বৃহস্পতিবার ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

নির্বাচনের আগে হচ্ছে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: রয়টার্স

দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক   |   রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

নির্বাচনের আগে হচ্ছে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: রয়টার্স

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা আগামী বছর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বাংলাদেশের শরণার্থী বিষয়ক ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম রবিবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তর কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। শরণার্থীদের মূল দাবি মোতাবেক প্রত্যাবাসন শুরু করতে নতুন ধারার পদক্ষেপ দরকার বলেও জানান তিনি।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানের কারণে জাতিসংঘের হিসেবে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাত লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে এই অভিযান শুরু হয় বলে দাবি করে থাকে মিয়ানমার। তবে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দাবি, সেনা সদস্য ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বেসামরিক মানুষ তাদের হত্যা, ধর্ষণ এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিতে থাকায় পালাতে বাধ্য হয়েছে তারা। জাতিসংঘ সমর্থিত একটি তদন্ত দল মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার উদ্দেশ্য ও জাতিগত নিধনযজ্ঞের উদ্দেশ্যে অভিযান চালানোর অভিযোগ আনে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার গত ১৫ নভেম্বর থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে সম্মত হয়। তবে এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং সহায়তা সংস্থাগুলো। তাদের আশঙ্কা, মিয়ানমারে ফিরে গেলে আবারও নিরাপত্তা সংকটে পড়বে রোহিঙ্গারা।

গত ১৫ নভেম্বর প্রথম ব্যাচের ২২০০ শরণার্থীর মিয়ানমারের কথা থাকলেও শরণার্থীদের বিক্ষোভের মুখে তা স্থগিত রাখা হয়। ন্যায়বিচার, নাগরিকত্ব এবং নিজ গ্রাম ফেরা ও ভূমির অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবি পূরণের আগে মিয়ানমার যেতে অস্বীকৃতি জানায় প্রত্যাবাসন তালিকায় থাকা শরণার্থীরা।

এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশের শরণার্থী বিষয়ক ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেছেন, ‘এসব ছাড়া কেউ ফিরতে রাজি হবে বলে মনে হয় না’। রোহিঙ্গাদের অবৈধ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করে তাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে মিয়ানমার। প্রত্যাবাসনের আওতায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিলেও নাগরিকত্বের পরিবর্তে তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড দিতে রাজি হয় মিয়ানমার। তাদের দাবি, এই কার্ডধারীরা নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবে। তরে রোহিঙ্গারা ওই কার্ড নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে আসছে এর মাধ্যমে তাদের আবারও ‘বিদেশি’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

কালাম বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চাইলে মিয়ানমারকে নাগরিকত্বের বিষয়ে একটি পরিস্কার পথনির্দেশনার প্রস্তাব করতে হবে বলে তিনি মনে করেন। আগামী মাসে প্রত্যাবাসন বিষয়ক পরবর্তী দ্বিপাক্ষিক সভায় তিনি বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানান।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হওয়ায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বা জনাকীর্ণ শিবির থেকে ভাসান চরে স্থানান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত থাকবে। সেই হিসেবে এবছর আর এসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কালাম বলেন, নির্বাচন আসন্ন হওয়ায় সরকার নির্বাচনের পরই কেবল ভবিষ্যতের নতুন ধারার পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তিনি জানান, রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরতে চাইলে তাদের ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। তবে জোর করে বাংলাদেশ কাউকে ফেরত পাঠাতে চায় না বলে জানান তিনি।

কালাম জানান, ভাসান চরে বিকল্প পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ প্রায় শেষ হয়ে আসছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কৃষিকাজ ও মাছ ধরে জীবীকা নির্বাহের সুযোগ থাকায় কোনও কোনও রোহিঙ্গা সেখানে যেতে সম্মত হবে। তবে ত্রাণ সংস্থাগুলো সেখানে বন্যার পানি ওঠার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে।

রবিবারে কালামের বক্তব্যের পর প্রতিক্রিয়া জানতে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাও তাইকে পায়নি রয়টার্স।

দেশবিদেশ /১৮ নভেম্বর ২০১৮/নেছার

Comments

comments

Posted ১০:১৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com