রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া | সোমবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮
উখিয়া বন রেঞ্জের ৮ টি বনবিটের আওতাধীন সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনাঞ্চলের জমিজমা নিয়ে চলছে অবাধে লুটপাট। প্রকৃতি ধ্বংসের অপরাধে পরিবেশ আইনে মামলা করার বাধ্যবাদকতা থাকলেও তা না করে বন সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা শুধু মাত্র চাকুরীর সুবাধে বন আইনে মামলা করে তাদের দায়িত্ব শেষ করার কারনে পার পেয়ে যাচ্ছে জবর দখলকারী চক্র। দায়সারা বন আইনের তোয়াক্কা না করে সরকারি বনভুমিতে স্থায়ী স্থাপনা নির্মান অব্যাহত থাকার ফলে অদুর ভবিষ্যতে বন বাগান সৃজনের মাধ্যমে প্রকৃতিকে ঢেলে সাজানোর অস্থিত্ব খুজে পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়বে। চিরতরে হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র, প্রানীকুলসহ পশুপাখীর অবাধ বিচরন ক্ষেত্র।
উখিয়া বন বিভাগের বিভিন্ন বনবিটের আশির দশকে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল মাবুদের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বনাঞ্চল হিসাবে খ্যাত কক্সবাজারের দক্ষিন বন বিভাগের আওতাধীন সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনাঞ্চলে হাতি, বাঘ ভাল্লুক, হরিণ, বানর, সাপ,বন মোরগ প্রভৃতি বন্য পশুপ্রানীর অবাধ বিচরন ছিল। আশিরদশকের পরে সরকার লট নিলাম কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনার পর থেকে কাঠ পাচারকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। এ চক্রটি বনবিট কর্তা ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে সরকারি বনাঞ্চলের মূল্যবান গাছগাছালি কর্তন পূর্বক পাচার অব্যাহত থাকার কারনে বনভুমির বনাঞ্চল অরক্ষিত হয়ে পড়ে।
পরিবেশবাদী সংশ্লিষ্টরা জানান, রোহিঙ্গাদের বনভুমিতে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি এসব রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবায় নিয়োজিত প্রায় দুই শতাধিক এনজিও সংস্থা উখিয়ার ২০ টি শরণার্থী ক্যাম্পে কাজ করছে। তাদের ও রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনের তাগিদে সরকার নির্ধারিত ৫ হাজার একর বনভুমি জুড়ে গড়ে উঠেছে আশ্রয় শিবির। এনজিওরা তাদের প্রয়োজনে নির্বিচারে বন ভুমির পাহাড় কেটে বিভিন্ন পাকা আধাপাকা স্থাপনা তৈরি করলেও বন ভুমির উপর তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। এ অজুহাতে স্থানীয় একটি ভুমিদস্যু চক্র ও আগে থেকেই বন ভুমি জবরদখল করে থাকা কিছু অসাধু ব্যক্তি স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করে বানিজ্যিক ভাবে বহুতল ভবন নির্মান করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যে কারনে উখিয়ার বন ভুমি অস্থিত্ব সংকটের পাশাপাশি জীববৈচিত্র বিপন্ন হতে চলেছে বলে দাবী করছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্ধুরা।
উপজেলা পরিষদের মাষিক সমন্বয় সভায় নির্বিচারে পাহাড় কাটা ও বনভুমি দখল করে পাকা আধা পাকাসহ বহুতল ভবন নির্মানের উপর বিধিনিষেধ আরোপে গুরুত্বারোপ করে পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাসা ভাড়া বানিজ্য করার জন্য বনভুমি দখল করে যে ভাবে স্থাপনা নির্মান করা হচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে অদুর ভবিষ্যতে উখিয়ায় নতুন করে বন বাগান সৃজনে কোন অস্থিত্ব খুজে পাওয়া যাবেনা। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বনভুমি দখলের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উখিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলেও তিনি দৃশ্যমান কোন এ্যাকশনে যেতে পারেননি। এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী তারিকুর রহমান জানান, সরকারি বনভুমিতে যে কোন ধরনের অবৈধ স্থাপনা নির্মানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Posted ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh