নুরুল করিম রাসেল, টেকনাফ | বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৯
বুধবার মধ্যরাত (১২টার পর) থেকে উঠছে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা। ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে গত ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। ফলে সারাদেশের ন্যায় এসময় টেকনাফ উপকূলের জেলেরা সাগরে মাছ শিকার থেকে বিরত ছিল। বুধবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে তাই এখানকার জেলেদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে।
বুধবার দুপুরে টেকনাফ মহেষখালীয়া পাড়া, খোংকার পাড়া, লম্বরী মৎস্য ঘাট পরিদর্শনে দেখা গেছে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেরা তার জাল নৌকা সাজিয়েছেন নতুনের মতো করে। ইঞ্জিন চালিত জেলে নৌকা গুলোকে নতুন করে রং করে রঙ্গিন করে তোলেছেন। আবার ছেড়া-ফাটা জাল মেরামত করে নিয়েছেন। জেলেদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
মহেষখালীয়া পাড়া মৎস্য ঘাটে কথা হয় জেলে মো. রফিকের সাথে। তিনি জানান, ভোররাতে এই ঘাট দিয়ে ৪০টির মতো নৌকা সাগরে মাছ শিকারে যাবে। তবে তারা কেউ ইলিশ শিকারে যাবেন না।
জেলে ইউনুচ বলেন, দীর্ঘদিন সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকায় মাছ শিকার করতে পারেন নাই, ফলে জেলেদের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারনের মাঝেও এর প্রভাব পড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আনা মাছ বাজারে চড়া দামে মাছ কিনতে হয়েছে।
নুর আহমদ মাঝি বলেন, এখানকার জেলে নৌকা গুলোতে ৬জন শ্রমিক কাজ করে। এতোদিন তারা বেকার ছিল। ফলে কষ্ট করে সংসারের জীবিকা নির্বাহ করেছেন। এখন সাগরে যেতে পারবে জেলেদের মাঝে উৎসবের আনন্দ বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত টেকনাফে প্রায় ৮ হাজারের মতো নিবন্ধিত জেলে ও দুই হাজারের বেশী ইঞ্জিন চালিত নৌকা রয়েছে। যারা মূলত নদী ও সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এদিকে গত আড়াই বছর যাবৎ মাদক পাচার প্রতিরোধের জন্য নাফ নদীতে জেলেদের মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ শিকার বন্ধ থাকলেও দেশের অন্যান্য স্থানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করায় বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে ৫ হাজার ২২৪ জেলেকে জেল এবং ৬ হাজার ১৯৩ মামলা হয়েছে বলে মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।
১৯৫০ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০) অনুযায়ী প্রতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে একটি নির্দিষ্ট সময় ইলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গত বছর এ সময় ছিল ৭-২৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
চন্দ্র মাসের ভিত্তিতে প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে এ বছর আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমার দিন এবং এর আগে ৪ ও পরের ১৭ দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয়।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।
Posted ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh