নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৮
স্বর্গ থেকে মর্ত্যে এসেছিলেন ‘মা’। মায়ের আমন্ত্রণকে স্মরণিয় করতে তাই কার্পণ্য ছিলোনা ভক্তদের। পাঁচ দিন মায়ের আরাধনার সাথে চলেছে আনন্দ উল্লাস। বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বপ্রধান এই উৎসবে সামিল হয়েছিল অন্য ধর্মের মানুষ। দুর্গা পূজা যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন।
ঘোটকে আমন্ত্রিত ‘মা’ কৈলাসে যাবেন দোলায় চড়ে। আবার এক বছর পর মর্ত্যে আসবেন। ভক্তদের শোক সাগরে ভাসিয়ে যাচ্ছেন ‘মা’। মায়ের আমন্ত্রণ এবং গমণ রচনা করেছে এক আনন্দ-বেদনার মহাকাব্য। যার স্বাক্ষী হয়ে রইল বঙ্গোপসাগর।
দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হলো কক্সবাজারে। শহরের লাবণি পয়েন্টের সৈকত সংলগ্ন সাগরেই বিসর্জন দেয়া হলো প্রতিমা। এই উপলক্ষ্যে গতকাল সৈকতে জড়ো হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ।
প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে লোকে লোকারন্য হয়ে উঠে। মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় সমুদ্র সংলগ্ন বালিয়াড়ি। পূজারি, ভক্ত, দর্শনার্থী,পর্যটকসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মিলন পরিণত হয় মহামিলনে। যেন এক অসাম্প্রদায়িক মিলনোৎসব । ঢাক-ঢোল,কাঁসরের তালে আরতির বাদ্য বাজনায় ‘মা দুর্গার জয়’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে সৈকত। বিসর্জস মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত প্রতিমা সাগরে নিরঞ্জন করেন ভক্ত-পূজারিরা।
বিজয়া দশমি উপলক্ষ্যে দুপুর থেকে লাবণি পয়েন্ট সংলগ্ন সৈকতে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঢাকা এবং কক্সবাজারের শিল্পীদের গানের পাশাপাশি চলে একক নৃত্য। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটি আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি রন্জিত দাশ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংসদ-সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংসদ-সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলাপ্রশাসক মো: কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট) জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজার জেলা জাসদের সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ নজিবুল ইসলাম প্রমুখ।
সৈকতের বৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেছেন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে দেশের বৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন উৎসবকে ঘিরে মানুষের সম্প্রীতি আর উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে বাংলাদেশ শান্তি সম্প্রীতির দেশ। কক্সবাজার সৈকতের এই উৎসব সাম্প্রায়িক সম্প্রীতির মহামিলন উৎসব। এই প্রতিমা বিসর্জন উৎসবের অসাম্প্রাদায়িক চেতনাকে সারা বিশে^ ছড়িয়ে দিতে হবে।
চলতিবছর বান্দরবান জেলার নাইক্ষংছড়ির প্রতিমাসহ কক্সবাজার জেলার অর্ধশত প্রতিমা সমুদ্রে বিসর্জন দেয়া হয়। হাজার হাজার ভক্ত শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিসর্জন মন্ত্রের মাধ্যমে মা দুর্গাসহ অন্যান্য দেব-দেবীর প্রতিমা বঙ্গোপসাগরে নিরঞ্জন করেন।
Posted ১:২৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh