শহীদুল্লাহ্ কায়সার | বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে ৩৪ প্রার্থী মনোনয়পত্র জমা দিয়েছেন। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোঃ কামাল হোসেনের হাতে গতকাল বুধবার (২৮ নভেম্বর) অধিকাংশ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাফর আলম { বি.এ (অনার্স) এম.এ} সহকয়েকজন প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মনোনয়নপত্র জমাদানকারী প্রার্থীরা যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেছেন কিনা। তা যাচাই করা হবে আগামি রবিবার (২ ডিসেম্বর )। এরপর বাছাইয়ে উত্তীর্ণরা আগামি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় পাবেন। এরপর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ’২০১৮।
অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীতার লক্ষ্যে কক্সবাজার Ñ১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৮ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন ২ জন। অন্যরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন তাঁদের মনোনয়নপত্র। এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে জাফর আলম {বি.এ (অনার্স) এম.এ}, বিএনপি মনোনীত ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে এড: হাসিনা আহমেদ ছাড়াও জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছ, ওয়ার্কার্স পার্টির বশিরুল আলম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মোহাম্মদ আলী আছগর, মুসলিম লীগের মোঃ ফয়সাল, বদিউল আলম, এবং তানিয়া আফরিন মনোনয়নপত্র জমা দেন।
জেলার ৪টি আসনের মধ্যে কক্সবাজার -২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে মনোনয়নপত্র জমাদানকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আসনটিতে ১২ প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী আশেক উল্লাহ্ রফিক, বিএনপি মনোনীত ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর মোঃ মাহফুজ উল্লাহ্ ফরিদ ছাড়াও আসনটির অন্য দুই হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক সংসদ-সদস্য এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আজাদ ২০ দলীয় জোটের এবং ড. আনসারুল করিম গণফ্রন্ট নামে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনপ্রাপ্ত একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। উল্লিখিতরাসহ আসনটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ মোহিবুল্লাহ্, ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমানন, ইসলামি ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে আবু মোহাম্মদ মাসুদ ইসলাম, ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনের জসিম উদ্দিন, মোঃ শহীদুল্লাহ্, মেজর অবঃ শাহেদ সরওয়ার, আবু বকর ছিদ্দিক, আবু ইউসুফ মোঃ মনজুর আহমেদ তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কক্সবাজার -৩ (কক্সবাজার সদর Ñ রামু) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৬ প্রার্থী। জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুু এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কিনলেও জমা দেননি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে সাইমুম সরওয়ার কমল, বিএনপি মনোনীত ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে লুৎফুর রহমান কাজল ছাড়াও জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মুফিজুর রহমান, বিএনএফের মোঃ হাছন, নজিবুল ইসলাম এবং মোঃ আমিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
কক্সবাজার Ñ৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে ৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে শাহীন আক্তার চৌধুরী, বিএনপি মনোনীত ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে শাহজাহান চৌধুরী ছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে আবুল মঞ্জুর, মোঃ সালাহউদ্দিন, সাইফুদ্দিন খালেদ, মোঃ শোয়াইব, রবিউল হোছাইন, এবং গফুর উদ্দিন চৌধুরী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এদিকে, গতকাল মনোনয়পত্র জমা দানের শেষ দিন জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। তাঁদের অধিকাংশই এসেছিলেন প্রার্থীদের সঙ্গে। ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গেই ছিলো অধিকাংশের আগমন। আওয়ামী লীগ নেতাদের চেয়েও এক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে ছিলেন বি.এন.পি নেতারা। বিএনপি’র সাবেক সংসদ-সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল এবং আলমগীর মোঃ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের সঙ্গে এসেছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এসেছিলেন তাঁরা। জেলাপ্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় প্রাঙ্গনে হয় তাঁদের স্থান। অধিকাংশই প্রবেশ করতে পারেননি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে। পাঁচজনের অধিক মানুষ প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে।
মনোনয়নপত্র জমা দানের শেষ দিনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নেয়া হয় পদক্ষেপ। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় জোরদার করা হয় পুলিশি পাহারা। পৌরসভার গেইটের পর ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচলে প্রদান বাধা প্রদান করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। পুলিশের উদ্যোগে পৌরসভার গেইটে অস্থায়ী প্রতিবন্ধক বসানো হয়। পাশাপাশি জেলা প্রশাসক কার্যালয়েও দুই স্তরে পুলিশ নিয়োগ করা হয়। যাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবাঞ্ছিত লোকজনের যাতায়াত বন্ধ করাসহ বিশৃঙ্খলা ঠেকানো যায়। এতে সুফলও এসেছে। যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া শেষ হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দান।
Posted ১:৫৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh