লিটন কুতুবী,কুতুবদিয়া | রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮
গত কয়েক মাস ধরে কুতুবদিয়ায় ডুবায় ও পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংক বেড়েছে উপজেলার সচেতন নাগরিক ও অভিভাক মহলে। গত ৭ জুলাই পুকুরে ডুবে মৃত্যু বরণ করেছে উপজেলার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের মনছুর আলী হাজীর পাড়ার ফারুকের শিশু পুত্র ফাহিম (১৮ মাস) । এরপূর্বে গত ৩০ জুন পুকুরে ডুবে মৃত্যু বরণ করেন ১৬ বছরের কলেজ পড়–য়া এক ছাত্র। কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়া তথ্য অনুসারে প্রতিমাসে গড়ে ১৫-২০ জন শিশু পুকুরে ডুবে মৃত্যু বরণ করছে কুতুবদিয়ায়। তাদের মধ্যে অধিকাংশ শিশুর বয়স ৬-১৫ বছর। আবার ১৮ মাস বয়স থেকে ৫ বছরের শিশুও রয়েছে। সব মিলিয়ে গত জানুয়ারী মাস থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুকুরে ও ডুবায় পড়ে শতাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেকেই এর জন্য অভিভাবকের অসচেতনতাকে দায়ী করলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা বলেছেন জ্বীনের উপদ্রবের কথাও থুলে ধরেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, শুধু অভিভাবকের অসচেতনতাই নয় কুতুবদিয়ার ডুবাগুলোতে জ্বীনের উপদ্রবও রয়েছে বলে দাবী করেন। যে কারণে জেলার অন্যান্য উপজেলা গুলোর চেয়ে কুতুবদিয়ায় বেশীর ভাগ পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ মানুষ ও জ্বীন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং জ্বীনকে অস্বীকার করার উপায় নেই। ডুবায় কি সত্যি জ্বীনের উপদ্রব আছে ? এমন প্রশ্নের উত্তরে উপজেলার প্রবীণ ব্যক্তি আবুল কালাম (৬৫) বলেন, পাঠ্য বইয়ের গল্পে কাঠুরিয়া ও জলপরীর গল্প শুনেছি। বাস্তবে কখনো দেখি নাই। তবে আমি যখন ছোট ছিলাম তখন বাড়ির মুরব্বিরা নিচের গল্পটি শুনাতেন। পুকুরে বা জ্বলাশয়ে “জইক্ক্যা’’ নামের এক দৈত্য থাকে। ঠিক দুপুর বেলা কিংবা একা একা পুকুর কিংবা জ্বলাশয়ে দ্বারে গেলে ঐ “জইক্ক্যা” শিশুদের ফুল দেখিয়ে পানিতে নামায়। তারপর তার বিশাল লম্বা কালো চুল দিয়ে পেঁচিয়ে পানির গভীরে নিয়ে যায় এবং মেরে পেলে। তিনি বলেন, এটাতো নিছক গল্প। শিশুদের ভয় দেখানোর গল্প। যাতে শিশুরা একা একা পুকুরে কিংবা জ্বলাশয়ে না যায় সে জন্য এ ধরনের গল্প শুনানো হতো। কিন্তু এখনো অনেকেই এই গল্পকে বিশ্বাস করে বলেন, জ্বলাশয়ে সতীই জ্বীনের উপদ্রব আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজন চৌধুরী বলেন, জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে কুতুবদিয়ায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা আশংকা জনকহারে বেড়েছে।
এটা অবশ্যই একটি উদ্বেগের বিষয়। এর জন্য তিনি অভিভাবকের অসচেতনাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, অভিভাবকরা সচেতন হলে শিশুরা পানিতে যাওয়ার সুযোগ পাবে না। তার সাথে সুর মিলিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ আরো অনেকেই। কুতুবদিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রহমান বলেন,অভিভাবকদের অসচেতনতার পাশাপাশি সাঁতার না জানার কারণে ৬ বছরের উর্দ্ধের শিশুরা পানিতে ডুবে মৃত্যু বরণ করছে। কুতুবদিয়া যেহেতু দ্বীপ এলাকা তাই শিশুদের সাঁতার শেখানোর জন্য এখনই উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটি.এম. নুরুল বশর চৌধুরী বলেন, উপজেলায় প্রতিমাসে গড়ে ১৫-২০ জন শিশু পুকুরে/জ্বলাশয়ে ডুবে মৃত্যু বরণ করছে। যা সতিই আতংকের বিষয়। তিনি বলেন, অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। সন্তানদের সময় দিতে দিবে এবং সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে। দেশবিদেশ /০৮ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১০:৪০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh