শনিবার ১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম
শ্রাবনের অবিরাম বৃষ্টি

পাহাড় ধসের শঙ্কায় রোহিঙ্গারা

জাকারিয়া আলফাজ, টেকনাফ   |   শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১৮

পাহাড় ধসের শঙ্কায় রোহিঙ্গারা

শ্রাবনের দিন। যে মাত্রায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তাতে আসছে আরো ক’দিন বৃষ্টিপাতের এ ধারা যে অব্যাহত থাকবেনা তা বলা মুশকিল। অবিরাম বৃষ্টিতে ডুবে গেছে পথঘাটসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন নি¤œাঞ্চল। তবে সমতলে এ বৃষ্টি বড়জোর সাধারণের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাবে বটে তবে বড় শঙ্কা রয়েছে পাহাড়ে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিয়ে। উচুনিচু বালির পাহাড়, ধস হলে যেমন মারাত্মক মানবিক বিপর্যয় ঘটবে তেমনি অনাকাঙ্খিত প্রাণহানিরও আশংকা রয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানের মতো টেকনাফ ও উখিয়ায় গত তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। মুলতঃ এ দু’ উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলে মিয়ানমার থেকে পালিযে আসা দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বসতি। শ্রাবণের অবিরাম বৃষ্টিতে জনজীবন যেমনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তেমনি টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন পাহাড়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা বসতিগুলোতে ধসে পড়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

এমতাবস্থায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় আতংকে রয়েছে পাহাড় বাসরত লাখো রোহিঙ্গা। অনিরাপদ বসত ঘরের ভেতর দিয়ে রোহিঙ্গারা এখন নিরাপদ জীবনের প্রতীক্ষা করছেন। টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা বসবাসরত যেসব পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো হচ্ছে টেকনাফের লেদা, নোয়াপাড়া, উনচিপ্রাং, উখিয়া উপজেলার থায়ংখালী, তাজনিমার খোলা, হাকিম পাড়া, ময়নার ঘোনা, জামতলী, পালংখালী, বালুখালী, কুতুপালং মধুরছড়া, লম্বাশিয়া, মদিনা পাহাড়। একটানা ভারী বৃষ্টিপাতে এসব পাহাড়ের মাটি দেবে যাচ্ছে। এসব জায়গায় পাহাড়ের মাটি ক্ষয়ে বড় ধরনের ধসেরও আশংকা দেখা দিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, গত ক’দিন ধরে যেভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এ ধারা অব্যাহত থাকলে উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বসবাসরত পাহাড়গুলো যেকোন মুহুর্তে ধসে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই পাহাড় ধসের আশংকায় চরম আতংকে উখিয়া ও টেকনাফের অন্তত ৩০ টি পাহাড়ে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা গভীর উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।

উখিয়ার বালুখালী পাহাড়ে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, গত কয়েক দিন যাবত খুব বেশিই বৃষ্টি হচ্ছে। এই পাহাড়টি এমনিতেই বালির পাহাড়, তাছাড়া পাহাড়ের খাদের উপর অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত অনেক রোহিঙ্গার ঘর রয়েছে, যেগুলো এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে যেকোন মুুহুর্তে ধসে যেতে পারে। কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হামিদ হোসেন জানান, লম্বাশিয়া পাহাড়ের উচু নিচু ভুমিতেই রোহিঙ্গাদের বসবাস। বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত বেশি হলে এসব পাহাড় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক উঁচু পাহাড়ের টিলায় রোহিঙ্গাদের যেসব ঘর রয়েছে পাহাড় ধস হলে এসব ঘরে আশ্রিত রোহিঙ্গারা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এছাড়া পাহাড় ধসে এখানে হাজার হাজার রোহিঙ্গার প্রাণহানির সম্ভাবনাও রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অনুমান, চলতি বর্ষায় ভারি বৃষ্টিপাতে কোন বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পাহাড় ধসে রোহিঙ্গারা দূর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।

উখিয়ার কুতুপালং এর স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হাসান বলেন, বনভূমি উজাড় করে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের বসতি। বর্ষাকালে যখন প্রবল বর্ষণ শুরু হয় তখন পাহাড় ধসের আশংকায় ভীত হয়ে পড়ে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের অনেকের বসতি পাহাড়ের খাদে হওয়ায় যেকোন মুহুর্তে এসব ঘরগুলো ধ্বসে দূর্ঘটনায় প্রাণহানিরও সম্ভাবনা রয়েছে। কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই উখিয়ার কতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা, নোয়াপাড়া, মুছনিসহ বিভিন্ন পাহাড়ে অস্থায়ী বসতি স্থাপন করে আছে। বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা থাকে। সেহেতু পাহাড়ে বসবাসকারীদের প্রাণহানি যাতে না ঘটে সে জন্য পূর্ব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

দেশবিদেশ /২৭ জুলাই ২০১৮/নেছার

Comments

comments

Posted ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com