রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া | বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮
খাল, নদী, পাহাড় ও উর্বর কৃষিজমি বেষ্টিত উখিয়ায় পাহাড় কেটে প্রকৃতি ধ্বংসের লীলা খেলা কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না। বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্টীর মানবিক সেবায় নিয়োজিত এনজিও সংস্থার বিশাল চাহিদাকে পুজি করে এলাকার এক শ্রেনীর পেশাদার পাহাড় খেকোর দল নির্বিচারে পাহাড়ের মাটি পাচার করে কাড়িকাড়ি টাকা আদায় করছে। ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি, জীব বৈচিত্র, পশুপ্রানী ও পরিবেশ। বুধবার সকালে বন বিভাগ ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট যৌথ অভিযান চালিয়ে পাহাড় কাটা মাটিভর্তী গাড়ী জব্দ করে অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার অভিযোগে মোবাইল কোর্ট রামু জোওয়ারিয়া নালা গ্রামের এজাহার মিয়ার ছেলে মোঃ রফিক (৪০) কে থামানো যাচ্ছে না পাহাড় কাটা আইন ৬ এর (খ) ধারায় ১ মাসের সাজা প্রদান করেছে।
২৫ আগষ্টের পরে মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তচ্যুত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন ও পালংখালী ইউনিয়নের ৫ হাজার একর বনভুমিতে আশ্রয় নেয়। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক দিকনির্দেশনায় আশ্রিত এসব রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবায় এগিয়ে আসে প্রায় ২ শতাধিক এনজিও। তাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল নির্মানের জন্য প্রয়োজনের তাগিদে কিছু কিছু পাহাড় কেটে সমতল করা হয়েছিল। এসুযোগের সৎ ব্যবহার করে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র পাহাড় কেটে মাটি পাচার শুরু করে। বুধবার সকালে ঘটনাস্থল থাইংখালী ময়নারঘোনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ২০/২৫ জন রোহিঙ্গা শ্রমিক পাহাড় কেটে গাড়ীতে মাটি ভর্তী করছে। এসময় স্থানীয় সাংবাদিক দেখে রোহিঙ্গারা কাজ বন্ধ করে দেয়। জানতে চাওয়া হলে ময়নারঘোনা ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা শ্রমিক অজিউল্লাহ (৪০), ছালামত উল্লাহ (৩৫), নুর মোহাম্মদসহ আরো বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, তারা ছৈয়দ নুরের নির্দেশে পাহাড় কাটার কাজ করছে। এসময় শ্রমিক মাঝি শামশুল আলম (৩৫) জানান, এখানে প্রতিদিন থাইংখালী বিট কর্মকর্তা এসে ছৈয়দ নুরের সাথে কথা বলে চলে যেতে দেখা যায়। নামপ্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গা জানান, ছৈয়দ নুরের সাথে বিট কর্মকর্তা দৈনিক লেনদেন হওয়ার কারনে প্রকাশ্যে দিবালোকে বন ভুমির পাহাড় কাটারমত জঘন্য অপরাধ প্রবনতা চলছে। তবে টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করে থাইংখালী বনবিট কর্মকর্তা মঞ্জুরুল মোরশের্দ জানান, তারা এনজিও সংস্থার নির্দেশে মাটি সরবরাহ করছে। বাধা দিলেও শুনেনা। উখিয়া সহকারী বন সংরক্ষক কাজী তারিকুর রহমানের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, এলাকার কিছু লোক এনজিওর দোহায় দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি পাচার অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, সহকারী কমিশনার ভুমির সহযোগিতায় পাহাড় কাটা যে কোন উপায়ে বন্ধ করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ ফখরুল ইসলাম জানান, পাহাড় কাটার ফলে প্রকৃতি ধ্বংসের পাশাপাশি জীব বৈচিত্র বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যা কোন দিন পূরন হওয়ার কথা নয়। তিনি এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।
Posted ১:৫৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh