বৃহস্পতিবার ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>
Advertisement Placeholder

পিবিআই কাণ্ডের ভূমিদস্যু নুরুল হক চক্র আবারও সক্রিয়

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   60 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

পিবিআই কাণ্ডের ভূমিদস্যু নুরুল হক চক্র আবারও সক্রিয়

পিবিআই কাণ্ডের ভূমিদস্যু নুরুল হক চক্র আবারও সক্রিয়

* ২ কোটি টাকার জমি দখলে ভুয়া দলিলুখতিয়ান সৃজনের অভিযোগ
* দখল ছাড়াই ১১০৮৩৩ নম্বর ভুয়া খতিয়ান সৃজন ভূমি অফিসে
* কলাতলীতে সন্ত্রাসী দিয়ে চলছে জমি জবর-দখলের মহোৎসব

ভুয়া দলিল ও অবৈধভাবে খতিয়ান সৃজন করে আবারও আলোচনায় এসেছে পিবিআই কাণ্ডের প্রতারক চক্র নুরুল হক সিন্ডিকেট। অভিযোগ উঠেছে—২ কোটি টাকার মূল্যের জমি দখল করতে নুরুল হক, আবু বক্কর, নেয়ামত উল্লাহ ও আমিন উল্লাহ একজোট হয়ে সক্রিয় হয়েছে।

রুমালিয়ারছড়ার শাহাদাত হোসাইনের ১৯৭৪ সালের ৪৪২০ নম্বর দলিলের ১০ শতক বাড়ির জমি ক্রয় করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন তাঁর ওয়ারিশরা। অথচ সেই জমি অংশকেই দেখানো হয়েছে ভিন্ন স্থানের—কলাতলীর ভুয়া ৩৭৩৭ নম্বর দলিলে।

দলিলটিতে এমনকি ভুয়া ওয়ারিশের ছবি ও এনআইডি ছাড়া কিছু অচেনা ব্যক্তিকে দেখানো হয়। পরে আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির নামে দলিল তৈরি করে ১১১২৯ নম্বর বিএস খতিয়ান সৃজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় দখলের প্রক্রিয়া।

প্রথমে আবু বক্কর উক্ত ভুয়া খতিয়ানের পাওয়ার নেন। এরপর নিজের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের নামে ১৯৫২৯ নম্বর বিএস খতিয়ান সৃজন করে জমিটি হস্তান্তর দেখান। পরে নুরুল হক ও আবু বক্কর সিন্ডিকেট মিলে নেয়ামত উল্লাহ ও আমিন উল্লাহর কাছে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকায় গোপনে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করে।

সবশেষে দখল ছাড়াই ২৫-১১০৮৩৩ নম্বর ভুয়া বিএস খতিয়ান সৃজন করে সিন্ডিকেটটি ফের আলোচনায় আসে।

প্রকৃত মালিক মাহমুদুল করিম, আলহাজ দিদারুল আলম চৌধুরী গং, সরোয়ার আলম গং, মৌলানা সালাম উল্লাহ, জিন্নাত আলী গং ও মহিউদ্দিন গং জানিয়েছেন—চক্রটি ভয়ংকরভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

ভূমি অফিসে ভুয়া দলিল ও খতিয়ান সৃজনের পাশাপাশি পুলিশের উপস্থিতি দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন, ছবি-সংবলিত মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও সন্ত্রাসী দিয়ে দখলচেষ্টা—সবই তাদের কৌশলের অংশ।
ভুক্তভোগীদের দাবি, জমি দখলই এখন তাদের ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী দিদারুল আজম চৌধুরী গং আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি ভূমি অফিসে নামজারী জমাভাগ মামলা (৮৩/২০২৫-২০২৬) দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়—কলাতলী বাইপাস সড়ক সংলগ্ন ঝিলংজা মৌজার আরএস ১৯৫০ নং খতিয়ানের জমি দিদারুল আজম চৌধুরী গং-এর নামে ভোগদখলে ছিল। ওই জমি সম্পর্কিত ১৪৭/২০১৪ ইং নং মামলা বর্তমানে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও, প্রতারক আবু বক্কর ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম জালিয়াতির মাধ্যমে ১৯৫২৯ নং খতিয়ান সৃজন করে নিয়ামত উল্লাহ ও আমিন উল্লাহর কাছে বিক্রি করে দেন।

বিজ্ঞ আদালত ১৮/০৬/২০২৫ তারিখে উক্ত খতিয়ানের জমি বিক্রি বা হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে চক্রটি ২২/০৬/২০২৫ তারিখে উক্ত জমি বিক্রির কবলা রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে দিদারুল আজম চৌধুরী পুনরায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন।

তদন্তে আরও জানা যায়, নুরুল হক অতীতে খালেদা বেগমের নামে সৃজিত বিএস ৭০৮৯ নং খতিয়ান জাল কাগজে পুনরায় চালু করে নিজের নামে ১৮৪৯৫ নং খতিয়ান সৃজন করেন। পরে সেই ভুয়া খতিয়ান ব্যবহার করে নিয়ামত উল্লাহ ও আমিন উল্লাহকে জমি বিক্রি করেন।

ভূমি অফিসে সাধারণ নামজারী যেখানে মাসের পর মাস সময় নেয়, সেখানে এই চক্রটি এসিল্যান্ড অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় এক রাতেই খতিয়ান সৃজন করেছে—এমন অভিযোগও উঠেছে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে।

প্রকৃত মালিক দিদারুল আজম চৌধুরী, সরোয়ার আলম, মৌলানা সালাম উল্লাহ, জিন্নাত আলী ও মহিউদ্দিন গং বলেন, জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে ভূমিদস্যুরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।

Facebook Comments Box

Comments

comments

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম

যোগাযোগ

প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত

মোবাইল : ০৩৪১-৬৪১৮৮। বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন 01870-646060

ই-মেইল: ajkerdeshbidesh@yahoo.com