নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র্যাব)’র অপারেশনে টিকতে অস্তিত্ব বিলীন হতে চলা জলদস্যুরা শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামিকাল ২০ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করবে মহেশখালীর জলদস্যুরা। মহেশখালীর ৪০ থেকে ৫০ জন জলদস্যুর আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা রয়েছে। অস্ত্রের পাশাপাশি জলদস্যুদের কাছে থাকা বিপুল সংখ্যক গুলিও হস্তান্তর করা হতে পারে।
জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ উপলক্ষে মহেশখালীতে আয়োজন করা হচ্ছে অনুষ্ঠানের। আগামিকাল ২০ অক্টোবর (শনিবার) মহেশখালীর আদর্শ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এই অনুষ্ঠানে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে মহেশখালী আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আগামিকাল ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে সরাসরি মহেশখালীতে পৌঁছবেন তিনি।
জানা গেছে, র্যারের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত সরকারি অন্যান্য বাহিনীগুলো জলদস্যুদমনে কঠোর অবস্থানে ছিলো। যে কোনভাবে বঙ্গোপসাগরকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি জলদস্যুদের দমন ছিলো এর কারণ। বেশ কয়েকটি অপারেশনের মাধ্যমে কয়েকজন জলদস্যুকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করতেও সক্ষম হয়। কিন্তু তাদের মূলোৎপাটন করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে অপারেশন আরো জোরদার করা হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিশ^স্ত লোক মারফত র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব পাঠায় কয়েকটি দুর্ধর্ষ জলদস্যু বাহিনী। র্যাব সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়ায় অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় জলদস্যুরা।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরেই মহেশখালী উপজেলা দেশব্যাপী সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত। কয়েকবছর ধরে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেল সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক হারে বেড়ে যায় জলদস্যুতা। জলদস্যুদের হাতে প্রাণ হারায় নিরীহ মাঝি-মাল্লা।অনেক সময় দস্যুরা সাগর থেকে ট্রলারের মাছ লুটের পাশাপাশি ট্রলার লুট করার পাশাপাশি মাঝি-মাল্লাদের গোপনস্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তীকালে মুক্তিপনের মাধ্যমে ছাড়িয়ে আনা হয় মাঝি-মাল্লাদের। প্রায় এক দশক ধরে ট্রলার মালিক এবং জেলেদের দাবি ছিলো বঙ্গোপসাগরকে জলদস্যুমুক্ত করা। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনের মতো কঠোর কর্মসূচিও পালন করেছে তারা। কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায়নি। জলদস্যুরা কিছুদিন আত্মগোপনে থাকে। পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার নেমে পড়ে দস্যুবৃত্তিতে।
গতকাল মুঠোফোনে আলাপকালে র্যাব-৭ কক্সবাজারের ইনচার্জ মেজর মেহেদি হাসান জলদস্যুদের আত্মসমর্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘জলদস্যুদের আত্মসমর্পণের বিষয়টি সত্য। আমি কক্সবাজারের দায়িত্বগ্রহণের পর মহেশখালীতে অভিযান পরিচালনা করি। উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গুলি।’ আগামিকাল (আজ ১৯ অক্টোবর) আত্মসমর্পণকারীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। নতুন করে তালিকায় যুক্ত হতে পারে আরো কয়েকজন জলদস্যুর নাম।
দেশবিদেশ /১৯ অক্টোবর ২০১৮/নেছার
Posted ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh