মঙ্গলবার ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

লাকিংমে চাকমার লাশ মর্গে: মৃতদেহ কে পাবে- বাবা না স্বামী ?

  |   রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০

লাকিংমে চাকমার লাশ মর্গে:  মৃতদেহ কে পাবে- বাবা না স্বামী ?

নির্বাণ পাল
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পড়ে আছে চাকমা কিশোরীর লাশ। কে নেবে এ লাশ । মামলা গড়িয়েছে কক্সবাজার বিজ্ঞ আদালতে। ১৩ নভেম্বর দুপুরে মেযেটির বাবা হাসপাতাল চত্বরে বুক চাপড়িয়ে কাঁদছিলেন আর দাবী করছিলেন “জীবিত মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে দিতে পারেননি অন্তত মৃত মেয়েকে ফেরৎ দেন। লাশটি বুকে জড়িয়ে নিয়ে যাই আর স্ব সম্মানে সৎকার করি ধর্মীয় মতে”। সন্তানের লাশের এ আকুতিভরা কান্না ভারী করে উঠছিল হাসপাতালের পরিবেশ। অন্যদিকে মেয়েটি ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেছে একজন মুসলিমকে। তাই লাশটি মেয়ের বাবাকে দেয়া যাচ্ছেনা, আবার বাবার অভিযোগের কারনে লাশটি স্বামীকেও দেয়া যাচ্ছেনা। বাবার দাবি তার মেয়ে নাবিলা। তাই এই বিয়ে বৈধ নয়। মেয়েটিকে জোরপূর্বক বিয়ে করা হয়েছে।
হাসপাতালে বসে কথা হয় বাবা লালা অং চাকমার সাথে। তিনি জানান তারা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার শিলখালী চাকমা পাড়ার বাসিন্দা। তার মেয়ে লাকিংমে চাকমা শাপলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। চলতি বছরের জানুয়ারির পাঁচ তারিখ আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। অপহরণ করে সিএনজি যোগে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা দেখে ফেলে এবং ধাওয়া দেয়। পরর্বতীতে আমরা জানতে পারি অপহরণকারীরা ছিল মো: আতাউল্লাহ, মো: ইয়াসিন, মো: ইসা ও মো: আবুইয়া সহ আরো চার – পাঁচ জন। জন্মসনদ অনুসারে অপহরণেরদিন আমার মেয়ের বয়স ছিল ১৪ বছর ১০ মাস। ঐদিন মামলা করার জন্য টেকনাফ থানায় গেলে তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার সাহা আমাদের মামলা না নিয়ে সাধারণ ডাইরী করার পরামর্শ দেন। পুলিশ কোন সাহায্য না করায় চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য মামলা করি। থানা -পুলিশ- আদালত কেউ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে দিল না। মেয়েকে কত জায়গায় খুঁজলাম পেলাম না। অবশেষে অপহরণের ১১ মাস ৬ দিন পর ১০ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা পুলিশ আমাকে ডাকে সদর হাসপাতাল মর্গে লাশ শনাক্ত করার জন্য। আমি আমার মেয়েকে শনাক্ত করি কিন্তু পুলিশ আমাকে লাশ দেয় না। তারা বলে আমার মেয়েকে নাকী অপহরণকারী মো: আতাউল্লাহ ( পিতা নুর মোহাম্মদ, মাথাভাংগা, বাহারছড়া, টেকনাফ) ধর্মান্তর করে বিয়ে করেছে। এ কেমন অবিচার। আমার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে গেল, জোর করে ধর্মান্তর করল, জোর করে নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে করল এবং অত্যাচার করে মেরে ফেলল। এখন যখন মেয়ের মৃত দেহ পেলাম তখন লাশের জন্য বিচার কেন।
লাকিংমের লাশ নিয়ে কথা হয় কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক সেলিম উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন অপমৃত্যু হলে হাসপাতাল কতৃপক্ষ তদন্তের জন্য আমাদেরকে ডাকে। এ মামলায়ও আমাদের ডেকেছে কিন্তু ভিন্ন ধর্ম দুপক্ষ লাশ দাবী করায় বিস্তারীত তদন্তের জন্য এডি এম আদালত আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে। আমরা তদন্ত রিপোর্ট আদালতের কাছে জমা দিয়েছি। লাশ কে পাবে সে রায় দেবে আদালত।

Comments

comments

Posted ১১:২৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com