বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিযোগিতার ১নং নিয়মে কক্সবাজার জেলার সকল ছাত্র-ছাত্রী রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে বলা হলেও ‘উখিয়া-টেকনাফ ব্যতীত’ উল্লেখ করা হয়েছে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কক্সবাজার মহিলা কলেজে অধ্যায়নরত উখিয়া-টেকনাফের কোন শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন না। এনিয়ে মাদকবিরোধী রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারার খবরে ফুঁসিয়ে উঠেছে উখিয়া-টেকনাফের জন সাধারণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অনেকের প্রশ্ন- উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীরা মাদক বিরোধী রচনায় অংশ নিতে না পারার কারণ কী? তারা কি মাদকের সাথে জড়িত নাকি উখিয়া-টেকনাফে জন্ম নিয়েছে বলে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত উখিয়া উপজেলার এক ছাত্রী জানান, ‘কলেজ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে আমরা যারা উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থী তারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবো না। কলেজে জেলার সব প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে। আমাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক রহুল আমিন জানান, ‘গত ৮ মে আমি নোটিশটি পাবলিশ করেছি। সরকার উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত উপজেলাকে বিশেষ জোন ঘোষণা করে সেখানে আলাদা সহকারী পরিচালকের অফিস স্থাপন করেছে যেটি টেকনাফ অবস্থিত। সেটিও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অফিস। সেখানে মুলত উখিয়া-টেকনাফের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব। তাই কক্সবাজার থেকে উখিয়া টেকনাফের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।’
টেকনাফ অফিসের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘মাদক বিরোধী রচনা প্রতিযোগিতায় টেকনাফ অফিস আলাদা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। কক্সবাজার অফিস আগে প্রকাশ করায় সেখানে উখিয়া-টেকনাফের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটা নিয়ে বিভ্রত হওয়ার কিছু নেই। শিগগিরই এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এবং উখিয়া টেকনাফের শিক্ষার্থীরা রচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।’
তবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ডিএনসি এবং কলেজের দেওয়া অজুহাত কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা৷ এটি স্পষ্টত বৈষম্যমূলক আচরণ। এই ধরনের আয়োজন এবং আচরণের ফলে উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীদের প্রতি অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘৃণা-বিদ্বেষ জন্মাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে ভবিষ্যতের কর্ণধারদের সমতার শিক্ষা দিবে সেখানে এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয় বলে উল্লেখ করেন তারা।