দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক | রবিবার, ২৬ আগস্ট ২০১৮
সরকারবিরোধী সমাবেশে যোগ দেওয়া ও স্লোগান উচ্চারণের কারণে আটক এক নারী অধিকার কর্মীর শিরশ্ছেদের সাজা হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এর আগে কখনও কোনও নারী আন্দোলনকারীকে শিরশ্ছেদের মতো সাজা দেয়নি দেশটি। রুশ সংবাদমাধ্যম রাশিয়া টুডে লিখেছে, ২৯ বছর বয়সী ইশরা আল গোমামকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তার স্বামী মুসা আল হাশেমের সাথে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তেল সমৃদ্ধ কাতিফে একটি সরকারবিরোধী সমাবেশ আয়োজন ও সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে গোমাম ও স্বামীকে অভিযুক্ত করা হয়। তখন থেকে তারা কারাগারে রয়েছেন। তাদের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও কয়েকজন অধিকার কর্মীকে। তারা সৌদি আরবের সরকারের বিরুদ্ধে শিয়াদের বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন।
ইশরা আল গোমাম
এ মাসের শুরুতে সৌদি আরবের বিশেষ আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী ইশরা আল গোমামসহ অভিযুক্ত আরও পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দাঙ্গা ছাড়ানোতে উসকানি দেওয়া, জনগণকে উত্তেজিত করে তোলা, সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়া, আন্দোলনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করার মতো অভিযোগ উত্থাপন করে গোমামাসহ অপর পাঁচ বন্দির শিরশ্ছেদের সাজা প্রার্থনা করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গোমামকে কোনও আইনজীবীর সহায়তা নিতে দেওয়া হয়নি। এখন মানবাধিকার সংস্থাগুলো চেষ্টা করছে, আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য আপিল শুনানির মাধ্যমে শিরশ্ছেদের আদেশ রহিত করানোর।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের পরিচালক সারাহ লি হুইস্টন সৌদি আরবের সংস্কারবাদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে গোমামের শিরশ্ছেদ ঠাকাতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘যেকোনও মৃত্যুদণ্ডই দুঃখজনক। কিন্তু ইশরা আল গোমামের মতো অধিকার কর্মী, যিনি কোনও রকম সহিংসতায় জড়িত নন, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত দানবীয়। যুবরাজ যদি সত্যিই সংস্কার চান তাহলে অন্যায়ভাবে অধিকার কর্মীদের বন্দি করার বিরুদ্ধে তার এখনই দাঁড়ানো উচিত।’
আল গোমামের সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ডকে শিয়াদের প্রতি সুন্নি সৌদি সরকারের কঠোর বার্তা হিসেবে দেখছেন জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ গুইডো স্টেইনবার্গ৷ সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলকে স্টেইনবার্গ বলেছেন, ‘কোনও ধরণের বিক্ষোভ বরদাশত করা হবে না, এমন একটি বার্তাই শিয়াদের দিতে চায় সৌদি সরকার। সৌদি সরকারের কৌশল দেখে মনে হচ্ছে, ২০১১ ও ২০১২ সালের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে লক্ষ্যে সম্ভাব্য বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।’
২০১৬ সালে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সৌদি সরকার৷ এর জের ধরে ওই অঞ্চলে ইরান দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে৷ তবে আলগোমামের বেলায় সেটি ঘটবে না বলে মনে করছেন স্টাইনব্যর্গ৷তার ধারণা, ‘‘ইরানের পক্ষ থেকে এ রকম বড় কোনও পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে মনে করি না।’
দেশবিদেশ /২৬ আগস্ট ২০১৮/নেছার
Posted ৯:৫৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৬ আগস্ট ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh