বৃহস্পতিবার ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম
কৌশলে ক্যাম্প ছাড়ছে রোহিঙ্গারা

মাছের ড্রামে রোহিঙ্গা পাচার 

রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া     |   সোমবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

মাছের ড্রামে রোহিঙ্গা পাচার 
উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত স্বপরিবারে ক্যাম্প থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই মালয়েশিয়া পাড়ি জমানোর উদ্দেশ্য নিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ছে, কিছু কিছু রোহিঙ্গা উন্নত জীবন যাপনের আশা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত আতœীয় পরিজনের আহ্বানে ক্যাম্প ছাড়ছে। আবার এমন কিছু রোহিঙ্গা আছে যারা শহর বন্দরে গার্মেন্টস বা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে স্থায়ী বসবাসের আশা নিয়ে ক্যাম্প ত্যাগ করছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্যাম্প পালানোর প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও প্রতিরোধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। চলতি মাসে মাছ সরবরাহে ব্যবহৃত ড্রামের ভিতরে অবস্থান নিয়ে সড়ক পথে পালানোর সময় সেনা বাহিনী ও পুলিশের পৃথক অভিযানে ১০ জন রোহিঙ্গা আটক হয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক এক শ্রেণির রোহিঙ্গা দালাল মালয়েশিয়া পাড়ি জমানোর জন্য রোহিঙ্গাদের উদ্ধুদ্দ করার অভিযোগ উঠেছে। গত মাসের প্রথম সাপ্তাহে  বিজিবি সদস্য টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ চরাঞ্চল থেকে ১১ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে হস্তান্তর করেছে। এসব রোহিঙ্গাদের তথ্যে উঠে এসেছে তারা দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ক্যাম্প ত্যাগ করেছিল। কুতুপালং ক্যাম্পের ১২নং ব্øকের কর্মরত এনজিও সংস্থা  ইপসার এক কর্মকর্তা রবিবার ১৩ জানুয়ারী সকালে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করে বলেছেন, বেশ কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে যেকোন সময়ে ক্যাম্প ত্যাগ করতে পারে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইপসার ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। 
কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা রশিদ আহমদ রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প পালানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কিছু কিছু রোহিঙ্গা আছে যারা এ পর্যন্তও তালিকাভুক্ত হয়নি। এমনকি তারা সরকারি ভাবে প্রদত্ত ত্রাণ সামগ্রীও পায়নি। এসব রোহিঙ্গারা জীবন জীবিকার তাগিদে ও উন্নত জীবন যাপনের আশা করে ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছে। তিনি বলেন, সীমিত একটি জায়গায় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস। এসব রোহিঙ্গারা কখন কে কোথায় যাচ্ছে তার কোন হদিস নেই। তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা শহরের গার্মেন্টস অথবা বিভিন্ন কাজের অজুহাতে ক্যাম্প ছাড়ছে। অনেকেই বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী বসবাসরত আতœীয় স্বজনে আহ্বানে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প পালানোর কোন সুযোগ নেই। যেসব রোহিঙ্গারা নতুন করে এসে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে তারাই মূলত বিভিন্ন সু-কৌশলে ক্যাম্প ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাচ্ছে।
উখিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, সড়ক পথে ৪টি পুলিশ চেকপোষ্ট দিয়ে বিশাল রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয় তথাপিও যেসব রোহিঙ্গা পালাতে গিয়ে ধরা পড়ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধূরী জানান, বর্তমান সরকারের দক্ষতায় যদি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয় তাহলে ক্যাম্প পালানো রোহিঙ্গাদের খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প পালানো প্রবণতা প্রতিরোধে আরো স্বোচ্ছার হওয়ার আহ্বান জানান।

Comments

comments

Posted ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com