সাইফুল ইসলাম | রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮
কক্সবাজার পৌরসভার বাহারছড়া এলাকার দিনমজুর মো. রফিক উদ্দীন। সারদিন শহরে রিক্সা চালান। রোজগার হয় প্রায় ৫০০ টাকা। এরই মধ্যে থেকে রিক্সা মালিকের বাড়া চলে যায় ১২০ টাকা। দিনের শেষে বিভিন্ন খরচ মিটিয়ে হাতে থাকে ২শত’ ৬০ টাকা। এ টাকা দিয়ে চালাতে হয় ৬ সদস্যের সংসার। এতোদিন কোনভাবে চলেছিলো বর্তমানে সংসার চালাতে টানা হেচঁড়া মধ্যে পড়েন মো. রফিক উদ্দীন। তিনি বলেন, প্রতিদিন আমার সংসার চাল লাগে সাড়ে ৩ কেজি। বর্তমানে বাজারে খুচরা চাল কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা ধরে।
এখন পরিবারের সদস্যেদের আনু যোগাতে সাড়ে ৩ কেজি চাল কিনতে হচ্ছে ১৭৫ টাকায় । বাকী টাকা দিয়ে সবজি বাজারে গিয়ে কিনবো নাকি অন্যান্য সামগ্রী কিনবো। ফলে সংসার চালাতে খুব কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। একই কথা জানান, চাকরীজীবি মো. রফিক। তিনি বলেন, শুধু সবজি নয়, সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি। বাজারে পর্যাপ্ত সবজির মজুদ থাকলেও দিনদিন বেড়েই চলছে সবজিসহ অন্যান্য জিনিসের দাম। কিন্তু সম্প্রতিকালে বাজারে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। গেল রমজানে সবজি-সহ নিত্যপণ্যের দাম মোটামুটি স্বস্তি থাকলেও সপ্তাহ পর থেকেই সবজির দাম দুই থেকে তিনগুন বেড়েই চলছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। রমজান মাসের চেয়ে প্রতিকেজি সবজির দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজিও পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে দামের কমতি নেই বাড়তে আছে। বাজার করতে আসা মানুষের মনে স্বস্তি ফিরছে না। বিশেষ করে নি¤œআয়ের মানুষজন খুবই অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে, সাথে মধ্যবিত্তরাও।
শহরের বড় বাজার, বাহারছড়া বাজার, রুমালিরছড়া বাজারসহ বেশ কিছু বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রমজানের পর হঠাৎ সবজির দাম এভাবে বেড়ে যাবে তা কল্পনাও করেনি তারা। পর্যায়ে তারপরেও সবজির দাম বেশি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম তাই বাজারে সবজির দাম কমছে না। জেলায় নতুন করে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার কারণে সবজির দাম কমার সম্ভবনা নেই বলে মনে করেন বেশির ভাগ ব্যবসায়ীরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে শহরের কানাই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ টাকার নিচে কোন সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। রমজান মাসের তুলনায় প্রতিকেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকাই বেড়েছে। বন্যা ও বৃষ্টির কারণে ক্ষেত-খামার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম বাড়ছে বলে দাবী বিক্রেতাদের। ক্রেতাদের দাবি, রমজান মাসে জেলা প্রশাসনের নিয়মিত বাজার মনিটরিং থাকায় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পূন্যের দাম চড়া দামে বিক্রি করতে পারেনি।
রমজান মাস শেষ হওয়ার সাথে সাথে নিত্যপণ্যে দাম ২/৩ গুন বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি বরবটির দাম ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৭০ টাকা, কাকরল ৬০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, ঝিঙ্গে ৫০ টাকা, কইলা ৫০ টাকা, তিতকরলা ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কচুরমূখী ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা, গাঁজর ১০০ টাকা ও মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বাজারে। এ ছাড়াও বাজারে চালসহ নিত্যপন্যের দাম দ্বিগু বিক্রি হচ্ছে। বৃহত্তর রুমালিয়ারছড়া বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ছলিম উদ্দীন ভুলু বলেন, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে ক্ষেত-খামার নষ্ট হওয়ায় সবজির দাম বাড়ছে। তবে রমজান মাসের চেয়ে প্রত্যেকটি সবজির দাম বেড়েছে বাজারে। তাই উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সবজির দাম বাড়ছে। কানাই বাজারে আসা মো. সালাম নামের এক ক্রেতা বলেন, রমজান মাসে সব ধরণের নিত্যপণ্যের দাম মোটামুটি স্বস্তি ছিলো। বাজারে টাঙ্গানোও ছিলো দ্রব্যমূল্যের নির্ধারিত তালিকা। রমজান শেষ হওয়ার পর পরেই বড় বাজারে দ্রব্যমূল্যের তালিকা টাঙ্গানো থাকলেও অন্যকোন বাজারে দ্রব্যমূল্যের তালিকা নেই। তাই ব্যবসায়ীরা নিজেরাই নিজেদের মনগড়া ব্যবসা করে যাচ্ছে। রমজানের মতো বাজার মনিটরিং করার দাবি প্রশাসনের কাছে।দেশবিদেশ/০৮ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh