জাকারিয়া আলফাজ, টেকনাফ | মঙ্গলবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৯
কক্সবাজার টেকনাফ সাগর উপকূল দিয়ে ট্রলারে চেপে মালয়েশিয়া পাড়ির প্রস্তুতিকালে ১৫ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী রয়েছে। গতকাল সোমবার ভোররাতে এসব রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করেন বাহারছরা ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ ফাঁড়ির একটি টীম।
সূত্রে জানা যায়, উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে সক্রিয় রয়েছে মালয়েশিয়া পাচারকারী স্থানীয় ও রোহিঙ্গা দালাল চক্র। এসব দালাল চক্রের সদস্যদের খপ্পরে পড়ে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে ট্রলারে মালয়েশিয়া রওনা দিতে বাহারছরা ইউনিয়রের শামলাপুরে অবস্থান নিয়েছিল রোহিঙ্গাদের একাধিক দল। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে দালাল চক্রের সদস্যদের ধরতে এবং মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গাদের উদ্ধারে বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন সাগর তীরবর্তী শামলাপুর এলাকা থেকে ১৫ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তবে এ অভিযানে দালাল চক্রের কোন সদস্য আটক হয়নি বলে জানা যায়।
পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা হলেন, উখিয়া উপজেলার বালুখালী ক্যাম্পের হাফিজুর রহমান, কেফায়েত উল্লাহ, মোঃ সোহেল, মোঃ আলম, সেতেরা বেগম, নুর কলিমা, কুতুপালং ক্যাম্পের ইমাম হোসেন, আনোয়ারা বেগম, থাইংখালী ক্যাম্পের শাহ নবী, জাহেদা বেগম, রেহেনা বেগম, মোঃ সালাম, উখিয়ার জামতলী ক্যাম্পের পারভীন আকতার, রাবেয়া বেগম।
এ ব্যাপারে টেকনাফ শামলাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আটককৃত রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য শামলাপুর এলাকায় জমায়েত হয়েছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দালালদের মাধ্যমে সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে জানায়। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে আটককৃতদের টেকনাফ মডেল থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।’
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ‘মালয়েশিয়া গামী ১৫ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা সবাই উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা নাগরিক। প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
ওসি প্রদীপ জানায়, ‘কোন রোহিঙ্গা বা স্থানীয় নাগরিকরা যাতে দালালদের মাধ্যমে সাগরপথে মালয়েশি যাওয়ার পদক্ষেপ না নিতে পারে সেজন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে। এছাড়া পাচারকারী চক্রের সদস্যদের ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। অচিরেই এসব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে।’
উল্লেখ্য, এর আগে গতবছর ৫ নভেম্বর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর থেকে বিজিবি ১৪ রোহিঙ্গা, গত ৬ নভেম্বর সেন্ট মার্টিনস সাগর উপকূল থেকে কোস্টগার্ডের অভিযানে ৬ জন দালালসহ ৩৩ রোহিঙ্গা এবং ৩০ নভেম্বর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে র্যাব ১০ রোহিঙ্গা নাগরিককে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃতদের সবাইকে যাচাই বাছাই শেষে স্ব স্ব রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
Posted ১:৫৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh