কক্সবাজার প্রতিনিধি। | শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩
বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী কক্সবাজারে সমুদ্রে নিষিদ্ধ, পরিত্যক্ত ও হারানো জাল প্রতিরোধ, প্রতিকার ও প্রশমনের লক্ষ্যে ‘প্রতিকার, হারানো ও অব্যবহৃত জালকে না বলি, সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষা করি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার আয়োজন করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর চেয়ারম্যান ড. মো. সাজেদুল হক। গবেষণা প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করে আমেরিকার গ্লোবাল গোস্ট গিয়ার ইনিশিয়েটিভ ও ওশান কঞ্জারভেন্সি।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও স্টেশন প্রধান ড. শফিকুর রহমান প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা, কক্সবাজার সদর, ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পের গবেষক এবং কক্সবাজারের দরিয়ানগর ও সমিতিপাড়া অঞ্চলের জেলে সম্প্র কর্মশালাটি পরিচালনা, মূল প্রবন্দ ও গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. মো: সাজেদুল হক, ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগ ও প্রকল্প পরিচালক।
কর্মশালায় বলা হয়- প্রকল্পের মাধ্যমে গবেষকবৃন্দ নিষিদ্ধ, ভাবানো ও পরিত্যাক্ত জান এর কারণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করেন। প্রতিবছর নিষিদ্ধ হারানো ও পরিত্যক্ত জালের কারণে বিপুল সংখ্যক ডলফিন, কচ্ছপ ও তিমি আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায়, যা প্রায়শই কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে মৃত অবস্থায় ভেসে আসতে দেখা যায়। প্রকল্পের মাধ্যমে অব্যবহৃত ও পরিত্যাক্ত ভাগের সামুদ্রিক পরিবেশের উপর প্রভাব নিয়ে করবাজার ও কুয়াকাটা অঞ্চলের ২০০ জন সামুদ্রিক জেলের উপর জরিপ চালানো হয়। এছাড়া পরিত্যক্ত জাল সংগ্রহ ও সংরক্ষণে জেলেদের মধ্যে ডাস্টবিনে বিতরণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে প্রশমনের লক্ষ্যে জেলেদের টি-শার্ট বিতরণ, বিচ পরিষ্কার রাশি, প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অব্যবহৃত পরিত্যাক্ত জাল পুনর্ব্যাবহারের মাধ্যমে নতুন পণ্য যেমন খেলনা, জুতা, রশি ও অন্যান্য প্রব্য তৈরি করে জেলে পরিবারের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারবে। কর্মশালায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: বদরুজ্জামান বলেন, ফেলে দেয়া জাল বা গোস্ট গিয়ার সামুদ্রিক পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্রের এক বড় হুমকি। উন্নত বিশ্বে এ দূষণ রোধে বিস্তার গবেষণা কাজ হলেও আমাদের দেশে এই দূষণ প্রতিরোধ কার্যাম খুবই নতুন। আমি আশা করি। সামুদ্রিক পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও মৎস্য অধিদপ্তর এই নুফা প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, ‘গোস্ট গিয়ার সামুদ্রিক পরিবেশ নষ্ট ও জীববৈচিত্র ধ্বংস করে এটা বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত। অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত এই জান মোট সামুদ্রিক দুখানের ১০ ভাগ দখল করে যা পরবর্তীতে মাইক্রোস্টিক দূষণের অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে।’
কক্সবাজারের দরিয়ানগর অঞ্চলের জেলে মো. মুজাহার মিয়া বলেন, ‘আমরা সাগরে মাছ ধরার সময় প্রায়শই ভেসে আসা জালেরা টুকরা পাই যা ইতিপূর্বে সাগরেই ফেলে দিতাম এমনকি আমাদের নিজেদের ব্যবহার পরিত্যক্ত জাগও সাগরে ফেলে দিতাম কিন্তু পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা এই অব্যবহৃত ও পরিত্যাক্ত জানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অবগত হই এবং জাল সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণ করি। এছাড়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে সচেতন হতো আমরা আমাদের মাছরা জানে আটকে পড়া কচ্ছপ, হাঙ্গর ও ভলফিন সমুদ্রে সফরে মুক্ত করে দেই।’
কর্মশালায় উপস্থিত অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘উক্ত গবেষণা কার্যক্রম বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় খুবই সময়োপযোগী ও সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় সরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
##
Posted ১১:০০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩
dbncox.com | Bijoy Kumar