দেশবিদেশ রিপোর্ট | শনিবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৮
কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানায় নব নির্মিত একটি জামে মসজিদ নিয়ে সম্প্রীতির এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। থানার একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়–য়া উদ্যোগী হয়ে দৃষ্টিনন্দন জামে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হবার পর পরই তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে যান। গত ১৯ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষে উদ্বোধন করেন।
ইত্যবসরে থানাটিতে নতুন ওসি হিসাবে যোগ দেন সনাতন ধর্মাবলম্বী পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ। তিনি থানাটিতে এসে প্রথম জুমার নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করেন। গতকাল শুক্রবার প্রথম জুমার নামাজে খুৎবার বয়ান করেন টেকনাফ হ্নীলা জমিরিয়া সিনিয়র দাখিল মাদরাসার উপাধ্যাক্ষ মাওলানা ফেরদৌস আহমদ। নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা আক্তার হোসাইন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং সনাতন ধর্মাবলম্বী দুই ওসি’র তত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটিতে এখন নামাজ আদায় করছেন সীমান্ত জনপদের মুসল্লিরা।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ এজাহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশেক উল্লাহ ফারুকী বলেন-‘ টেকনাফ সীমান্তে আমাদের নিকট এটাই এক বিরল দৃষ্টান্ত। যে মসজিদটি একজন বৌদ্ধ ও সনাতনী ধর্মাবলম্বীর উদ্যোগে নির্মিত সেখানেই আজ আমরা মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট সেজদা করছি। আমরা আশা করছি, এরকম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত আমাদের দেশটিতে আরো সৃষ্টি হবে।’
জুমা পূর্ববর্তী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে আবেগ আপ্লুত কন্ঠে করজোর করে বলেন-‘ আমার সাথে টেকনাফবাসীর কোন বিরোধ বা শত্রুতা নেই, আপনাদের আগামী প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে ইয়াবা বা মাদকের বিরোধে আমার এই অভিযান। টেকনাফের যে বদনাম তা মুছতে হবে, এটা আমার একার স্বার্থে নয় আপনাদেরই স্বার্থে, কারণ এখানে আপনারাই যুগযুগ ধরে বাস করবেন। ইয়াবা বা সর্বগ্রাসী মাদক রোধ করা না গেলে আপনাদের সন্তানেরা ধ্বংস হয়ে যাবে।’
ওসি প্রদীপ আরো বলেন, আমি দশ বছর আগে একবার টেকনাফ থানায় এসেছিলাম, তখন এখানকার মানুষের সীমান্ত বাণিজ্যসহ কৃষি, মৎস ও লবণ উৎপাদনে যথেষ্ট সুনাম ছিল। কিন্তু ইয়াবা নামক সর্বগ্রাসী মাদক টেকনাফকে বদনামের অংশীদার করেছে। আমাদের সবাইকে এখনই সজাগ হতে হবে, সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে ইয়াবা এবং সর্ব প্রকার মাদকের মুলোৎপাটন করতে হবে এবং মাদকের বিরুদ্ধে এ যাত্রায় সবাইকে একাত্মতা ঘোষণা করতে হবে।
উল্লেখ্য, টেকনাফ মডেল থানায় দৃষ্টিনন্দন জামে মসজিদ নির্মাণ কাজটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া। টেকনাফ থানার বিদায়ী ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া জানান, মসজিদটি নির্মাণে স্থানীয় বাসিন্দাগণ ছাড়াও থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরাও অকাতরে সহযোগিতা দিয়েছেন। মসজিদ নির্মাণে সার্বিক তত্ত্বধানে ছিলেন আলহাজ্ব আবুল কালাম প্রাক্তন মেম্বার ও টেকনাফ পৌর প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা প্রবীন সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ। ####
Posted ১:১১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh