বৃহস্পতিবার ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>
Advertisement Placeholder

সেন্টমার্টিনের দ্বার খুলেছে আজ, জাহাজ চালাবেন না মালিকরা

তারেকুর রহমান   |   শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   50 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

সেন্টমার্টিনের দ্বার খুলেছে আজ, জাহাজ চালাবেন না মালিকরা

দীর্ঘ নয় মাস পর শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। পরিকল্পনা ছিল, কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ও বার-আউলিয়া নামে দুটি জাহাজ পর্যটকদের নিয়ে দ্বীপটিতে যাবে। তবে, শেষ মুহূর্তে মালিকপক্ষ এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।

সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘‘ট্যুরিজম বোর্ডের সফটওয়্যার এখনো চালু হয়নি। আবার দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার নিয়মে পর্যটক পাওয়া যাবে না। এ কারণে ১ নভেম্বর থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাবে না।’’

তিনি জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে জাহাজ চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় প্রায় নয় মাস পর দ্বীপটি উন্মুক্ত হলেও পুরো নভেম্বর মাসে পর্যটকদের দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসতে হবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে রাত্রিযাপনের সুযোগ পাবেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- বিআইডব্লিউটিএ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌ যানকে সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের অনুমতি দিতে পারবে না। টিকিট ক্রয় করতে হবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে। প্রতিটি টিকিটে থাকবে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড; কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে কেবল দিনের বেলায় ভ্রমণের অনুমতি থাকবে, রাতে থাকা নিষিদ্ধ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সীমিত পরিসরে রাত্রিযাপন সম্ভব হবে, আর ফেব্রুয়ারিতে সম্পূর্ণভাবে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটকই দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন।

সেন্টমার্টিনের নাজুক পরিবেশ রক্ষায় একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়া বনে প্রবেশ বা ফল সংগ্রহ ও বিক্রয়, কাছিম-পাখি-প্রবালসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইক বা অন্য কোনো মোটরচালিত যান চলবে না। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকজাত সামগ্রী- যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের বোতল-বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সেন্টমার্টিন বাজার সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “সেন্টমার্টিন কক্সবাজার শহর থেকে অনেক দূরে। আসতে-যেতে দিনের পুরো সময়টা চলে যায়। তাই রাত্রিযাপন ছাড়া পর্যটক এখানে আসবে না। বর্তমানে আমরা ক্ষতির মুখে জীবনযাপন করছি।”

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, “দ্বীপের অর্থনীতি এখন প্রায় পঙ্গু। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্রলার, দোকান সবখানেই নেমে এসেছে অচলাবস্থা। স্থানীয় মানুষের জীবিকা পুরোপুরি পর্যটননির্ভর। এখন তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আমরা দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার পক্ষে, তবে জীবিকার দিকটাও যেন সরকার বিবেচনায় নেয় এটাই আমাদের মিনতি।”

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “দ্বীপে মোটরযান নিষিদ্ধ ও পর্যটক নিয়ন্ত্রণে কড়া নজরদারি থাকবে। দ্বীপে পর্যটক পরিবহনের জন্য নৌযানগুলোকে অনুমতি নিতে হবে। স্থানীয়দের জন্য অনুমতির দরকার নেই। পরিবেশ রক্ষায় এ পদক্ষেপ জরুরি।”

ডিবিএন/জেইউ। 

Facebook Comments Box

Comments

comments

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম

যোগাযোগ

প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত

মোবাইল : ০৩৪১-৬৪১৮৮। বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন 01870-646060

ই-মেইল: ajkerdeshbidesh@yahoo.com