তারেকুর রহমান | শুক্রবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ইন্টার্ন নারী চিকিৎসকদের যৌন হয়রানির অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুমিনুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুমিনুর রহমান বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ডা. মাহফুজুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে কালকের মধ্যেই রিলিজ করা হবে। এছাড়া ডা. মাহফুজুর রহমানকে মারধর করায় ৬ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা কাটানোর মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হয়ছে।
এর আগে বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা থেকে ইন্টার্নদের যৌন হয়রানির অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো ছয় নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের ৩ মাসের এক্সটেনশন ও বেতন-ভাতা কেটে রাখায় কর্মবিরতিতে চলে যায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টা এই প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত হাসপাতালে কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিলেন না। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ শতাধিক রোগী ভোগান্তিতে রয়েছেন।
ডা. মুমিনুর রহমান বলেন, শুক্রবার থেকে নিয়ম অনুযায়ী তাদের হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের নোটিশ দেয়া হয়েছে। এটি অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এখনো পর্যন্ত ডা. মাহফুজুর রহমানকে প্রত্যাহার ও নির্দেশনার ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়কের কোনো নোটিশ পান নি বলে জানান ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইমন সেন।
তিনি বলেন, ‘ডা. মাহফুজুর রহমানের গায়ে হাত তুলা হয়নি। বরং আমরা অভিযোগ করায় আমাদের ৬ নারী সহকর্মীর বেতন-ভাতা কাটা হয়েছে। আমাদের দাবী দুইটি। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে বেতন-ভাতা কর্তন করতে পারবে না। অপর দাবি হচ্ছে অনতিবিলম্বে ডা. মাহফুজুর রহমানকে প্রত্যাহার করে আমাদের দেখাতে হবে। অন্যথায় আমাদের এই কর্মবিরতি থাকবে।
ডা. মাহফুজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়ে সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সদর হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. অমিত বলেন, ‘হাসপাতালের প্রত্যেক বিভাগে প্রতিদিন বিকেলে ২ জন ইন্টার্ন ও ১ জন মেডিকেল অফিসার দায়িত্বে থাকেন। কিন্তু বুধবার রাত ১০ টার পর থেকে ইন্টার্নদের অনুপস্থিতিতে ১জন মেডিকেল অফিসার রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। একটি অবশ্য কষ্টকর। এ নিয়ে বর্তমানে হাসপাতালে প্রায় ৯ শতাধিক রোগী কষ্ট পাচ্ছে।
টেকনাফের সাবরাং থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কুলসুমা বলেন, আমার স্বামীকে গতকাল থেকে হাসপাতালে ভর্তি করালাম কিন্তু একজন ডাক্তার এসে একবার দেখে গেছেন। তার আর কোনো খবর নেই। আমার স্বামী নিয়ে অনেক কষ্ট হচ্ছে।’
রামু জোয়ারিয়ানা থেকে আসা হাফেজ আহমদ বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি। বুধবার বিকেলে একজন ইন্টার্ন মহিলা ডাক্তার এসে দেখে গিয়েছিল। এবং রাতে আরেকজন আসবে বলা হলেও এ পর্যন্ত আর কেউ আসেনি। খুব কষ্ট হচ্ছে।
ঝিলংজা থেকে শিশুর চিকিৎসা নিতে আসা হুমায়ুন কাদের বলেন, ‘একজন মেডিকেল অফিসার এসে আমার বাচ্চাকে দেখে গেলেন কিন্তু আর দেখা পাইনি তার। ইন্টার্ন ডাক্তাররাও নেই। চিকিৎসা সেবা এই রকম হলে রোগী ও রোগীর স্বজনরা আরো বেশি কষ্ট পাবে। বর্তমানে হাসপাতালের সময়টা একটা ভেগান্তির মধ্যে যাচ্ছে।
Posted ১:১২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
dbncox.com | ajker deshbidesh