বৃহস্পতিবার ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম
৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল, এসটিপি আছে ৪ টিতে

ভয়াবহ দূষণের মুখে পর্যটন শহর

দীপক শর্মা দীপু   |   বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

ভয়াবহ দূষণের মুখে পর্যটন শহর

কক্সবাজারের পর্যটন এলাকায় ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে। কিন্তু স্যুয়ারেজ ট্টিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) রয়েছে মাত্র ৪ টি হোটেলে। যার কারনে ভয়াবহ দূষনের মধ্যে পড়েছে পর্যটন এলাকা।
জেলা প্রশসানের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, কক্সবাজারে এসটিপি রয়েছে ৩ টি পাঁচ তারকা ১ টি ৩ তারকা হোটেলে। এছাড়া এসটিপিবিহীন তারকা মানের আরো ৮ টি হোটেল রয়েছে । কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায় মাঝারি, ছোট , বড় আবাসিক হোটেল রয়েছে ৫ শতাধিক। এর মধ্যে শুধু পর্যটন শহরে রয়েছে সাড়ে ৩ শতাধিক হোটেল। তিনি জানান, তারকা মানের হোটেলকে নিজস্ব এসটিপি করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে অন্যান্য সব হোটেলের জন্য সেন্ট্রাল এসটিপি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন,পরিবেশ আইন না মেনে কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় গড়ে উঠেছে শত শত আবাসিক হোটেল, বহুতল ভবন, স্টুডিও এপার্টমেন্ট । কক্সবাজার শহরের সাড়ে ৩ শতাধিক আবাসিক হোটেলকে স্যুয়ারেজ টিট্রমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) স্থাপনের নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ হোটেলে এসটিপি করা জায়গা নেই। তাই জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ , কক্সবাজার পৌরসভা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে সেন্ট্রাল এসটিপি করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। তিনি আরো বলেন, এসটিপি না থাকায় ভয়াবহ পবিবেশ দুষণের কবলের পড়েছে পর্যটন জোন। পয়:নিষ্কাষনের ময়লাপানি আসে নালায় । যার কারনে পর্যটন এলাকায় থাকা নালা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
সেভ দ্য ন্যাচার এর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসাইন জানান, দেশবিদেশের পর্যটকরা নির্মল পরিবেশে ভ্রমন করতে কক্সবাজারে আসেন। কিন্তু নানা কারনে এখানকার পরিবেশ দুষিত হওয়ায় পর্যটকদের মাঝে কক্সবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টি হচ্ছে। হোটেলে এসটিপি স্থাপন না করায় পর্যটন শহরের পরিবেশ দুষিত হয়েছে। পর্যটকদের নাকে মুখে হাত দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ভয়াবহ দুষনে পড়েছে পর্যটন জোন। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি দুর্গন্ধের শহরে পরিণত হবে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুনাইদ জানান- এসটিপি স্থাপনতো দুরের কথা এখনো পরিবেশ আইন না মেনে যেভাবে স্থাপনা তৈরি হচ্ছে । এতে বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠছে পুরো শহরটি। তাই বর্তমান পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে নির্মানাধিন ভবনগুলোর স্থাপনা নির্মান বন্ধ করে দেয়া প্রয়োজন। আর যারা আগে নির্মান করেছে তাদের স্থাপনা পরিবেশবান্ধব করতে পুন: সংস্কার করা জরুরি। সেই সাথে এসটিপি বাধ্যতামুলক করা দরকার। তিনি আরো বলেন, পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করে। তাদের মল মুত্র এসটিপি ছাড়াই সাধারণ টয়লেট রিং এ জমা হয়। সেখান থেকে সরাসরি যায় নালায়। আর নালা থেকে সরাসরি যাচ্ছে স্থানীয় বাঁকখালী নদীতে। আর বাকঁখালী নদী হয়ে যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে।
এসটিপি না থাকার কারণে পর্যটন, এলাকা, নদী ও বঙ্গোপসাগর দুষিত হচ্ছে। তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়া প্রয়োজন। তা না হলে পর্যটকরা যেমন বিমুখ হবে তেমনি স্থানীয়দের জন্য বসবাস অনুপোযোগি হয়ে পড়বে এই কক্সবাজার শহর।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, দ্রুত সময়ে সেন্ট্রাল এসটিপি করা হবে। তা না হলে দুষনের মুখে পড়বে পর্যটন শহর কক্সবাজার শহর। তবে বর্তমানে যে সব নালা নর্দমা রয়েছে তা নিয়মিত পরিস্কার করা হচ্ছে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার জানান , কক্সবাজারে দ্রুত এসটিপি স্থাপনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক দ্রুত সময়ে এসটিপি স্থাপন করা হবে।
বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তিন স্তর বিশিষ্ট তার উর্দ্ধ হোটেলে নিজস্ব এসটিপি স্থাপন বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ আবাসিক হোটেল, মোটেল, কটেজ, গেষ্ট হাউস এর জন্য সেন্টাল এসটিপি করতে বলা হয়েছে। এসটিপি স্থাপন করা না হলে সংশ্লিষ্ট হোটেলের বিরুদ্ধে জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, এসটিপি স্থাপনের বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সাবজারে ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেছেন, কক্সবাজারে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। তারকা মানের অসংখ্য হোটেল হয়েছে। এখন এসটিপি না থাকায় পরিবেশ প্রতিবেশ দূষনের মুখে পড়েছে। এতে পর্যটকরা বিমুখ হতে পারে। তাই কক্সবাজারে উন্নয়নের সাথে সাথে সেন্ট্রাল এসটিপি স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে।

Comments

comments

Posted ৩:০৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

দশ বছর পর
দশ বছর পর

(1543 বার পঠিত)

সেই মা সেই ছবি
সেই মা সেই ছবি

(1157 বার পঠিত)

(1139 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com