শনিবার ১লা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

মালয়েশিয়ায় ২৫০ বাংলাদেশির ‘সেকেন্ড হোম’

দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক   |   বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

মালয়েশিয়ায় ২৫০ বাংলাদেশির ‘সেকেন্ড হোম’

মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস গড়ার কর্মসূচি ‘মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোমে (এমএম২ এইচ)’ অংশ নেওয়া ৩ হাজার ৭৪৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে ২৫০ জন সেখানে বাড়িও কিনেছেন। ওই প্রকল্পে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা যেমন তৃতীয় অবস্থানে আছেন, তেমনি বাড়ি কেনার ক্ষেত্রেও একই অবস্থানে তাঁরা।

মালয়েশিয়া সরকারের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। দেশটি বিভিন্ন সময় মোট কতজন বিদেশি নাগরিক দ্বিতীয় নিবাস কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন, তা প্রকাশ করলেও বাড়ি কেনার তথ্য এই প্রথম প্রকাশ করল। এতে দেখা যায়, চীন ও যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক লোক সেখানে বাড়ি কিনেছেন।

বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে অর্থ নিয়ে মালয়েশিয়ায় বাড়ি কেনার কোনো সুযোগ নেই। এ দেশের যাঁরা সেখানে বাড়ি কিনেছেন, তাঁরা মূলত টাকা পাচার করেছেন।

মালয়েশিয়া সরকার ২০০২ সালে দ্বিতীয় নিবাস কর্মসূচি চালু করে। এর আওতায় মালয়েশিয়ার ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রেখে অন্য দেশের একজন নাগরিক দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদি বসবাস ও অন্যান্য সুবিধা পান। তাঁরা সেখানে বাড়িও কিনতে পারেন। যদিও মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে যে বিদেশিরা সেখানে প্রচুর বাড়ি কিনে ফেলছেন।

মালয়েশিয়ার স্থানীয় সরকার ও গৃহায়ণ উপমন্ত্রী রাজা কামারুল বাহরিন শাহ রাজা আহমাদ ১ নভেম্বর দেশটির সংসদে জানান, মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন দেশের মোট ৪ হাজার ৪৯৯ জন নাগরিক বাড়ি কিনেছেন। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন চীনের নাগরিকেরা। তাঁরা কিনেছেন ১ হাজার ৬৬৪টি বাড়ি। এর পরের অবস্থান যুক্তরাজ্যের, সেখানকার নাগরিকেরা কিনেছেন ৩৫৭টি। আর তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরেই আছে যথাক্রমে ইরান (২১৭টি), জাপান (২০৮টি), পাকিস্তান (১৯২টি), সিঙ্গাপুর (১৭৫টি), অস্ট্রেলিয়া (১৪৭টি), দক্ষিণ কোরিয়া (১২৭টি) ও যুক্তরাষ্ট্র (১১৫টি)। বাড়ি কেনা বাবদ বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা সেখানে কত অর্থ ব্যয় করেছেন, তা উল্লেখ করেননি মালয়েশীয় মন্ত্রী।

মোট বাংলাদেশি ৩৭৪৬ জন
দ্বিতীয় নিবাস কর্মসূচিতে বাংলাদেশিরা অংশ নেওয়া শুরু করেন ২০০৩ সাল থেকে। মালয়েশীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর ৩২ জন বাংলাদেশি এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৭৪৬ জন বাংলাদেশি এতে অংশ নিয়েছেন। অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ বাড়ি কিনেছেন, সেই সংখ্যা ২৫০।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম দুই বছর ১০০ জনের কম করে বাংলাদেশি দ্বিতীয় নিবাসে অংশ নেন। এরপর থেকে সংখ্যাটি ২০০ জনের ওপরে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় নিবাসে অংশ নিয়েছিলেন ২০১২ সালে, ৩৮৮ জন। প্রকাশিত তথ্য থেকে দেখা যায়, নির্বাচনের আগের বছরগুলোতে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে যায়। ২০১৫ সালে যেখানে ২০৫ জন বাংলাদেশি এ সুবিধা নিয়েছেন, সেখানে ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৮৩ জনে। সর্বশেষ প্রকাশিত ২০১৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত হিসাবে আট মাসে মালয়েশিয়া দ্বিতীয় নিবাসে অংশ নিয়েছেন ২৫৩ জন বাংলাদেশি।

পাচারে কারা, খোঁজ নেই
মালয়েশিয়ায় কারা টাকা পাচার করছেন, তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন সংস্থা অনুসন্ধানের ঘোষণা দিলেও কার্যত কোনো ফল দেখা যায়নি। এমনকি বাংলাদেশে বিভিন্ন মেলায় অংশ নিয়ে এবং পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন দেশে নাগরিকত্ব নিতে আগ্রহীদের খোঁজা হয়।

দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার চাইলে মালয়েশীয় সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে বাংলাদেশিদের তথ্য পেতে পারে। কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এটা দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনে সই করেছে। এর আওতায় তথ্য চাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা টাকা কিন্তু সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত আনা হয়েছিল। একজনের ক্ষেত্রে সম্ভব হলে অন্যদের ক্ষেত্রে কেন নয়?

Comments

comments

Posted ১০:১৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com