শফিক আজাদ,উখিয়া | মঙ্গলবার, ০৩ জুলাই ২০১৮
মিয়ানমার সেনা,বিজিপি ও রাখাইন উগ্রবাদীর বর্বর নির্যাতনের মূখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে আগ্রহী। তবে তাদের পূর্ণ নাগরিকত্বের মর্যাদা দিয়ে ফিরিয়ে নিতে হবে মিয়ানমারকে। মঙ্গলবার উখিয়ার কুতুপালং মধুরছড়া,লম্বাশিয়া, ময়নারঘোনা ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতার সাথে কথা এসব বক্তব্য জানা গেছে।
মধুরছড়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা খালেদ হোসেন বলেন, সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসে ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের নেতৃত্বে আসা শীর্ষ দলের নেতৃবৃন্দদেরকে রোহিঙ্গারা সে দেশের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরে জানান, মিয়ানমার সরকার পূর্ণ নাগরিকত্ব, স্বাধীন ভাবে চলাফেরা, ছেলে-মেয়েদের পড়া লেখাসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করলে এদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা স্ব উদ্যোগে মিয়ানমারে ফেরত যাবে।
সে আরো বলেন, নাগরিকত্ব, স্বাধীনভাবে চলা-ফেরা ও কর্মের নিশ্চয়তা না হওয়া পর্যন্ত তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে আগ্রহী নয়। লম্বাশিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মোঃ রশিদ জানায়, জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রাখাইনে শোষণ-বঞ্চনার কথা শোনে তাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন এবং যেকোনও মূল্যে তাদের নাগরিকত্বসহ অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন। এর ফলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে স্বদেশে যাওয়ার আশার আলো দেখা দিয়েছে। বালুখালী রোহিঙ্গা রোহিঙ্গা নেতা আবু তাহের জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ^ ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে তারা মহা খুশি দাবী করে বলেন, বিশে^র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দুই প্রতিষ্ঠান প্রধানের বক্তব্যে রোহিঙ্গারা অত্যান্ত সন্তোষ্ট।
রোহিঙ্গারা মনে করছেন এবার হয়তো তাদের ভাগ্য খুলতে পারে। রোহিঙ্গা সমস্যার জন্য মিয়ানমারই দায়ী জাতিসংঘের মহাসচিবের এমন বক্তব্য শতভাগ সত্যি। রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে স্বদেশে ফিরে নেওয়ার উনার আহবানকে আমরা স্বাগত জানাই। ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা মোঃ আলম তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানায়, বিশে^র শীর্ষ দুই নেতার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সফরে রোহিঙ্গাদের মাঝে দেখা দিয়েছে আনন্দ উদ্দীপনা।
এই দুই নেতার আগমনকে রোহিঙ্গারা ভাল চোঁখে দেখছেন। এবং তারা এও মন্তব্য করছেন এবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেও ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা আসার পর থেকে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিগণ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এই দুই বিশ^ নেতাদের আগমনকে আমরা ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছি। তবে আশা করছি এবার কোন একটা হতে পারে। উল্লেখ্য যে, গত বছরের ২৫ আগষ্ট মিয়ানমারের জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে এসে উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি ছোট বড় রোহিঙ্গা শিবিরে গড়ে তুলেছে। এসব আশ্রয় শিবিরে নিবন্ধিত হয়েছে ১১ লাখ ১৮হাজার ৫৫৮জন রোহিঙ্গা। তৎমধ্যে উখিয়ার ২০ শিবিরে রয়েছে প্রায় ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।
দেশবিদেশ /০৩ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১১:৩৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh