বৃহস্পতিবার ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>
Advertisement Placeholder
ঠিকাদার লাপাত্তা দুই বছর

টেকনাফ-শামলাপুর সড়কের ১৭ কিলোমিটারে ২০ খানাখন্দ

জাকারিয়া আলফাজ, টেকনাফ   |   সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   28 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

টেকনাফ-শামলাপুর সড়কের ১৭ কিলোমিটারে ২০ খানাখন্দ

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে উপকূলীয় জনপদ বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়কটি স্থানীয়ভাবে ‘ডিসি রোড’ নামে পরিচিত। সড়কটি টেকনাফ পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের কিছু অংশ এবং বাহারছড়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে শামলাপুর বাজারে গিয়ে শেষ হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়মিত চলাচলে এটি একটি ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হলেও বর্তমানে সড়কটি খানাখন্দ ও ভাঙনে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্যাকেজ প্রোগ্রামে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তিনটি অংশে পৃথক কাজ পায়। তার মধ্যে টেকনাফ পৌর ঝর্ণা চত্বর থেকে বাহারছড়া ইউনিয়নের বড় ডেইল পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এমআরসি-শামস্ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, বড় ডেইল থেকে জাহাজপুরা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এবং জাহাজপুরা থেকে শামলাপুর বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার অন্য দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পৃথক কাজ পায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো ২০২৩ সালে এ সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করে। পরে তারা কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ওই বছরের শেষ দিকে লাপাত্তা হয়ে যায়। সেই থেকে অদ্যবদি তাদের আর খোঁজ মেলেনি।

সরেজমিনে এ সড়ক ঘুরে দেখা যায়, টেকনাফ-শামলাপুর সড়কটির ৮ কিলোমিটার পড়েছে পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নে। বাকি ২৩ কিলোমিটার পড়েছে বাহারছড়া ইউনিয়নে। সদর ইউনিয়ন অংশে সড়কে তেমন ত্রুটি বা ভাঙন দেখা যায়নি। কিন্তু বাহারছড়া ইউনিয়নের শুরু নোয়াখালী পাড়া থেকে সড়কের খানাখন্দ শুরু হয়। শুধু নোয়াখালী পাড়া অংশে ৭ টি বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া পিরিচভাঙ্গা এলাকায় দুটি, কচ্ছপিয়া এলাকায় ৬ টি, করাচি পাড়া এলাকায় ৩ টি, বড় ডেইল, হাজম পাড়া, মাথাভাঙা ও জাহাজপুরা এলাকা একটি করে বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে নোয়াখালী পাড়া থেকে জাহাজপুরা পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়কে ২০ টি খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। এছাড়া সড়কটি কচ্ছপিয়া থেকে বড় ডেইল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার অংশ শুধু ইটের খোয়া বসালেও দুই বছরেও কার্পেটিং শেষ করেননি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে জাহাজপুরা থেকে সড়কের শেষ প্রান্ত শামলাপুর বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার অংশে তেমন খানাখন্দ দেখা যায়নি।

বড় ডেইল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জাফর আলম বলেন, ঠিকাদার কিছু কাজ করেছে কিন্তু কাজ সম্পূর্ণ শেষ না করে পালিয়ে গেছে। কচ্ছপিয়া থেকে বড় ডেইল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিংও করেননি এখনো পর্যন্ত। গত দুই বর্ষায় সড়কের এই অংশে দশটির বেশি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
মাথাভাঙ্গা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, গত এক বছর আগে থেকে আমাদের এলাকার অংশে সড়কে ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়। সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়ায় সেটি এখন বড় আকার ধারণ করেছে। সড়কে এসব বড় গর্তের কারণে যেকোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বাহারছড়া ইউনিয়নের সমাজ সেবক ও শিক্ষক মাওলানা রফিকুল্লাহ বলেন, টেকনাফ থেকে শামলাপুর বাজার পর্যন্ত সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। গগণচুম্বী গর্জন বাগানের ভেতর দিয়ে একেবেঁকে যাওয়া সড়কটি দেখতে একসময় পর্যটকদের আকর্ষণ ছিল। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো নয়ছয় করে সড়কের কাজ সম্পন্ন না করে লাপাত্তা হয়ে যায়। দুই বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটি অযত্ন অবহেলা আছে, দর্শনার্থীদের কাছেও সড়কটি এখন গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। এ সড়কের দ্রুত সংস্কার দরকার।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কক্সবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি নিজেও সড়কটি দেখে আসছি। সড়কের কিছু অংশে এখনো কার্পেটিং হয়নি। বাকি কিছু অংশে কিছু খানাখন্দ হয়েছে। ওই কাজটিতে আমাদের ভেরিয়েশন দরকার ছিল। আমরা ভেরিয়েশন প্রস্তাব পাঠিয়েছি এবং সেটি অনুমোদনও হয়েছে। ঠিকাদারদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং দ্রুত সময়ে ওই সড়কের কাজ শেষ করতে বলেছি। এছাড়া কাজ শেষ না করতে আমরা তাদের বিল পরিশোধ করছিনা।

এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআরসি-শামস ও অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলে ফোনে তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুত সময়ে সড়কের অসম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত এবং কার্পেটিং শেষ করতে না পারলে সড়কটি ধ্বংসস্তুপে রূপ নেবে।

ডিবিএন/জেইউ।

Facebook Comments Box

Comments

comments

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম

যোগাযোগ

প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত

মোবাইল : ০৩৪১-৬৪১৮৮। বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন 01870-646060

ই-মেইল: ajkerdeshbidesh@yahoo.com