নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৫ নভেম্বর ২০১৮
তীরে এসে তরী ডুবলো এমপি ইলিয়াছের। এমনিতেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। সাধারণ মানুষের ভাষায় স্বপ্নেপ্রাপ্ত ভাগ্যবান এমপি। এ নিয়ে তাঁকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের কটাক্ষের সীমা নেই । সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে চার বছর নয় মাস ধরে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন সংসদ-সদস্যের। ক্ষমতার শেষ মুহূর্তে এসেই ঘটালেন এক তুঘলকি কা-। বদরখালী কলেজে ঘটানো এই কা-ে অবশ্য আইনজীবীর সতর্কতা বার্তা পেলেন এই আইনপ্রণেতা।
মৌলভি হয়ে তিনি নিয়োগ করতে চলেছেন অধ্যক্ষ। আইনিভাবে তাতে কোন সমস্যা নেই। আইনপ্রণেতা হয়ে আইনকে উপেক্ষা করেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ পদে নিজের পছন্দের যোগ্যতাহীন মানুষকে নিয়োগ দিতে করলেন সুপারিশ। এতেই সৃষ্টি করলেন সমস্যার। কোন অদৃশ্য কারণে মুজিবুর রহমানকে বদরখালী কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে সুপারিশপত্র পাঠালেন এমপি ইলিয়াছ ? সেটি কাগজে ছাপার অযোগ্য হলেও মানুষের মুখ বন্ধ করা যাচ্ছে না।
যখন স্বয়ং কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য জয়নাল আবেদীন খাঁন আইনজীবীর মাধ্যমে প্রেরণ করলেন নোটিশ। চলতি বছরের ৮ অক্টোবর তিনি নোটিশটি প্রেরণ করেছিলেন। তবে এতোদিন গোপন থাকলেও গতকাল সেই নোটিশের কপি এসে পৌঁছে দৈনিক আজকের দেশবিদেশ কার্যালয়ে। নোটিশটিতে এমপি ইলিয়াছকে পরোক্ষে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। নিজ পছন্দের অধ্যক্ষকে পদ ত্যাগে বাধ্য করতে হবে তাঁকে। অন্যথায় আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১৬ অক্টোবর বদরখালী কলেজে গ্রহণ করা হয় অধ্যক্ষ পদে চাকরি প্রার্থীদের পরীক্ষায়। অংশগ্রহণকারী ৪ জনের কারো ছিলোনা একটি বেসরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার মতো যোগ্যতা। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলে কলেজ গভর্নিং বডিকে। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে মুজিবুর রহমান নামে এইচএসসি সমমানের একটি টেকনিক্যাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষের নাম প্রস্তাব করেন এমপি ইলিয়াছ। তাঁর চাকরি এমপিওভূক্ত করার ব্যাপারে মতামত ব্যক্ত করেন।
বেসরকারি কলেজ শিক্ষক চাকরি বিধিমালা (সংশোধিত) ২০১৫ অনুযায়ী বেসরকারি একজন কলেজ অধ্যক্ষকে নিয়োগকালীনসময় কমপক্ষে ১৫ বছরের যোগ্যতা থাকতে হয়। কিন্তু মুজিবুর রহমানের ছিলো না সেই যোগ্যতা। পাশাপাশি এমফিল কিংবা পিএইচ.ডি এর মতো গুরুত্বপূর্ণ কোন ডিগ্রিও তাঁর ছিলোনা। বিষয়টি কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের গোচরে আসে। ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গভর্নিং বডির সভায় বিষয়টি আলোচনায় এলে সাময়িক সময়ের জন্য অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কিন্তু এই সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে এমপি ইলিয়াছ তাঁর পছন্দের মুজিবুর রহমানকে অধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। ইতোমধ্যে অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁর নিয়োগ অনুমোদনের জন্য জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও প্রেরণ করেছেন তিনি।
Posted ১:২০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৫ নভেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh