নুরুল করিম রাসেল, টেকনাফ | বুধবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৮
সেন্টমার্টিনের জেলে আব্দুল গণির জালে ধরা পড়েছে ৩৫ কেজি ওজনের একটি পোপা মাছ। যা বিক্রি হয়েছে ৮ লাখ টাকায়। এনিয়ে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে তোলপাড় চলছে। সবার মুখে মুখে ফিরছে মাছটির কেন এতো দাম। মাছটিতে এমন কি রয়েছে যা এতো দামে বিক্রি হলো। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই এব্যাপারে পরিস্কার ধারনা দিতে না পারলেও সবাই বলছেন মাছটির ফুসফুস বা ফদানার কারনে এতো দাম। মাছটির মূল ক্রেতা কক্সবাজারের মহেষখালীর ইসহাক বলছেন মাছটি হংকংয়ে রপ্তানী হবে। আর মাছটির ফুসফুস দিয়ে বিশেষ ধরনের স্যুপ তৈরী হয় তাই মাছটির এতো দাম।
মঙ্গলবার সকালে সেন্টমার্টিনের জেলে আব্দুল গনির জালে ধরা পড়ে ৩৫ কেজি ওজনের পোপা মাছটি।
টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, যতটুকু জানা যায়, পোপা মাছের বায়ুথলী বা এয়ার ব্লাডারের কারনে মাছটির অত্যধিক মূল্য। এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের অপারেশনাল সুতো তৈরী হয় বলে মাছটির এতো দাম বলে তিনি শুনেছেন। তবে এব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি। যার জালে মাছটি ধরা পড়েছে সেই আব্দুল গণি জানান, তার নিজস্ব ট্রলারে মঙ্গলবার সকালে অপর দুই জেলেকে নিয়ে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে সাগরে বের হয়েছিলেন। সকাল ১০টার দিকে সেন্টমার্টিনের এক দেড় কিলোমিটার দুরে ফুলের কুপ নামক স্থানে জাল ফেলেন। এর কিছুক্ষন পর যখন জালে মাছটি ধরা পড়ে আর দেরী না করেই দ্বীপে ফিরে আসেন। মৎস্য ঘাটে ফিরলে মাছটি দেখে স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম ও ফজল করিমের মধ্যে প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যায়। ১লাখ টাকা থেকে দাম উঠতে উঠতে এক পর্যায়ে ৮ লাখ টাকায় ফজল করিমের কাছে মাছটি বিক্রি করেন। ইতিমধ্যে টাকাও বুঝে পেয়েছেন।
তার জালে ধরা পড়া পোপা মাছটি স্থানীয় ভাষায় কাল পোয়া নামে পরিচিত। আর এই কাল পোয়ার যে অধিক দাম তা তিনি আগে থেকে জানতেন। এর আগেও তার জালে প্রায় কাল পোয়া ধরা পড়েছিল তবে সেগুলি আকারে ছোট এক দেড় কেজি ওজনের। এতো বড় মাছ আগে কখনো তার জালে ধরা পড়েনি বলে জানান তিনি। ফজল করিম জানান তিনি কক্সবাজারের ইসহাকের জন্য মাছটি ক্রয় করেছেন। এদিকে মাছের খবর পেয়ে সেন্টমার্টিনে ছুটে আসেন ইসহাক। মুঠোফোনে কথা হলে ইসহাক জানান, ঝুঁকি নিয়ে মাছটি কিনেছেন। যদি ফদানা বা ফুসফুসটির ওজন ৯শ হতে সাড়ে ৯শ গ্রাম হয় তবে এটি বিক্রি করে লাভ হবে। আর ওজন কম হলে লোকসান হলে কয়েক লাখ টাকা। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পিকে দাশের কাছে তিনি মাছটি বিক্রি করবেন। পিকে দাশ দেশের বাইরে থাকায় ওয়াটসআপে কথা বলে মাছটি কিনেছেন তিনি। পিকে দাস বিদেশে মাছ ও মাছের ফদানা রপ্তানী করে থাকেন, জানান ইসহাক।
বর্তমানে মাছটি সেন্টমার্টিনেই বরফ দিয়ে সংরক্ষন করা হয়েছে। বুধবার মাছটি নিয়ে তিনি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।
সেন্টমার্টিন ইউপি সদস্য মো. হাবিব জানান, সেন্টমার্টিনের জেলেদের জালে প্রায় বড় আকাড়ের সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়ে তবে এতো অধিক দামে কখনো মাছ বিক্রির খবর শুনি নাই।
Posted ১:১১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh