দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক | শনিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকদের নিয়ে জাহাজ আসছে বাংলাদেশে। আগামী ২৭শে জানুয়ারি আন্তর্জাতিক পর্যটকবাহী জাহাজটি খুলনার মোংলা বন্দরে নোঙর করবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক পর্যটন রুটে যুক্ত হচ্ছে। নৌ-বাণিজ্য দপ্তর চট্টগ্রামের প্রধান কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে সমুদ্রভিত্তিক দুটি রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি পায় বাংলাদেশ। এরপর ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে দু’দফায় আন্তর্জাতিক পর্যটক নিয়ে দুটি জাহাজ আসে বাংলাদেশে। দুই বছরের মধ্যে সব প্রস্তুতি সমপন্ন করে আগামী ২৭শে জানুয়ারি একটা জাহাজ আসার তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছি।
তিনি বলেন, শিপিং এজেন্ট চিঠি দিয়ে আমাদের জাহাজ আসার শিডিউল জানিয়েছে। চিঠিতে বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং জাহাজের আনুষঙ্গিক কাজ দ্রুত সমপন্ন করতে অনুরোধ করা হয়েছে। জাহাজটি যেখানে-যেখানে নোঙর করবে এবং যেসব চ্যানেলে যাতায়াত করবে সেখানকার নিরাপত্তা দেব আমরা। সেই চ্যানেলে জাহাজটির চলাচলের উপযোগিতা আছে কি-না সেটাও আমরা আগে থেকে জানিয়ে দেব। সূত্রমতে, সিলভার ডিসকভার ২৬শে জানুয়ারি ভারতের চেন্নাই থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। বিশাখাপত্তম বন্দর, ভারতের গোপালপুর, প্যারাদ্বীপ হয়ে খুলনার মোংলা বন্দরে পৌঁছবে জাহাজটি। অন অ্যারাইভল ভিসা নিয়ে আসা বিদেশি পর্যটকদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সমপন্ন হবে মোংলা বন্দরে। মোংলা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ শেষে মহেশখালী পৌঁছাবে। সেখান থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে বাংলাদেশ ত্যাগ করে পর্যটক নিয়ে মিয়ানমার যাবে জাহাজটি।
এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দুই দফায় প্রথমে ৯১ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬ জন পর্যটক নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল জাহাজটি। সেবারও পর্যটকদের সুন্দরবন থেকে কক্সবাজারের মহেশখালী নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শিডিউলে তিন পার্বত্য জেলা ভ্রমণের কথাও ছিল। তবে, ২০১৬ সালের ১লা জুলাই ঢাকার হোলি আর্টিজানে নৃশংস জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিত মাথায় রেখে সরকারের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এবার পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রমণের বিষয়টি শিডিউলে রাখা হয়নি।
সিলভার সি-গ্রুপের এ দেশীয় এজেন্ট সেভেন সিজ শিপিং লাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আকবর বলেন, বিলাসবহুল জাহাজটিতে পাঁচতারকা মানের হোটেলের সব সুবিধা রয়েছে। ১২০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার সিলভার ডিসকভার জাহাজে ৯৬ জন ক্রু রয়েছেন। জাহাজে সব যাত্রীর আন্তর্জাতিক মানের বিলাসবহুল স্যুট ও কেবিনে থাকা, জাহাজের রেস্টুরেন্টে খাওয়া, একই সঙ্গে সুইমিং পুল, বারবিকিউসহ সব সুবিধা রয়েছে। যেসব পর্যটক আসবেন তারা পাঁচতারকা হোটেলে থাকা কিংবা ভালো খাওয়ার জন্য এখানে আসবেন না। তারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে চান। এজন্য সুন্দরবন ও মহেশখালী বেছে নেয়া হয়েছে। জাহাজটির পানির নিচে গভীরতা কম হওয়ায় সেটি সরু চ্যানেলেও অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে বলে জানান আলী আকবর।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে দুই দফায় আসা বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে সরকার প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়েছিল। এবার এর পরিমাণ আরো বাড়বে। রাজস্ব প্রথমবার যা পাওয়া গেছে, টাকার অঙ্কে তা খুবই সামান্য। কিন্তু যেসব পর্যটকরা বাংলাদেশের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছেন, তারা নিজ নিজ দেশে গিয়ে সেটা প্রচার করবেন। এভাবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়বে। এতে পর্যটন শিল্প বিকশিত হবার বিশাল সুযোগ থাকছে।
Posted ৯:৫০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh