| বুধবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত দুই বছরে ইনজুরিসহ নানা কারণে কুড়ি ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছিলেন না তামিম ইকবাল। তার জায়গায় পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি অন্য ক্রিকেটাররা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর পাকিস্তান সিরিজেও ওপেনাররা ব্যর্থ হয়েছেন। তখন থেকেই তামিমকে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় বিসিবি। সেখানে বাঁহাতি ওপেনার কিছু ‘শর্ত’ জুড়ে দিয়েছিলেন। আগামী ছয় মাস তিনি আন্তর্জাতিক কোনও টি-টোয়েন্টি খেলবেন না। ছয় মাস পর টিম ম্যানেজমেন্ট যদি অনুভব করে তাকে দরকার, তবেই ফিরবেন!
যদিও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর চিন্তা-ভাবনা ভিন্ন। তিনি স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছেন, তামিমের ছুটি কমানোর চেষ্টা করবেন তারা। তার এই ‘চেষ্টার’ বড় কারণও আছে। তামিমের অনুপস্থিতিতে যারা সুযোগ পেয়েছেন, তারা সবাই ব্যর্থ! বিশ্বকাপ ও পাকিস্তান সিরিজে নাঈম শেখ কিছু রান করলেও তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে আছে বিস্তর প্রশ্ন। বাকি যারা আলোচনায় আছেন, তাদের বেশিরভাগই দীর্ঘদিন ধরে অফ ফর্মে। বিপিএলেও ফর্মে ফেরেননি। শান্ত-নাঈমরা রান খরায় ভুগছেন। সৌম্য সরকার তো বিশ্বকাপের আগে থেকেই রানে নেই। লিটন বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর পাকিস্তান সফর থেকে বাদই পড়েছিলেন। এমন অবস্থায় তামিমের বিকল্প কেবল তামিমেই দেখছেন নির্বাচকরা!
মিনিস্টার ঢাকার হয়ে বিপিএল খেলতে এসে চট্টগ্রামে তামিম ঘোষণা দেন, আগামী ছয় মাস আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাববেন না তিনি। কিন্তু এই ঘোষণায় এমন কিছু কথাও বলেছেন, যাতে মনে হচ্ছে দেশের হয়ে আর টি-টোয়েন্টি খেলবেন না তিনি! অথচ চলতি বিপিএলের শুরুর দিন থেকে নিয়মিত রান করে যাচ্ছেন। ছয় ম্যাচে এক সেঞ্চুরি ও দুই হাফসেঞ্চুরিসহ ৫২.৪০ গড়ে ২৬২ রান তার, যা এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ। ঘোষণার পরদিন সাগরিকায় ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালান তামিম, খেলেন ১১১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ৬১ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে শেষ পর্যন্ত ৬৪ বলে ১৭ চার ও ৪ ছক্কায় ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন। পরের ম্যাচেও হেসেছে তার ব্যাট। মঙ্গলবার খেলেন ৪৬ রানের ইনিংস।
দারুণ ফর্মে থাকা অভিজ্ঞ এই ওপেনারই আগামী ছয় মাস আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলবেন না, এটা যেন মানতে পারছেন না বিসিবি নির্বাচকরা। এ কারণে ইতোমধ্যে তামিমকে বিরতির মেয়াদ কমানোর অনুরোধ করা হয়েছে। অভিজ্ঞ ব্যাটারের সেরা সময়কে জাতীয় দলে কাজে লাগাতে চান তারা। নির্বাচকরা তামিমকে দ্রুততার সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
প্রধান নির্বাচক নান্নুর কথার সেটিরই প্রতিফলন, ‘অবশ্যই দলে চাইবো। সেরা পারফর্মারকে আপনি সবসময় দলে পেতে চাইবেন। তার সেরা সময়ে সেরা খেলাটাই তো চাইবো, তাই না?’
তামিমের ছয় মাসের বিরতি নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন নান্নু। তারপরও জাতীয় দলের কথা চিন্তা করে বাঁহাতি এই ওপেনারকে তাড়াতাড়ি ফেরানোর চেষ্টায় তিনি, ‘এটা তামিমের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সে চিন্তা-ভাবনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাকেও সম্মান জানাতে হবে। তবে তাকেও আমরা অনুরোধ করছি। চেষ্টা থাকবে যেন তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনা যায়।’
ক্যারিয়ার দীর্ঘ করতে একটি ফরম্যাট ছাড়তে চান, গত বছরের এপ্রিলে জানিয়েছিলেন তামিম। বাঁহাতি এই ওপেনার সে সময় ফরম্যাটের কথা না জানালেও ধারণা করা হয়েছিল টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলবেন তিনি। পরবর্তীতে এই ফরম্যাট থেকে নিজেকে দীর্ঘ সময় সরিয়ে রাখায় আলোচনা বাড়ে। গত ২২ জানুয়ারি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানান, টি-টোয়েন্টি খেলতে চান না তামিম। এরপরই গত ২৭ জানুয়ারি নিজেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে ছয় মাস সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বাঁহাতি ওপেনার।
ওইদিন সংবাদমাধ্যমকে তামিম বলেছিলেন, ‘আশা করি আমাদের তরুণরা এত ভালো খেলবে যে আমাকে প্রয়োজন হবে না। তাদের নিয়েই অস্ট্রেলিয়া যেতে পারবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাকে আর দরকার হবে না। তারপরও বিশ্বকাপের আগে দল ও আমি যদি মনে করি আমাকে দরকার, তখন চিন্তা করবো।’
Posted ১১:৪৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
dbncox.com | ajker deshbidesh