সংবাদ বিজ্ঞপ্তি | বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট | 44 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
কক্সবাজারের রামুতে প্রজ্ঞামিত্র বন বিহারে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসবের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হলো চলতি বছরের কঠিন চীবর দান। মঙ্গল ও বুধবার (৪ ও ৫ নভেম্বর) দুই দিন ব্যাপী উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে এ দানোৎসব সম্পন্ন হয়।
দানোৎসবের সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপ-সংঘরাজ, চট্টগ্রামের পটিয়া মৈতলা সদ্ধর্মজ্যোতি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শাসনভাষ্কর ভদন্ত শাসনপ্রিয় মহাথেরো।
প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন চট্টগ্রামের মিরশরাই ধর্মকীর্তি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, বিশ্ব নাগরিক ড. ধর্মকীর্তি মহাথেরো, রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ কে শ্রী জ্যোতিসেন মহাথেরো।
মুখ্য আলোচকের ধর্মদেশনা করেন আমেরিকা ব্রহ্মবিহার ও ধ্যান কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ ড. সত্যানন্দ মহাথেরো, এম এ প্রজ্ঞামিত্র মহাথেরো । উদ্বোধকের ধর্মদেশনা করেন বিমুক্তি বিদর্শণ ভাবনা কেন্দ্র ও একশ ফুট সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধ মুর্তির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক করুনাশ্রী মহাথেরো, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহারের অধ্যক্ষ শীলমিত্র মহাথেরো। দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষদের মধ্যে ধর্মদেশনা করেন-শীলরত্ন মহাথেরো, ধর্মানন্দ মহাথেরো, জ্ঞানমিত্র মহাথেরো, ধর্মরত্ন মহাথেরো, শরণপ্রিয় মহাথেরো, শীলভদ্র মহাথেরো, গ্রজ্ঞাতিলক থেরো, প্রজ্ঞাপ্রিয় থেরো, বোধিপ্রিয় থেরো প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন রামু উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বরূপ চৌধুরী, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফ হোসাইন, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমদ প্রিন্স,প্রিয়রঞ্জন-উষারাণী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক টিপু বড়ুয়া।
রাঙ্গামাটির একদল নারী তাঁত শিল্পী তুলা থেকে সুতা, সুতায় রঙ করা, কাপড় বুনা, সেলাই করে। দুর্লভ এ কঠিন পূণ্যকর্ম ২৪ ঘন্টার মধ্যে সম্পন্ন করে প্রস্তুত করে চীবর (বস্ত্র)। বুদ্ধের ধর্মীয় বিধান মতে এ বস্ত্রকেই রূপান্তর করা হয় কঠিন চীবরে।
মহতী এ দানকর্ম উৎসবমুখর ভাবে উদযাপিত হয়েছে মৈত্রী প্রদীপ, বদ্ধাংকুর ভদন্ত প্রজ্ঞামিত্র মহাথেরো’র স্মৃতিধন্য রামু উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারে। দুই দিন ব্যাপী দানোৎসবে দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ নরনারীর অংশ গ্রহনে বৌদ্ধ মহাসম্মেলনে পরিনত হয়।
ঊৎসবের প্রথম দিন মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) পবিত্র ত্রিপিটক থেকে মঙ্গল সূত্র পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। পরে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে বুদ্ধ ধর্মীয় প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যায় চীবর বুনন উদ্বোধন, রাতে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট কীর্তনীয়া হৃদয় বড়ুয়া ও জয় বড়ুয়ার অংশ গ্রহনে বুদ্ধ কীর্তন পরিবেশনা।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোরে ত্রিপিটক থেকে সুত্রপাঠ ও চীবর বুনন সম্পন্ন, বুদ্ধপুজা, সকালে ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, উপগুপ্ত ভন্তের মন্দির উৎসর্গ, সংঘদান, অষ্টপরিস্কারদান, ধর্মসভা, অতিথি ভোজন, বিকালে কঠিনচীবর ও কল্পতরু সহকারে মঙ্গল শোভাযাত্রা, দানোত্তম কঠিন চীবর দানসভা, বৌদ্ধ ধর্মীয় বৃত্তি প্রদান, চীবর পরিক্রমা, কঠিন চীবর ও কল্পতরু উৎসর্গ ও রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের অধ্যক্ষ, পুজনীয় উপ-সংঘরাজ, একুশে পদকে ভুষিত, প্রয়াত পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরো ও উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বন বিহারের অধ্যক্ষ প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র মহাথেরো ও প্রয়াত সারমিত্র মহাথেরো সহ গ্রামের পরলোকগত জ্ঞাতিগণের পারলৌকিক নির্বাণ শান্তি কামনা এবং বাংলাদেশ সহ বিশ্বের মঙ্গল কামনায় পূণ্যদান।
সন্ধ্যায় দেশের খ্যাতিমান বৌদ্ধ কীর্তন শিল্পী জুসি বড়ুয়ার কীর্তন পরিবেশনার মাধ্যমে মহতী দানানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার অধ্যক্ষ শীলমিত্র মহাথেরো, উত্তর মিঠাছড়ি বড়ুয়া পাড়ার সমাজপতি(সর্দার) বাবুল বড়ুয়া, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার পরিচালনা কমিটির কার্যকরি সভাপতি তরুণ বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক টিটু বড়ুয়া দুই দিন ব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসবে উপস্থিত দেশবরেণ্য প্রাজ্ঞ-পন্ডিত ভিক্ষু সংঘ এবং সকল অতিথিবৃন্দ সহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
ডিবিএন/জেইউ।
.
এ বিভাগের আরও খবর