্ণ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছিল বিদ্যালয়টি।বিদ্যালয়ের সুনাম ও ঐতিহ্যে অন্য উপজেলা থেকে একসময় শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসত। মুলত ২০০৭ সালের পর থেকে শিক্ষক-কর্মচারী সংকটে শিক্ষার পরিবেশে ব্যাপক ধস নামতে শুরু করে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা, কারিগরি বিভাগসহ প্রায় ৬’শ শিক্ষার্থী রয়েছে।
জনবল কাঠামো অনুসারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা-৪, ইংরেজি-৪, গণিত-৩, সামাজিক, বিজ্ঞান-৩,ধর্ম-২,ভৌত বিজ্ঞান-২,ব্যাবসা শিক্ষা-১, ভুগোল-১,চারুকলা-১,শারীরিক শিক্ষা-১,কৃষি শিক্ষা-১,কারিগরি শাখায় কম্পিউটার-২,ড্রেস মেকিং-২জনসহ ৩১জন শিক্ষক এবং অফিস ব্যবস্থাপনায় উচ্চমান সহকারি-১জন,নিম্মমান সহকারি-১জন,অফিস সহায়ক-৫জনসহ ৭জন কর্মচারী থাকার কথা।
কিন্তু চাহিদাপত্রে দেখা যায় ৭জন কর্মচারীর মধ্যে পিওন ১জন, ৩১জন শিক্ষকের মধ্যে শিক্ষক আছে মাত্র ৫জন এই ৫ জনের মধ্যে রয়েছে আবার ১জন ভৌত বিজ্ঞান,৩ জন ধর্মীয় ও ১ জন কৃষি শিক্ষক।
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার ভৌত অবকাঠামোসহ নানামুখী উদ্যোগ নিলেও মানসম্মত শিক্ষার ছিটেফোটা নেই লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে।শিক্ষক সংকট ও শিক্ষক বদলিতে একসময়ের আলোর শিখা ছড়ানো প্রদীপ টি এখন নিবুনিবু অবস্থায় ঠেকেছে
নতুন বছর শুরু হলে সন্তানকে কোথায় ভর্তি করাবে এ নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়ে অভিভাবকের কপালে। স্কুলের এই দুরাবস্থা দেখে যাদের আর্থিক স্বচ্চলতা ভাল তারা সন্তানকে নিয়ে যাচ্ছেন বাহিরে।আর্থিক অস্বচ্চলতার কারনে নিরুপায় হয়ে জেনেশুনে এখানে ভর্তি করে সন্তানকে ঠেলে দিচ্ছেন এক অজানা ভবিষ্যতের দিকে।
শিক্ষকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে ছাত্র-অভিভাবকরা আন্দোলন,মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েও এর কোন প্রতিকার পাননি।
মাঝেমধ্যে দু একজন শিক্ষক দিলেও দ্রুততম সময়ে বদলি হয়ে যায় এসব শিক্ষক।বদলি নিয়ে অভিভাবকদের মনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।তারা মনে করেন,ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে উপর মহল শিক্ষক বদলি করে থাকেন।না হয় ৩১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৮/১০ জন শিক্ষক থাকলে সেখান কিভাবে বদলি হয় তাদের প্রশ্ন।
অভিভাবকদের অভিযোগ- একজন শিক্ষকের সুযোগ সুবিধার কথা চিন্তা করে অথচ ৬’শ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেনা দুর্নীতিবাজ এসব মহল-২০২১ সালের অক্টোবরে বিদ্যালয়ে ৮জন শিক্ষক ছিল। সেখান থেকে নভেম্বরে ক্রীড়া শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া,ডিসেম্বরে ইংরেজি শিক্ষক দীপন চৌধুরী,ভৌত বিজ্ঞান শিক্ষক মোহাম্মদ নেছারুল হক খানকে বদলি করা হয়।
Posted ১১:২৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২২
dbncox.com | ajker deshbidesh