জসিম উদ্দিন টিপু,টেকনাফ:: | বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়াদ্বীপে যত্রতত্র ময়লা ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে দ্বীপের বেশ কয়েকটি অংশে আবর্জনার স্তুপ তৈরী হয়েছে। এতে নষ্ট হচ্ছে পর্যটনের পরিবেশ। দিন দিন কমে যাচ্ছে দ্বীপের সৌন্দর্য্য। পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের পরিকল্পনার অভাবে এমনটি হচ্ছে বলে পযর্টন সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন। দ্বীপের দোকানীরা জানিয়েছেন,পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়োজিত আব্দুল আমিন নামের এক যুবক দোকান প্রতি দৈনিক ১শ টাকা করে উত্তোলন করছেন। দোকানের কারণে সৃষ্ট আবর্জনা পরিস্কারের নিমিত্তে ওই যুবক আমাদের কাছ থেকে মূলত টাকাটা নিচ্ছেন। পরিবেশের পক্ষে টাকা গ্রহণকারী যুবকটি নিয়মিত টাকা নিয়ে আসলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা বলে দোকানীরা জানিয়েছেন। পরিবেশবাদী সংগঠন, আগন্তুক পযর্টকরা ছেঁড়াদ্বীপের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং বোট মালিকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, প্রতিদিন অন্তত হাজারেরও বেশী পযর্টক ছেঁড়া দ্বীপে ভ্রমণে আসছেন। ছেঁড়া দ্বীপে ৩০/৩৫টি ছোট ছোট দোকান রয়েছে। এসব দোকানে ডাব,কোমল পানীয়,তরমুজ বিস্কুট, আইসক্রিমসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী রয়েছে। পযর্টকরা দ্বীপের ওই সব দোকান থেকে খাদ্য সামগ্রী কিনে খাচ্ছেন। খাওয়ার পর পযর্টকরা পানীয় বোতল,খালি প্যাকেট যেখানে সেখানে ছুঁড়ে ফেলছেন।
সেন্ট মার্টিন দক্ষিণ পাড়া এলাকার আব্দুশ শুক্কুর জানান,ময়লা সরিয়ে নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের আব্দুল আমিনকে নিয়মিত ১শ টাকা করে দিচ্ছি। আমার মত দ্বীপের সব দোকানীদের প্রতিদিন ১শ টাকা করে দিতে হয়। অপর দোকানদার দ্বীপের বাসিন্দা আবুল বশর জানান,পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য আমরা ১শ টাকা করে দিয়ে আসছি। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর কর্র্তৃক নিয়োজিত সদস্যের খামখেয়ালীপানার কারণে দ্বীপে আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে। কিছু কিছু দোকানী দাবী করেন,ডাবের খোসা রোদে শুকিয়ে পরে জ¦ালানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। লোকজন জানিয়েছেন,ডাবের খোসা এবং সৃষ্ট ময়লা আবর্জনা কেয়াবনে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে।
কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা কলেজ ছাত্র ফারহান জানান,ছেঁড়াদ্বীপ অপূর্ব সুন্দর। নীল সাগর এবং সবুজ জলরাশি পাড়ি দিয়ে ছেঁড়াদ্বীপে গেলেই সেন্ট মার্টিনের প্রকৃত সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। তবে এখানকার সাগরপাড়ে কেয়াবনের নিকটে যেখানে সেখানে পড়ে আছে ময়লা আবর্জনা। ডাবের খালি খোসা এবং ময়লার কারণে পযর্টকরা কেয়াবনে প্রবেশ করতে পারেনা।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ নুর আহমদ জানান,দ্বীপে পরিবেশ অধিদপ্তরের ৮জন লোক রয়েছেন। তাদের কর্মকান্ড কি? পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা তাদের দায়িত্বে পড়ে কিনা? বিষয়টি নিয়ে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন ফোরামে অনেকবার উত্তাপন করা হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দ্বীপের অপরিস্কার এবং অপরিচ্ছন্নতার জন্য তিনি সম্পুর্ণ পরিবেশ অধিদপ্তরকে দায়ী করছেন। এই বিষয়ে জানতে কক্সবাজারস্থ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ নাজমুল হুদার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও পরিকল্পনা (সদর দপ্তর) সুলায়মান হায়দারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে সুলায়মান হায়দারের মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে টেকনাফ উপজেলার নব নিযুক্ত নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী জানান,ছেঁড়া দ্বীপ নিয়ে সরকারের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। এই দ্বীপে অপরিস্কার এবং অপরিচ্ছন্নতা হতে দেওয়া যায়না। তিনি দ্রুত সময়ে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
Posted ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
dbncox.com | ajker deshbidesh