এফ এম সুমন পেকুয়া | বৃহস্পতিবার, ০৫ জুলাই ২০১৮
দিন দিন ভেঙে যাচ্ছে পেকুয়া উপজেলার অন্যতম নৌপথে যোগাযোগের জন্য নির্মিত উজানটিয়ার করিমদাদ মিয়ার জেটিঘাট। মাতামুহুরী নদীর প্রবল ¯্রােত ও ভারী নৌযানের ধাক্কায় ঘাটটি অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই বিলীন হয়েছে জেটির একটি সিড়ি। বেশ কয়েকটি পিলার ও ধেবে গেছে । স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন যেকোন মুহুর্তে নদীর তীব্র স্্েরাতে ভেসে যেতে পারে পুরো ঘাটটি।
স্থানীয়ভাবে প্রাচীন এই ঘাটটি করিমদাদ মিয়ার ঘাট নামে পরিচিত। জায়গা করে নিয়েছে উপজেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থানে। সরেজমিনে ঘাটটি পরিদর্শনে দেখা যায়, স্থানীয়রা জানান ১৯৯৫ সালে উজানটিয়া ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ এলজিইডির অর্থায়নে ঘাটটি নির্মাণ করেন। এরপর থেকে মহেশখালী, মাতারবাড়ি, সোনাদিয়া সমুদ্রবন্দর, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মগনামায় নির্মিতব্য সাবমেরিন নৌঘাঁটি ও করিয়ারদিয়ার মৎস্য প্রজেক্টসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে এই ঘাটটি।
সম্প্রতি মাতারবাড়িতে নির্মিত কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনেক মালামাল ও দেশী বিদেশী প্রকৌশলীরা সহজে পারাপারে এ ঘাট ব্যবহার করে আসছেন। তাছাড়া করিয়ারদিয়া ও উজানটিয়ায় উৎপাদিত লবন ও মাছ এঘাট দিয়েই নদীপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হয়। লবণ ও চিংড়ি ব্যবসায়ী উজানটিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিম চৌধুরী মিন্টু বলেন, এই করিমদাদ মিয়ার ঘাট দিয়ে উজানটিয়ার উৎপাদিত লবন চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।
এটি অত্যান্ত গুরত্বপূর্ন তার কারন হলো এটি দিয়ে নৌপথে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বদরখালী, করিয়ারদিয়া ও চট্টগ্রামে যাতায়ত করা যায়। তাছাড়াও দেশের অন্যতম কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের কাজে লোকজন যাতায়তে এ ঘাট ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ঘাটটিতে সম্প্রতি সময়ে রক্ষানাবেক্ষনে যথেষ্ট অবহেলা ছিল। তবে এখনি এটির রক্ষার ব্যবস্থা করা না হলে এটি বিলীন হতে পারে বলে ও তিনি ধারণা করেন। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী সাখাওয়াত হোসেন সুজন চৌধুরী জানান, সম্প্রতি প্রবল জোয়ারের স্রোতে ঘাটের কয়েকটি পিলার দেবে গিয়ে এটি চরম ঝঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে ।
ইতিমধ্যেই একটি সিড়ি বিলীন হয়েছে অন্যটি যাওয়ার পথে। কাজেই এখনি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা না হলে বড় রকমের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফেরাশিঙ্গা পাড়া এলাকার চিংড়ি চাষী রবিউল, ওয়াজ উদ্দিন, নতুন ঘোনা এলাকার চিংড়ি চাষী মহসিন রেজা, মানিকুল ইসলাম, এম.আশেক এলাহী মুন্সি, করিমদাদ মিয়ার ঘাট এলাকার (২নং ওয়ার্ডের) মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বোটের মাঝি জসিম উদ্দিন সহ আরো অনেকই জানান, বড় ট্রলারের ধাক্কা ও প্রবল স্্েরাতে ঘাটটির এই অবস্থা হয়।
করিয়ারদিয়া ও বদরখালীসহ বিভিন্ন বড় বড় মৎস্য প্রজেক্টের হাজার হাজার কর্মীর যাতাযাত করে এ ঘাট দিয়ে। তাছাড়া স্থাণীয়ভাবে উৎপাদিত চিংড়ি মাছ এ ঘাট দিয়ে বোটে তোলা হয় যার ফলে এটি অত্যান্ত গুরত্বপূর্ণ বলে তারা দাবী করেন। তারা আরো বলেন ঘাটটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই নদীর স্রোতে পুরো ঘাটটি ভেসে যাবে। আমরা দ্রুত ঘাটটি সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি। শীঘ্রই এটির সংস্কার না হলে বাকী অংশও দ্রুত নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এতে পেকুয়ার মৎস্য শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেও জানান তারা। এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, আসলেই এই ঘাটটি উপজেলার অন্যতম একটি ঘাট। এটি আসলেই খুব ঝুকিঁপূর্ন অবস্থায় আছে তবে আমি এলজিইডিকে অবহিত করেছি ইনশাআল্লাহ আশা করছি এটি দ্রুত সংস্কার হবে। এ বিষয়ে এলজিইডির পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদুল আলম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি ইতিমধ্যেই মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। শুনেছি পিলার দেবে গিয়ে ঘাটের পূর্ব পাশের সিড়িঁটা বিলীন হয়ে গেছে। আমি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তারপর যথাসম্ভব দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশবিদেশ /০৪ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh