বৃহস্পতিবার ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিলের সুপারিশ

দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক   |   সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিলের সুপারিশ

>> সরকারি চাকরিতে বেতনের ক্ষেত্রে ২০টি গ্রেড রয়েছে
>> বিসিএসের মাধ্যমে ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্তরা পান নবম গ্রেড
>> পদোন্নতির মাধ্যমে তারা সপ্তম থেকে প্রথম গ্রেডে উন্নীত হন
>> ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে কোটা নিয়ে কোনো সুপারিশ নেই
>> ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ‘এখন কোটা না হলেও চলবে’
বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি) পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা বাতিলের সুপারিশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কোটা বাতিল করে কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

মন্ত্রিসভার বৈঠক নিয়ে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ তথ্য জানান।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে বেতনের ক্ষেত্রে ২০টি গ্রেড রয়েছে। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্তরা নবম গ্রেডে বেতন পান। এই গ্রেডে নিয়োগপ্রাপ্তরা পদোন্নতির মাধ্যমে সপ্তম থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত উন্নীত হন।

কার্যপরিধিতে না থাকায় ১৪তম থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় ও চতুর্থ) নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা নিয়ে কোনো সুপারিশ করেনি কমিটি।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২ জুলাই কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে সরকার।

কমিটিকে ১৫ কর্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। ৮ জুলাই প্রথম সভা করে কমিটি। পরে কমিটির মেয়াদ আরও ৯০ কার্যদিবস (তিন মাস) বাড়ানো হয়।

কোটা নিয়ে সুপারিশের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইতোমধ্যে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। আমাদের ফাইন্ডিংস হলো- নবম গ্রেড থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত অর্থাৎ আগে যেটাকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি বলা হত, সেগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকবে না। এখন তো আমরা শ্রেণি বলি না, গ্রেড বলি।’

তিনি বলেন, ‘নিয়োগ হবে সম্পূর্ণ মেধা ভিত্তিতে।’

৪০-তম বিসিএসের তো বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, সেখানে কী হবে- এ বিষয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘বলা আছে সরকার যদি ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত নেয় সেই অনুযায়ী কোটা নির্ধারিত হবে।’

‘আজকেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট সাবমিট করেছি। রিপোর্ট অনেক বড় তবে ফাইন্ডিংস খুব ছোট।’

কমিটির সুপারিশ কবে থেকে কার্যকর হবে- জনতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক অনুমোদন গ্রহণ করা হবে। অনুমোদনের পর এটা ক্যাবিনেটে উপস্থাপিত হবে। ধরেন, নেক্সট ক্যাবিনেট বা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে হবে। ক্যাবিনেট পাস করে দিলে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।’

মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ নিয়ে আদালতের পর্যাবেক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছি, তারা বলেছেন যে, এটা যেহেতু গভর্নমেন্ট পলিসির ডিসিশন, এটা আদালতের রায়কে স্পর্শ করবে না। কোনো সমস্যা নেই।’

তিনি বলেন, ‘১৩তম গ্রেডের নিচের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার বিষয়টি আমাদের কার্যপরিধির মধ্যে ছিল না।’

প্রধানমন্ত্রী তো সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখার কথা বলেছিলেন- এ বিষয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘আমরা এটা যাচাই-বাছাই করে দেখেছি। বলেছি, এখন কোটা না হলেও চলতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদে বলা আছে, যারা ব্যাকওয়ার্ড, সরকার যদি চায় তাদের কোটা দিতে পারে।’

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ এবং উপজাতী কোটায় পাঁচ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে এক শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান রয়েছে।

এই কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধও করছিলেন তারা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয় আন্দোলনকারীদের। গ্রেফতারও হন আন্দোলনকারী অনেক নেতা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করবো।’

কোটা পর্যালোচনা কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন- লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ, অর্থ বিভাগের সচিব মুসলিম চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব অপরূপ চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের সচিব আকতারী মমতাজ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান।

Comments

comments

Posted ৭:০৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com