শফিক আজাদ,উখিয়া | সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে এদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝুঁকিতে। ভারী বর্ষণ হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। ইতিমধ্যে পাহাড় ধসের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদশে বসবসার করা মিয়ানমারর থেকে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা ১১লাখ রোহিঙ্গা। শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ আবুল কালাম জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানির আশংখা করে অতি ঝুকিপূর্ণ প্রায় ৩৫হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকীতে তেমন কোন ঝুকি না থাকায় আপাতত অন্যত্রে সরানোর পরিকল্পনা নেই। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে বাকীদের মধ্য থেকে ঝুকিপূর্ণদের সরিয়ে নেওয়ার হবে।
গত বছরের ২৫ আগষ্টের পর উখিয়া ও টেকনাফের ৫হাজার একর বনভূমি দখল করে পাহাড়ে ও পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৭লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে বসবাসকারী আরো ৪লক্ষাধিক রোহিঙ্গা সহ ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস এখন উখিয়া-টেকনাফে। বৃষ্টির কারনে বিশেষ করে নতুন অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের জনজীবনে নেমে এসে বিপর্যয়। রাখাইনে বর্মী সেনা,বিজিপি ও রাখাইন উগ্রবাদীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে এসে এবার তাদের বেঁচে থাকার লড়াই প্রকৃতির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি টানা ভারী বর্ষণের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অধিকাংশ পাহাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় গত ৫ দিনে প্রায় অর্ধশত ছোট-বড় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪শতাধিক বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মারা গেছে এক শিশুসহ ২জন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে উখিয়ার কুতুপালংয়ের মধুরছড়া, বালুখালী, ময়নার ঘোনা, জামতলী, থাইংখালী ও টেকনাফের উংচিপ্রাং-এর রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এসব এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেক পাহাড়ে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। মধুরছড়া ১৭নং ক্যাম্পের আশ্রিত রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ, শফিকুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন ধরে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ভয়ে রোহিঙ্গারা ঝুপড়ি থেকে বের হতে পারছেনা।
একই ভাবে কুতুপালং লম্বাশিয়া, ময়নারঘোনা, তাজনিমারখোলা,বালুখালী,শফিউল্লাহকাটায় ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গা পরিবার গুলো চরম আতংকের মধ্যে দিনযাপন করছে বলে সেখানকার রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার দুলাল চন্দ্র দাশ জানান, নি¤œচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের আশে-পাশের এলাকা গুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় পাহাড় ধ্বসের আশংখা করা হচ্ছে। উখিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, অধিকাংশ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পাহাড় কেটে বা পাহাড়ে অবস্থিত।
এসব এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা আছে। সম্প্রতি বৃষ্টির ফলে পাহাড় ধসে পড়ে বেশ কিছু ঘরবাড়ীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, পাহাড় ধসের বেশি ঝুঁকিতে থাকা ঘর চিহ্নিত করে ইতিমধ্যে ৩৫হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকীদেরও অবস্থা বুঝে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
দেশবিদেশ /১৬ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১০:২৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh