বুধবার ২৯শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম
অভিবাসন নিরুৎসাহ করতে ‘অমানবিকতা’

সন্তানদের রেখেই মা-বাবাকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক   |   সোমবার, ২৫ জুন ২০১৮

সন্তানদের রেখেই মা-বাবাকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

চোখে আমেরিকার স্বপ্ন নিয়ে আট মাসের মেয়ে আর স্ত্রীসহ হন্ডুরাস থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন এভার সিয়েরা। মেক্সিকো হয়ে চুপিসারে সীমান্ত পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চেয়েছিলেন তাঁরা। ফলাফল হয়েছে ভয়াবহ। সপরিবারে ধরা পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে। স্ত্রী-কন্যাকে টেক্সাসের আটক কেন্দ্রে রেখে দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়েছে সিয়েরাকে। এখন ব্যাকপ্যাকে করে মেয়ের ছোট্ট জুতা জোড়া নিয়ে দিন পার করছেন।
অভিবাসন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রত্যক্ষ ফসল সিয়েরা। তবে কারো কারো ভাগ্য আরো খারাপ। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ শিশুকে আটক কেন্দ্রে রেখে মা-বাবাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে এমন ঘটনা ঘটছে ভূরি ভূরি। মানসিকভাবে এসব মা-বাবা একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
তবে এই মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনাগুলো ট্রাম্প প্রশাসনকে স্পর্শ করছে না। যদিও অভ্যন্তরীণ ও রাজনৈতিক চাপে গত বুধবার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে মা-বাবার কাছ থেকে সন্তানদের বিচ্ছিন্ন কর্মকাণ্ড বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে এ নির্দেশ দেওয়ার আগেই দুই হাজার ৩০০ শিশুকে তাদের মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়ে গেছে। বলা হচ্ছে, এর মধ্যে ৫০০ শিশু তাদের মা-বাবার কাছে ফিরে গেছে। গত শনিবার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দপ্তর এক ফ্যাক্ট শিটে এ তথ্য জানায়। তারা আরো বলে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার আটক থাকা সব শিশুর অবস্থান সম্পর্কে অবহিত রয়েছে। পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে। তবে কী প্রক্রিয়ায় কাজ হচ্ছে এবং কত দ্রুত পুনর্মিলন সম্ভব হবে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। যেসব আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা জানিয়েছেন, কাজ করতে গিয়ে তাঁরা গোলকধাঁধায় ঘুরছেন।
সিয়েরা জানিয়েছেন, স্ত্রী ও মেয়েকে খুঁজতে তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করবেন। তবে এমন কোনো পরিকল্পনা আর করতে চান না ৩৩ বছর বয়সী বেনিইয়ামিন রেমুন্ডো। যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশ গুয়াতেমালায় ফেরত পাঠানো হয়েছে তাঁকে। তবে পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে রেখে আসতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। পরে এক আত্মীয় ও আইনজীবীর মাধ্যমে ছেলেকে খুঁজে বের করেন তিনি। ছেলে এখন ওই আত্মীয়র হেফাজতে। রেমুন্ডো আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্তত তাঁর ছেলেকে আশ্রয় দেবে। তিনি বলছিলেন, ‘খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে, আমি আর কখনো আমার ছেলেকে দেখতে পাব না।’ তবে এতসব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পরও যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে অভিবাসীদের ঢল কমেনি।<
এদিকে ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটিক আইন প্রণেতারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসওম্যান জ্যাকি স্পেইয়ার আটক কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনের পর বলেন, মা-বাবার কাছ থেকে আলাদা করা কিছু শিশুর বয়স পাঁচেরও কম। তাদের কামরা বা খাঁচায় রাখা হয়েছে। এদের অনেকেই খুব কান্নাকাটি করছে।
আরেক কংগ্রেসওম্যান বারবারা লি এই ব্যবস্থাকে বর্বর হিসেবে অভিহিত করেন। ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগোর আটক কেন্দ্রের সামনে গত শনিবারও প্রায় দেড় হাজার লোক এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে।
তবে এসব বিক্ষোভ নিয়ে যে ট্রাম্প খুব বেশি উদ্বিগ্ন নয় তা তাঁর গত শনিবার কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা চান সীমান্ত খুলে দিতে। যাদের আটক করা হয়েছে তাদেরও মুক্তি দিতে চায়। আটকরা কেমন মানুষ তাতে কিছু আসে যায় না। তারা খুনি হতে পারে, চোর-ডাকাত হতে পারে। ডেমোক্র্যাটরা মনে করেন, এই লোকগুলোকে দেশে রাখা যায়। তবে আমি তা মনে করি না।’
সূত্র : এএফপি।

Comments

comments

Posted ৭:০৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৫ জুন ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

জয়গান
জয়গান

(1333 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com