নুরুল করিম রাসেল, টেকনাফ অফিস | বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
দেশের পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান আকর্ষনীয় স্থান প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। সেন্টমার্টিনের নাম শুনেননি এমন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তাইতো দেশ বিদেশের সৌন্দর্য প্রিয় ও ভ্রমণ পিপাসু মানুষ গুলো প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে দল বেঁধে কেউ বা স্বপরিবারে ঘুরতে আসেন সেন্টমার্টিন দ্বীপে। আর যারা একবার দ্বীপ ভ্রমণ করেছেন তারা আবারও আসতে চান এখানে, এমনই মায়াবী সৌন্দর্য এই দ্বীপের। কিন্তু বর্তমানে দ্বীপের ভাঙ্গন, যাতায়াতের একমাত্র জেটিটির বেহাল দশা পরিবেশগত নানা হুমকির মুখে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। তাই সংশ্লিষ্টরা মনে করেন সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বাঁচিয়ে রেখে পর্যটন বিস্তারে দরকার সমন্বিত পরিকল্পনা।
১৯৯০ সালের পরে পর্যটন আকর্ষনীয় স্থান হিসাবে ধীরে ধীরে সেন্টমার্টিনের নাম ছড়িয়ে পড়ে। তখন শীত মৌসুম কিছু কিছু পর্যটক দ্বীপ ভ্রমণের জন্য আসা শুরু করেন। কাঠের ট্রলারে প্রথম প্রথম পর্যটকরা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ শুরু করলেও ২ হাজার সালের পর জাহাজ চলাচল শুরু হলে পর্যটকদের আগমন বেড়ে যায়। বর্তমানে পর্যটন মৌসুম এলে ৮ থেকে ১০টি জাহাজ পর্যটকদের নিয়ে সেন্টমার্টিন আসা যাওয়া করে থাকে। পর্যটকদের রাত্রী যাপনের সুবিধার্তে দ্বীপে গড়ে উঠেছে শতাধিক আবাসিক হোটেল কটেজ।
তবে অতিরিক্ত পর্যটক ভ্রমণ, আইন অমান্য করে গড়ে উঠা একের পর পাকা ভবণ ও পরিবেশ বিরোধী কর্মকান্ড সেন্টমার্টিনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পরিবেশবিদরা। তাই একনই সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহন না করলে দ্বীপের অস্থিত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করেছেন দ্বীপের বাসিন্দাসহ সংশ্লিষ্টরা।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা পর্যটন ব্যবসায়ী এম কেফায়েত উল্লাহ খান জানান, ১৯৯৯ সালের দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হলেও এ পর্যন্ত সরকার দ্বীপে অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য কোন কাজকর্ম সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করেনি। ফলে নীতিমালাহীন দীর্ঘ ২৮ বছরের মধ্যে দ্বীপে লোকসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ইতিমধ্যে অনুমতিবিহীন ও অপরিকল্পিতভাবে অনেক অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। নির্মাণ করা হয়েছে সরকারী ও বেসরকারীভাবে বহুতল ভবণ। গড়ে উঠেছে শতাধিক আবাসিক হোটেল রিসোর্ট। সেই সাথে দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হিসাবে স্থান করে নিয়েছে। এমতবস্থায়, কোন প্রকার উচ্ছেদ-উৎখাত ও পর্যটক বন্ধ বা রাত্রিযাপন বন্ধের নীতিমালায় না গিয়ে পর্যটন আগমনের পাশাপাশি একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে দ্বীপের মূল সমস্যা ও সম্ভাবনাময় চিহ্নিত করে সেন্টমার্টিন দ্বীপ রক্ষার আবেদন জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, প্রতি বছর লাখো পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে আসেন। কিন্তু দ্বীপের একমাত্র জেটির বর্তমানে করুন হাল বিরাজ করছে। একমাত্র জেটিটি কখন ভেঙ্গে পড়ে তা শংকিত দ্বীপবাসী। এছাড়া গত কয়েক বছর যাবত দ্বীপের ভাংগন শুরু হওয়ায় এর অস্তিত্ব রক্ষা নিয়েও আতংকিত দ্বীপ বাসী। তাই তিনি মনে করেন পর্যটনের স্বার্থেই দ্বীপ রক্ষা করা প্রয়োজন সর্বাগ্রে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান জানান, পর্যটন মৌসুম শুরুর আগেই জেটি মেরামত সহ দ্বীপের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের জন্য জেলা প্রশাসন বরাবরে সুপারিশ প্রেরনের প্রক্রিয়া চলছে যাতে আগত পর্যটকদের কোন অসুবিধা না হয়।
দেশবিদেশ /১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮/নেছার
Posted ১:২৮ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh