বৃহস্পতিবার ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>
Advertisement Placeholder

মহেশখালীতে আদালত ও কউকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভবন নির্মাণ, আইনের বাস্তবায়ন জরুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   210 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

মহেশখালীতে আদালত ও কউকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভবন নির্মাণ, আইনের বাস্তবায়ন জরুরী

মহেশখালী পৌরসভার গোরকঘাটা চরপাড়া এলাকায় বাসিন্দা মৃত আবদুল হাকিমের পুত্র জাফর আলম আদালতের নিষেধাজ্ঞা এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)-এর নোটিশ উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে নিয়মানুযায়ী পর পর তিনটি নোটিশ প্রদান করা হয়। তারপরও তিনি কর্ণপাত না করে ভবনের কাজ চালিয়ে আইনভঙ্গ করে যাচ্ছে।

তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ইলিয়াছের, তিনি জানান, তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে জোরপূর্বক দখল করে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে জাফর আলম গং।
অথচ উক্ত জমি নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মহেশখালী আদালতে মামলা (মোকাদ্দমা নং সিআর/৫৮৬/২৪) চলমান রয়েছে এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞাও বলবৎ আছে। তবুও জাফর আলম ও তার সহযোগীরা পেশি শক্তির জোরে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই বহুতল ভবন নির্মাণ করছে।

কউক সূত্রে জানাযায়, গত ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে অথারাইজ অফিসার মোহাম্মদ রিশাদ উন নবী স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানো নোটিশ (স্মারক নং: ২৫.৪৭.২২০০.০১০.৯৯.০০১.২০.১৩৮৭) প্রদান করে অননুমোদিত নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। নোটিশে স্পষ্টভাবে বলা হয়, নির্মাণাধীন ভবনের কোনো অনুমোদিত নকশা নেই এবং এটি ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২-এর ৩বি ধারা লঙ্ঘন করছে। নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে কেন ভেঙ্গে ফেলা হবে না মর্মে কারণ দর্শানো হয় ওই চিঠিতে। ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২-এর ৩বি ধারা অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হয়। এই নির্দেশ অমান্য করার পর ৭ জানুয়ারি ২৫ তারিখে আবারও নোটিশ প্রদান করা হয়। যাতে উল্লেখ করা হয়েছে, উপরোক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, বর্ণিত সূত্রের মাধ্যমে আপনার অননুমোদিতভাবে নির্মিত ভবনটির কাজ/ব্যবহার বন্ধ রাখার বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তৎপরিপ্রেক্ষিতে আপনি/আপনারা কোনরুপ জবাব প্রদান করেননি বরং ভবনের ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন। উল্লেখিত ইমারত নির্মাণ আইনের ৩-বি (৩) ধারা অনুযায়ী পুনঃ তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট রেকর্ড, রিপোর্ট ও পুনঃপরীক্ষা করে কর্তৃপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে এই ধারণা পোষণ করে যে, আপনি/ আপনারা সত্য/সত্যই আলোচ্য অননুমোদিত/ব্যতিক্রমিভাবে ভবন নির্মাণ করেছেন।অতএব, সংশ্লিষ্ট অননুমোদিত। ব্যতিক্রমিভাবে নির্মিত ভবনটি ভাঙ্গিয়া অপসারণ করার জন্য আপনাকে/আপনাদেরকে বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে যে, অত্র নোটিশ প্রাপ্তির দিন হতে ০৭ (সাত) দিনের মধ্যে কার্যটি সম্পন্ন করতে হবে। নতুবা অত্র কর্তৃপক্ষ ইমারত নির্মাণ বিধির ৭ (১) ধারা অনুযায়ী উক্ত অননুমোদিত। ব্যতিক্রমিকভাবে নির্মিত ইমারত ভাঙ্গিয়া দেয়ার। অপসারণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং ভবনটি ভাঙ্গার যাবতীয় খরচ আপনার/আপনাদের নিকট হতে আদায় করা হবে।

কউক ও স্থানীয় সূত্র জানান, চূড়ান্ত নোটিশকেও তোয়াক্কা না করে নির্মাণ কাজ বন্ধ না করে দ্রুতগতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ রয়েছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা, কউকের নির্দেশনা এবং উকিল নোটিশও উপেক্ষা করছে জাফর আলম গং।

কউকের আইন অমান্য করে বাড়ি নির্মাণকারী জাফর আলমের সাথে ফোনে কথা হলে, নিজের পরিচয় অস্বীকার করে। কোন উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কউকের অথরাইজড অফিসার মোহাম্মদ রিশাদ উন নবী বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সরজমিন তদন্ত করে জাফর আলমকে আইনানুযায়ী চূড়ান্ত নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। তবে তিনি এখনো কউকের নকশা ও অনুমোদন দেখাতে পারেনি। এরপর চূড়ান্ত নোটিশ মতে শীঘ্রই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানতে চাইলে কউক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন বলেন, সবকিছু দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কউক বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। স্থানীয় জনগণ ও সচেতন মহলের মতে, মহেশখালী এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, অনুমোদন বিহীন, অপরিকল্পিত বিল্ডিং গড়ে উঠলে ভবিষ্যতে মহেশখালীও হবে অপরিকল্পিত। তা কউকের মাস্টারপ্ল্যান ভেস্তে যাবে। পাশাপাশি নোটিশ মতে আইনের বাস্তবায়ন জরুরী যাতে কেউ গায়ের জোরে আইন অমান্য করে বাড়ি নির্মাণ করতে না পারে।

ডিবিএন/জেইউ। 

Facebook Comments Box

Comments

comments

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম

যোগাযোগ

প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত

মোবাইল : ০৩৪১-৬৪১৮৮। বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন 01870-646060

ই-মেইল: ajkerdeshbidesh@yahoo.com