| সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮
বাংলাদেশের প্রথম নিজস্ব যোগাযোগ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ঘটনায় অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরামে তিনি এই কথা বলেন। একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকেও মহাকাশ অভিযানে সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
গত ১১ মে সফল উৎক্ষেপণ হয় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের। বাংলাদেশের প্রথম এ স্যাটেলাইট মূলত একটি কমিউনিকেশন ও ব্রডকাস্টিং স্যাটেলাইট। দুর্যোগের সময় টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত হলে স্যাটেলাইটটি দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের কাজে আসবে। ফলে দুর্যোগেও দেশের সব মানুষকে রাখা যাবে যোগাযোগের আওতায়। দেশের যেসব এলাকায় ক্যাবলের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি, স্যাটেলাইটটির মাধ্যমে সেখানেও স্থাপন করা যাবে যোগোযোগ।
সোমবারের ওই অনুষ্ঠানে পম্পেও বলেন, ‘মার্কিন কোম্পানিগুলো সত্যিকার অর্থে ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদার জাতিগুলোকে মহাকাশে পৌঁছাতে সাহায্য করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সৃষ্টিশীল কোম্পানিগুলোর অন্যতম স্পেসএক্স সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বপ্রথম নিজস্ব যোগাযোগ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে।’ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিজের বিদেশ নীতির বিষয়ে বলতে গিয়ে পম্পেও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই মাইল ফলকের অংশীদার হতে পেরে এবং চূড়ান্ত সীমান্তের মুক্ত ও স্বচ্ছ ব্যবহারকে সমর্থন করতে পারায় যুক্তরাষ্ট্রও গর্বিত।’
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয় না জানিয়ে পম্পেও বলেন, ‘তারপরও আমরা এমন পরিবেশ তৈরি করি যাতে মার্কিন কোম্পানিগুলো সফল হয়, স্থানীয় যোগাযোগের উন্মেষ ঘটে ও দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব তৈরি হয়।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন বজায় রাখার আমেরিকান লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসায়িক সম্পর্ক রেখেছে।’ যেখানেই যুক্তরাষ্ট্র থাকবে, সেখানেই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল থেকে ভারতের পশ্চিম উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোনও ভুল করবেন না। কারণ অঞ্চলটি যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ নীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নের সঙ্গে মার্কিন জনগণ ও পুরো বিশ্ব জড়িত। তাই ইন্দো-প্যাসিফিক অবশ্যই মুক্ত ও উন্মুক্ত থাকবে হবে।’
মাইক পম্পেও বলেন, ‘গত বছর ভিয়েতনামে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বিভিন্ন জাতির একটি সুন্দর সমাবেশ যেখানে সব দেশ একেকটি তারকা, কেউ কারও উপগ্রহ নয়। আর প্রত্যেকেই একজন মানুষ, একটি সংস্কৃতি, একটি জীবন প্রণালী ও একটি নিবাস।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে ভালভাবে জ্বলে ওঠার জন্য এই সমাবেশে নতুনত্ব ও টেকসই প্রবৃদ্ধি দরকার। আর আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলও এই বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেয়। কৌশলগত নির্ভরশীলতা নয়, যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত অংশীদারিত্বে বিশ্বাস করে।’
এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গভীর করাই পরিষ্কারভাবে আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থ উল্লেখ করে পম্পেও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশনে কোনও জাতিকে বাদ দেওয়া হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমরা যে কারও সঙ্গে কাজ করতে চাই। এই সহযোগিতা আমাদের নাগরিক চাহিদার সর্বোচ্চ মান পর্যন্ত করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে নিজের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য বদ্ধপরিকর। কারণ আমরা চাই আমেরিকানরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সব মানুষের সঙ্গে ২০২০, ২০৩০, ২০৪০ ও আরও পরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভাগাভাগি করে নিবে।’
অনুষ্ঠানে মাইক পম্পেও যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যত ভিত্তিমূলক ডিজিটাল ইকোনমি, শক্তি ও অবকাঠামো খাতের জন্য নতুন ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলারের সহায়তা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির নতুন যুগের শুরু হিসেবেই এই তহবিল গঠন করা হয়েছে।’
দেশবিদেশ /৩০ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১০:৫৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh