রফিক উদ্দিন বাবুল,শফিক আজাদ,উখিয়া | সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করছে ভারত। রোহিঙ্গাদের সংকটের শুরু থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল ভারত সরকার। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত ভারত সরকার ভারত বাংলাদেশে পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ^াস দিয়ে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ইতিপূর্বে আরো ২ দফা ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছিল ভারত। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উখিয়া বালুখালী-১২ নাম্বার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গত এক বছরে বাংলাদেশ মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশ এই মানবিক আচরণ ভারত ও সংশ্লিষ্ঠ সকলের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিবেশী, বন্ধু এবং অংশীদার হিসেবে, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিশাল ঢলে সৃষ্ট ত্রাণ প্রয়োজনীয়তা পুরনে বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে প্রক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া’কে ভারত সরকারের তৃতীয় পর্যায়ের ত্রাণ সহযোগিতা ১ মিলিয়ন লিটারের বেশি সুপার কেরোসিন তেল এবং ২০ হাজার কেরোসিন স্টোভ হস্তান্তর করা হয়েছে।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ২০১৭সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য অপারেশন ইনসানিয়াৎ এর আওতায় ত্রাণ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এসময় প্রথম দফায় ২০১৭সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ৫৩টন খাদ্য সামগ্রী পাঠায় ভারত। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল, চাল,ডাল,চিনি,লবন,বিস্কুট, গুড়া দুধ, নুড্স, সাবান, মশারী ও তেল। চলতি বছরের মে মাসে ১০৪ মেঃটন গুড়া দুধ, ১০২ মেঃ টন সুটকি মাছ, ৬১ মেঃ টন, শিশু খাদ্য, ৫০ হাজার রেইন কোর্ট এবং ৫০হাজার গাম বোট।
ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসেনর লক্ষ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সুসজ্জিত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ২৫০টি বাড়ী নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এছাড়াও মিয়ানমারের মংডু জেলার ক্যিং সং নামের একটি গ্রামে ৫০টির বাড়ী ভিত্তি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এ বাড়ী গুলো নির্মাণের উদ্দশ্যে হল উৎঘাত হওয়া ব্যক্তিদের বাংলাদেশ থেকে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের সহায়তা করা।
পরিশেষে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ভারত প্রয়োজনের সময় সবর্দা বাংলাদেশের পাশে থাকছে। আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের ভিত্তি বিশ^াস, বন্ধুত্ব ও শহীদদের আত্মত্যাগ, যা যে কোন কৌশলগত সম্পর্কের উর্ধ্বে। বন্ধুত্বের এই চেতনায় আমরা তাদের বোঝা হালকা করতে এগিয়ে এসেছি এবং ভবিষ্যতেও এ সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি হাফিজ আহমেদ মজুমদার, মহাসচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন প্রমূখ। দুপুর দেড় টার দিকে ত্রাণ বিতরণ শেষে ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। সেখানে আশ্রিত নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সাথে কথা বলেন তিনি। পরে ভারতের হাইকশিনার কুতুপালং হিন্দু শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করে দুপুর ২টার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন।
দেশবিদেশ /১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮/নেছার
Posted ১১:৫৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh