দেশবিদেশ রিপোর্ট | শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯
বাঁকখালী নদী দখলদারদের বিরুদ্ধ শীঘ্রই অভিযানে নামছে জেলা প্রশাসন। সাথে থাকবেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, পরিবেশবাদী সংগঠক, সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা। নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন আপষ হবেনা। দখলবাজ যতই শক্তিশালী হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। এমনকি এ বিষয়ে তদবিরকারিদের যেমন পাত্তা দেয়া হবেনা তেমনি কাউকে আন্দোলনের সুযোগও দেয়া হবেনা। বাঁকখালী নদী রক্ষায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গতকাল বৃহষ্পতিবার (১৭ জানুয়ারী) অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত সবাই এ বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেন।
জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, নতুন সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করছে। কক্সবাজারেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে সব বিষয়ে । বাঁকখালী নদী অবশ্যই দখলমুক্ত করা হবে। সরকারের জমি সরকার নিয়ে নেবে। এতে কারো বক্তব্য শুনা হবেনা।
সময় থাকতে দখল ছেড়ে দিতে দখলদারদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলায় দেড়শতাধিক বাঁকখালী নদী দখলদারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রভাবশালীদের উচ্ছেদের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। এখানে কে প্রভাবশালী বা কে অসহায় তা বিবেচনা করা হবেনা। সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দখলবাজ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, শুধুমাত্র অসহায় গরীব বা চুনোপুটিদের উচ্ছেদ করলে সমস্যা সমাধান হবেনা। দখলে থাকতে পারবেনা কোন প্রভাবশালী। এছাড়া প্রথমে ১০-২০ টি উচ্ছেদ করে থেমে গেলেও হবেনা। উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করলে তা শেষ করতে হবে। বাঁকখালী নদী সুরক্ষায় স্থায়ী সমাধানের জন্য কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, কক্সবাজার পৌরসভার ৬২ একর জমি ছিল। এখন ৬২ শতকও নেই। সবাই দখল করে নিয়েছে। একইভাবে বাঁকখালী নদী ও তার ছড়াগুলোও দখল হয়ে গেছে। আগে খাদ্যগুদামের পাশের ছড়ায় বড় বড় নৌকা ভিড়ত এখন ডিঙ্গি নৌকাও ঢুকতে পারেনা। এসব দখলের কারনে এখন পৌরশহরে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
মেয়র মুজিব বলেন, দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লাখ লাখ পৌরবাসীকে। তিনি বলেন, যাদের কারনে পৌরবাসী কষ্ট পাচ্ছে আর বাঁকখালী নদীর বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের উচ্ছেদ করার সময় কারো সুপারিশ বা তদবির চলবেনা। প্রয়োজনে চোখে কালো চশমা দিয়ে উচ্ছেদ করা হবে। যাতে কাউকে চিনতে না হয়।
সভায় আগামি একমাসের মধ্যে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে অভিযান বাস্তবায়নের জন্য প্রস্ততি নেয়া হবে। দখলবাজদের সরিয়ে যেতে উচ্ছেদ অভিযানের দুইদিন আগে মাইকিং করা হবে।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: আফসারুল আফসার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো; মাসুদুর রহমান মোল্লা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সবিবুর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশ্রাব, সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ, কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু। সভায় অন্যান্যের মধ্যে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তাহের ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা জাহেদ সরওয়ার সোহেল সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ২:২৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh