সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও | বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির ঔষধি গাছ-গাছড়া। প্রকৃতিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বনজ-ভেষজ-ঔষধি ও নিত্য প্রয়োজনীয় গাছপালা। এদের অনেকগুলোই আছে ঔষধি ও ভেষজ গুণাগুণ, অপরদিকে রয়েছে ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধতা। কিন্তু অব্যাহতভাবে পাহাড়-গাছ কেটে ফেলায় প্রাকৃতিক বন, একই সাথে দেশিয় প্রজাতি এবং ভেষজ ও ঔষধি জাতের গাছ-গাছালি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। বনবিভাগ নতুন করে বনায়নে ইউক্যালিপটাস আকাশিয়াসহ আগ্রাসী প্রজাতির বিদেশি গাছ স্থান দখল করছে। এতে বন, বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের ক্ষতিছাড়াও ঔষধি গাছ-গাছড়া থেকে রাজস্ব আয় বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। ফুলছড়ি রেঞ্জের সকল বনবিটে বৃক্ষনিধন, কাঠপাচার একটি ভয়াল সমস্যা তেমনি জটিল সমস্যা বনায়নের জন্য পর্যাপ্ত না গাছ লাগানোকে কেন্দ্র করে। বনায়ন কর্মসূচি হাতে নিলেই কোন কাজ হয়না। কোথায় কী ধরণের গাছ লাগাতে হবে সে পরামর্শও দিতে হয় বনবিভাগের বনায়ন কর্মসূচি থেকে।
আগেকার দিনে ফুলছড়িতে ভেষজ গুণাবলী সম্পন্ন প্রচুর লতাগুল্ম দেখা যেত, এখন কিন্তু তেমন একটা দেখা যায় না।
ফুলছড়ি রেঞ্জ সংশ্লিষ্ট নার্সারিসমূহ থেকে জানা গেছে, বর্তমানে দেশিয় প্রজাতির বৃক্ষ এবং ভেষজ গাছ-গাছালির খুবই কম চাহিদা রয়েছে। যেসব গাছপালা বিলুপ্তির আশংকাযুক্ত অবস্থায় রয়েছে তাদের মধ্যে শ্রেণী বিভাগ রয়েছে। কোনটা হয়তো হারিয়ে গেছে, আবার কোনটা হয়তো শুধু বনে হারিয়ে গেছে, কিন্তু হয়তো চাষাবাদে রয়েছে। প্রাকৃতিক বনে বিদেশি গাছ লাগানো হচ্ছে।
কিন্তু পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে এগুলো ক্ষতিকর। বিদেশি গাছ বন্য প্রাণীর জন্য হুমকিস্বরূপ। যেমন ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি গাছ। জমির জন্য ক্ষতিকর, তাই এই গাছ লাগানো সরকারীভাবে বন্ধ আছে। এর বিপরীতে কোন গাছ আমাদের প্রকৃতির জন্য, মানুষের জন্য উপকারী আর লাভজনক সে ব্যাপারে বেশ ক’জন মধ্য বয়স্ক ব্যক্তি তাদের অভিমত জানালেন।
তাদের মতে- আম, কাঁঠাল, কালোজাম, অর্জুন, জারুল, জলপাই, নিম, তেঁতুল, হরিতকি, বহেরা, গর্জন ইত্যাদি। এদের মধ্যে অনেক গাছই রয়েছে ঔষধি বৃক্ষ।
সদরের ঈদগাঁওর আয়ুবের্দিক চিকিৎসক নুরুল আলম বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যেসব আয়ুবের্দিক ও ইউনানী ঔষুধ কারখানা রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত ব্যবসায় যারা জড়িত তারা ভারত থেকে ঔষুধের কাঁচামাল, গাছগাছড়া ও বীজ আমদানি করে। যদি দেশিয় প্রজাতির ঔষধি গাছ-গাছড়া দিয়ে বনায়ন করা যায় তাহলে আমদানি নির্ভর না হয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুর্দ্রা অর্জন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
Posted ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh