শুক্রবার ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

তিন বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ : মরণ ফাঁদে পরিনত

শাহেদ হোছাইন মুবিন :   |   শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তিন বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ : মরণ ফাঁদে পরিনত

উখিয়ার রাজাপালং হরিণমারা রাস্তার কাজ দীর্ঘ তিন বছরেও শেষ হয়নি। অতিবৃষ্টিতে রাস্তার মাটি সরে গিয়ে উল্টো রাস্তাটি হয়ে গেল মরণ ফাঁদ পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের। এরইমধ্যে গত ৩ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণ কাজ।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং) সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার রাজাপালং ( জাদিমোরা) ষ্টেশন থেকে কয়েক কিলোমিটার সামনে কুমার পাড়া সংলগ্ন এলাকায় সংস্কারের জন্য রাস্তার পাড় খনন করলে অতিবৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাস্তাটির একাংশ। এক পাশ দিয়ে পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে পারলেও যানবাহন চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

উখিয়া উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, চন্দনাইশের হাসান টেকনো ফার্ম নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই রাস্তাটির শুরু করে। কিন্তু এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা শেষ করতে পারেননি।

এই রাস্তার কাজ শুরু হওয়ার পেছনে অনন্য ভূমিকা ছিলো রাজাপালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহ জাহানের। তিনি বলেন, আমি ইউপি সদস্য থাকাকালীন এই রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। আমি দায়িত্বে নেই প্রায় দুই বছর কিন্ত এখনো শেষ হয়নি রাস্তাটির কাজ। হারাশিয়া, হরিণমারা, দক্ষিণ হরিণমারা, পশ্চিম হরিণমারা, আমিন পাড়াসহ ১০ গ্রামের মানুষ নিত্য যাতায়াত করে এই রাস্তা দিয়ে। বর্তমানে রাস্তার দুর্বস্থার কারণে অনেক কষ্টে, ঘুরপথে এলাকার শিক্ষার্থীসহ সকলকে যাতায়াত করতে হয়। গ্রামের অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নেওয়ার দরকার হলে সমস্যায় পড়েন তারা। আর প্রসূতি মা’দের নিয়ে সমস্যা আরও জটিল। এই রাস্তায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। একই সঙ্গে বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি।

রাস্তাটি দিয়ে যান চলাচল করা তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে যাওয়াও কষ্টসাধ্য। হেঁটে যেতে গিয়ে শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যায়। রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াতকারী ষাট বছরের রশিদ আহমদ নামের এক বৃদ্ধ জানান, দীর্ঘদিন এভাবে পড়ে আছে রাস্তাটি দেখার যেন কেউ নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, রাস্তাটি দিয়ে হেঁটে যেতে কয়েকবার হোঁচট খেয়ে পাশে ছিটকে পড়ে যান। রাস্তাটি খালের পাশে হওয়ায় রাস্তার জায়গা খালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য উপজেলা সদরে শত শত মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে রাস্তাটির কাজ প্রায় তিন বছরেও শেষ হচ্ছে না বলে জানান ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সৈয়দ হোছাইন।

তিনি আরও জানান, আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ যে কোনো কাজে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। এছাড়াও রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্যও এ রাস্তা ব্যবহার করে যেতে হয়। গত কয়েক মাস রাস্তার কাজ বন্ধ থাকার ফলে রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে অসুস্থ মানুষদের নিয়ে যাওয়াও অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। পথচারি ছিটকে পড়ছে ভাঙন স্থলে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ বলেন, এলাকার মানুষের উপজেলা শহর ও জেলা শহরের সাথে প্রধান সংযোগ সড়ক এটি। মানুষের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল , থানা, হাটবাজার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোর একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক।

স্থানীয় কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত তিন বছর ধরে আমরা ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারী মালামাল পরিবহন, জরুরি রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।’ এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাগব করতে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চন্দনাইশের হাসান টেকনো ফার্মের সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের নক্সাকার (উঃসঃপ্রঃ) মোঃ আমিনুল হক মজুমদার বলেন, বৃষ্টি বাদল দিন হওয়ায় কাজ শুরু করতে পারছেন না। দ্রুত কাজ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই রাস্তার ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। শুধু ৩০০ মিটারের মতো কাজ বাকি আছে। এছাড়াও রাস্তাটি টেকসই করতে একটি কালভার্ট দেওয়া চেষ্টা চলছে তবে একটি পক্ষ করতে দিচ্ছে না। যদিও কালভার্ট এলাকাবাসী না চাই তাহলে কালভার্ট ছাড়াই রাস্তার কাজ শুরু হবে। এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব থাকায় অন্য রাস্তার কাজ বন্ধ করে হলেও আগামী এক সাপ্তাহের মধ্যে এই কাজ শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।

এ দিকে দ্রুত রাস্তাটির শেষ করে সকলের ভোগান্তি লাঘবে কাজ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষদের।

Comments

comments

Posted ৪:৫৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(591 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com