বিজয় কুমার ধর | বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২
প্রায় তিন বছর ধরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেই কোনও চোখের ডাক্তার। ফলে চোখের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে বিনা চিকিৎসায়। জেলার বাইরে থেকে যেসব চিকিৎসক বিভিন্ন ক্লিনিকে এসে রোগী দেখেন, তাদের ফি বেশি হওয়ার কারণে গরিব রোগীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। চক্ষু বিভাগের লাখ লাখ টাকার সরকারি যন্ত্রাংশ পড়ে আছে চিকিৎসক না থাকায়।
প্রফেসর, কনসালটেন্ট, মেডিকেল অফিসারসহ সব পোস্ট খালি রয়েছে প্রায় দুই বছর ধরে। অথচ চক্ষু রোগ নির্ণয় করার স্লিট ল্যাম্প, ভিউ বক্স, কম্পিউটার মেশিনসহ সব যন্ত্রপাতি আছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে।
সদর হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগের তথ্য মতে, ২০১৯ সাল থেকে হাসপাতালে চক্ষু চিকিৎসকের (এরপর পৃষ্ঠা ২ কলাম ৩)
চক্ষু চিকিৎসক নেই কক্সবাজার
পদটি শূন্য রয়েছে। প্রতি মাসে সদর মন্ত্রণালয়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও শূন্য পদ উল্লেখ করে তালিকা পাঠানো হলেও মেলেনি চক্ষু চিকিৎসক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চিকিৎসক জানান, জেলা সদর হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ সচল করতে দিচ্ছে না একটি বাইরের সিন্ডিকেট। তারা নিজেরা রোগী দখল ও বাণিজ্য করতে সদরের চক্ষু বিভাগকে অকার্যকর করে রেখেছে।
এছাড়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের শিক্ষার্থীরাও শ্রেণী কার্যক্রম থেকে শুরু করে ব্যবহারিক কোন কোর্স করতে পারছে না। শহরের বায়তুশ শরফ হাসপাতালে গিয়ে ইন্টার্নি করতে হয় এখানকার শিক্ষার্থীদের।
হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারের সামনে কথা হয় ৫২ বছর বয়সী বৃদ্ধ নাজির হোসেন সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চোখের সমস্যা নিয়ে অনেক দিন ধরে অসুস্থ। গরিব বলে সদর হাসপাতালে আসি ডাক্তার দেখাতে। সবাই বলল, চোখের কোনও ডাক্তার নেই।’
বাইরে প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তারের সাথে সাক্ষাৎকারে গুণতে হয় কমপক্ষে ৭০০ টাকা এবং সপ্তাহের একদিন বা দুইদিন ডাক্তার পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি। তবে প্রাইভেটে ডাক্তার পাওয়া গেলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি এই বৃদ্ধ।
আসরার আজীম (৩৫) নামে আরেক রোগী জানান, ‘চোখের ডাক্তার দেখাতে টেকনাফ থেকে অনেক কষ্ট করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু এসে দেখেন হাসপাতালে চোখের চিকিৎসনেই।
জেলা সদর হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বরত একজন কর্মচারী জানান, ‘প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০/৯০ রোগী চোখের ডাক্তারের টিকেট চান। হাসপাতালে চোখের ডাক্তার নেই কয়েক বছর ধরে। তাই আমরা চোখের ডাক্তারের টিকেট বিক্রি করি না।’ জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মুহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, “দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চোখের চিকিৎসকের পদটি শূন্য রয়েছে। তবে বর্তমানে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসেবে একজন যোগদান করেছেন। হাসপাতালের নতুন ভবন আগামী ১৪ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন উদ্বোধন করবেন। এরপর থেকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে চক্ষু বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন এই ভবনে নিয়মিত রোগী দেখবেন বলে জানান তিনি।
Posted ১১:৩৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২
dbncox.com | Bijoy Kumar