রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া | রবিবার, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯
প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সহায়ক পরিবেশ তৈরি না করায় গত বছরের নভেম্বরে পূর্ব নিধারিত সময় সাপেক্ষে এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকার নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের মাধ্যমে আবারো রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকার জোরালো ভুমিকা রাখবে, এমটি আশায় বুক বেধেঁছিল রোহিঙ্গারা। এ সময়ে সেখানকার বিদ্রোহী আরকান আর্মি দমনে নিরাপত্তাবাহীনি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ায় মিয়ানমারে অস্থির পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারনে প্রত্যাবাসন তো দুরের কথা রোঙ্গিা সংকট আরো ঘনিভূত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের নতুন পুরাতন বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতার সাথে আলাপ করা হলে তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের বুচিডং এলাকায় বসবাসরত স্বজনদের উদৃতি দিয়ে কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান রশিদ আহম্মদ জানান বিদ্রোহী আরকান আর্মি দমনের নামে মিয়ানমার সেনা বিজিবি বুচিডংয়ের বিভিন্ন এলাকায় গ্রাম গঞ্জে হানা দিয়ে গোলা বর্ষনসহ তল্লাশী অভিযান, ধরপাকর ও ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে জালিয়ে দিচ্ছে। এতে সেখানকার বিদ্রোহী খ্যাত মুরং জাতি গোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গারাও মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। উপায়হীন এসব রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এদেশে চলে আসতে তাদের মতামত যাচাই করছে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকট আরো ঘনিভূত হচ্ছে বলে দাবী করে ঐ রোহিঙ্গা নেতা বলেন এ মুহুর্তে সরকার চাইলেও প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হবে না। যেহেতু মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের যাতে ফিরিয়ে নেওয়া না যায় সে জন্য বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করছে।
কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সেক্রেটারী মো: নুর জানান তারা ২০১২ সালে সিমান্তের নাফ নদী পার হয়ে প্রায় হাজার রোহিঙ্গা কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের পাশে বনভূমির জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এ পর্যন্ত ও তারা সরকারি তালিকাভূক্ত হয়নি। যে কারনে রেজিষ্ট্রাড রোহিঙ্গাদের মত সুযোগ সুবিধা তারা পাচ্ছেন না। এমতবস্থায় মিয়ানমারের মইগ্যাদের একঘোয়ামী মনোভাবের জবাব দিতে সরকারকে আরও জোরালো ভুমিকা রাখতে হবে। কুতুপালং রেজিষ্ট্রাড ক্যাম্পের মাজি ফজল করিম জানান তারা ১৯৯২ সালে এদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। দীর্ঘ ২৮ বছর রেজিষ্ট্রাড শরনর্থী হিসেবে কুতুপালংয়ে বসবাস করলেও রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরে যেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। সে জানায় বর্তমানের সেনা অভিযানে আরকান আর্মির পাশাপাশি রোহিঙ্গারা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এমতবস্থায় তারা স্বদেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি কাল্পনিক বলে দাবি করছেন। রোহিঙ্গা নেতারা বলেন মিয়ানমার কুট কৌশলের আশ্রয় নিয়ে একএক সময় একএক অজুহাত খাড়া করে প্রত্যাবাসন বিলম্বিত করছে। উপরোন্ত রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা বাস্তুভিটা সাবার করে সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে বলে তারা বিভিন্ন সূত্রে জেনেছেন।
উখিয়া উপজেলা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহ্ববায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন প্রধান মন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা নীরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে রাষ্ট ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি এবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জোড়ালো ভুমিকা রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যেহেতু তিনি আন্তজাতিক বিশ্বকে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি বুজাতে সক্ষম হয়েছেন। যে কারনে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করছে।
Posted ১২:৩৯ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh