দেশবিদেশ রিপোর্ট | শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮
সুকুমার দাশের (৫৩) আনন্দের শেষ নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মঙ্গলের জন্য মন্দিরে গিয়ে এক অধ্যায় গীতা পাঠ করে প্রার্থনা করবেন। সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ূ কামনা করবেন তিনি। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া শুভেচ্ছা স্বরুপ তিন হাজার টাকা পেয়েই পূজা উদযাপনের আনন্দে আতœহারা সুকুমার।
প্রধানমন্ত্রীর পূজার শুভেচ্ছার টাকা পেয়ে সুকুমার প্রতিক্রিয়ায় জানান-‘ আমার ঘরে পূজা-পার্বনের কোন আবহই ছিল না। টাকার অভাবে মা-বোন-স্ত্রীকে নতুন কাপড় দিতে পারিনি। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রীর তিন হাজার টাকা পেয়েই আমার ঘরে পূজা এসেছে।’ তিনি বলেন, সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের প্রার্থনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হোন। আমার বিশ্বাস, ভগবান আমাদের প্রার্থনা অবশ্যই শুনবেন।
কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার কারনে জেলাবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী জেলার ৮ উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে দরিদ্র পরিবারের জন্য বিগত ঈদের সময় শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়েছিলেন। এ জন্য এবারের সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দূর্গা পূজা ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমায় কক্সবাজার জেলার হিন্দু এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্যও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে ৫ কোটি ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলায় হিন্দু এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তালিকা করা হয়েছে ১৬ হাজার ৬ শত ৭০ পরিবার। পরিবার প্রতি ৩ হাজার টাকা করে মোট ৫ কোটি ১০ হাজার টাকা দূর্গা পুজা ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা উৎসব উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে দেয়া হয়। তন্মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের সংখ্যা হচ্ছে ১২ হাজার ২০ পরিবার। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পরিবারের সংখ্যা হচ্ছে ৪ হাজার ৬ শত ৫০ পরিবার। গত বুধবার থেকেই এসব পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ শুরু করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো পূজার শুভেচ্ছার তিন হাজার টাকা গতকাল বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট থেকে পেয়ে সুকুমার ছুটে যান কাপড়ের দোকানে। দোকানে গিয়ে আগে বৃদ্ধা মায়ের জন্য কিনেন ৫০০ টাকা দিয়ে একটি শাড়ী। এরপর ছোট বোনের জন্য কিনেন ৬০০ টাকা এবং স্ত্রীর জন্য কিনেন ৭০০ টাকার একটি শাড়ী। নিজে কিছু কিনেননি তিনি। এরপর তিনি ছুটেন গতকালের অশ্বীনী কুমার পূজার বাজারের বাকি টাকা পরিশোধ করতে।
পূজার সামগ্রী চাল, গুড়, নারিকেল সহ অন্যান্য কিছু কিনতে এক হাজার টাকা দোকানীকে পরিশোধ করেছেন তিনি। এভাবেই তার ২ হাজার ৮০০ টাকা খরচ হয়ে গেছে। তার হাতে অবশিষ্ট আছে ২০০ টাকা। শারদীয় দুর্গাপূজার আজ বিসর্জনের দিন। পূজার সর্বসাকুল্যে খরচ প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা দিয়েই শেষ করেছেন।
কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিকেপাল সড়কের লোকনাথ পল্লীর সোনাতন দাশের সন্তান সুকুমার মাছ ধরার জাল বুনে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু আগের মত বর্তমানে সাগরে মাছ ধরার ভাল ব্যবসা নেই। এ কারনেই সুকুমার দালের সংসারে দুর্বিষহ অবস্থা চলছে। এরি মধ্যে কি করে যে আকস্মিক প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছার নগদ তিন হাজার টাকা হাতে এসে গেল-এ যেন তার নিকট এক অলৌকিক বিষয়।
Posted ১:৩৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh