শনিবার ১লা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

নিঃসঙ্গতার অপর নাম বৃদ্ধাশ্রম…

ইমরান হোসেন মুন্না   |   শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

নিঃসঙ্গতার অপর নাম বৃদ্ধাশ্রম…

ছেলে আমার মস্ত মানুষ মস্ত অফিসার ,মস্ত প্লেটে দেখা যায় না এপার ওপার। নানা রকম জিনিস আর আসবাব দামি দামি সবচেয়ে কমদামী ছিলাম একমাত্র আমি, ছেলের আমার আমার প্রতি অগাধ সম্ভম আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।
নচিকেতার এই গানে সমাজ জীবনে বড়ই আলোড়ন ফেলেছিলো। বৃদ্ধাশ্রম অর্থাৎ ছেলেদের বোঝা বা সমাজের বোঝা। নিঃসঙ্গতার অপর নাম বৃদ্ধাশ্রম। মা,বাবা আদরে ভালবাসায় ত্যগের মহিমায়, অসহায়, অবুজ শিশুটিকে মাতৃ, পিতৃস্নেহে বড় করেন এবং সেই অবুঝ শিশুটি যখন পূর্ন স্বাবলম্বি যখন মা,বাবা অবুজ হন তখন তারাই হয়ে যায় বোঝা, যেতে হয় বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগার স্বাবলম্বি। আশ্চর্য হই যখন দেখি আমরা বিবেক মনুষত্ব হারিয়ে কংক্রিট ইট,পাথরের মত হৃদয়টা শক্ত হওয়া দেখে, আমিও বাবা হব আশ্রম বড় হবে। আদরের সন্তানেরা যদি একই ব্যবহারটা করে অসহায়
বৃদ্ধাটাকে ।
আল্লাহ ও দীর্ঘশ্বাসই থাকে । হাইরে জীবন , হাইরে সংসার, হাইরে সন্তানেরা দেখেছ সেই আর্তনাত বড়ই ব্যাথার । আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ঠিকানা যেন বৃদ্ধাশ্রম না !বৃদ্ধাশ্রম কি সত্যই বৃদ্ধ -আশ্রম!!
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় দেশটি এখনো স্বাধীন হয়নি, স্বাধীন হলেই বা কেন আজকের বৃদ্ধারা পরাধীন হয়ে বৃদ্ধাশ্রমে পড়ে থেকে মৃত্যুর শেষ প্রহর গুনছেন। ধীরে ধীরে যৌথ ভেঙ্গে নিউক্লিয়ার হচ্ছে আর বৃদ্ধা মানুষের জায়গা কমে যাচ্ছে। পৃথিবীর প্রথম বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো প্রাচীন চীনে।
ঘরবাড়ি ছাড়া আশ্রয়হীন অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের এই আশ্রয়কেন্দ্র ছিলো শান বংশের প্রায় ২২০০ বিতাড়িত বৃদ্ধাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরী করে ইতিহাসে তারাই প্রথম জায়গা দখল করে নেয়।
সন্তানরা ভুলে যায় তারাও একদিন বাবা মা হবে। ছোট হতে হতে ঘরের চারদেয়াল আর ছোট হয়ে যায় একদিন চকচকে আসবাব পুরুনো হয় এবং ঘুন ধরে পরিত্যক্ত হয়,তারপর বিক্রি হয়।
ঠাকুমা ঠাকুরদাদা এখানকার প্রজন্ম চিনছে না। তাদের মুল্যবোধগুলো যান্ত্রিক হয়ে পড়েছে। বাবা মা বাইরের পরিবার বলতে কিছু চিনছে না। কিন্তু এই অবক্ষয় থেকে রোধ করা সম্ভব নয়। সন্তান সম্পত্তির লোভে তার মা বাবাকে খুন করছে বাবা মার সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে ঘর ছাড়া করছে বহু মা বাবা কে বহু মা বাবাকে আদালতের দ্বারস্ত হতে হচ্ছে। আদালতের রায় বাবা মা,র পক্ষে গেলে বাড়ি বৃদ্ধাশ্রম হয়ে উঠে।
বৃদ্ধাশ্রম মানে নিরবিচ্ছিন্ন হাহাকার তা ঠিক নয়।একসাথে বহু মানুষ বেঁচে থাকার অঙ্গীকার। সময়ের শেষ প্রান্তে এসে বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নিজেকে আবিষ্কার করেন। বিভিন্ন সামাজিক কাজ হাতের কাজের মধ্যে নিজের অবসরকে ভাগ করে চলছেন। তবে কোন বৃদ্ধাশ্রম কোন বাবা মা,র শেষ ঠিকানা হতে পারেনা। যে সময় মানুষ দ্বিতীয় শৈশবে পদার্পণ করে সে সময়ে অসহায়তা কোনভাবে কাম্য নয়। বৃদ্ধ বয়সে মনের কোমলতা বেড়ে যায়। সকল বৃদ্ধাশ্রম নিপাত যাক।
বৃদ্ধাশ্রম দরিদ্র পরিবারের নয় ধনী ও অভিজাত পরিবারের সংখ্যা বেশি। এর কারণ আমাদের নিশ্চয় অজানা নয়। এর দায় সেই বৃদ্ধরাও এড়াতে পারেনা। সন্তানদের তারা সুশিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন প্রতিনিয়ত। পরিনামে তাদের সন্তানরা অর্থ বিত্ত ও অভিজাত্য অর্জন করলেও তারা মনুষ্যত্ব অর্জন করেনি। পরিশেষে বলি, বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের সম্মান করি মা বাবার অর্পিত দায়িত্ব পালন করি ।

Comments

comments

Posted ১০:১২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

জয়গান
জয়গান

(1334 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com